হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
Published: 16th, September 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে পুলিশের পৃথক অভিযানে ৩১ লাখ টাকার মাদকদ্রব্যসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা খুচরা বিক্রির উদ্দেশ্যে ভারত থেকে ধামরাই থানা এলাকায় হেরোইন এনেছিল।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ধামরাই থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য দেয় পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গার মালবাগডাঙ্গা এলাকার মো.
সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধামরাই থানা পুলিশ কালামপুর বাসস্ট্যান্ডে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী মো. শরীফকে আটক করা হয়। এসময় তার দেহ তল্লাশি করে ২০০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ লাখ টাকা।
এছাড়া, ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকায় পৃথক অপর এক অভিযান থেকে মাদক ব্যবসায়ী শাহিদা আক্তার ও মিন্টু হোসেনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের দেহ তল্লাশি করে আরো ১১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১১ লাখ টাকা। পরে আটককৃতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিশেষ অভিযান উপলক্ষে একাধিক টিম বর্তমানে মাঠে কাজ করছে। গতকাল এসআই রহমান কালামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চেকপোস্ট ডিউটি পালনকালে ওই এলাকায় মাদক বিক্রি করতে আসা মো. শরিফ হোসেনকে ২০০ গ্রাম মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে হেরোইন বিক্রি করতে আসা অপর দুইজনকে ১১০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করা হয়। সবমিলিয়ে এই ৩১০ গ্রাম হেরোইনের মূল্য অন্তত ৩১ লাখ টাকা।”
তিনি আরো বলেন, “এছাড়া গত ১২ ঘণ্টায় আরও তিনটি মাদক মামলা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একটিতে ৬০ পিস ইয়াবা, অপরটিতে ৩০ পিস ও আরেকটিতে ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ধরনের অভিযান আরও চলমান থাকবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত যাদের ধরা হয়েছে, তারা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। এরমধ্যে বড় যেসব মাদক ব্যবসায়ীকে ধরা হয়েছে, তারা ভারত থেকে হেরোইন আনে। ধামরাই থানা এলাকায় খুচরা বিক্রি ছিল তাদের উদ্দেশ্য। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়েছি।’’
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক য় হ র ইন
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস