প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আদানি–প্রেমের’ আরেক ‘নমুনা’ পেশ করল কংগ্রেস। অভিযোগ করল, ১ হাজার ৫০ একর জমি, যার ওপর রয়েছে ১০ লাখ গাছ, তা বছরে মাত্র ১ টাকা ভাড়ায় ৩৩ বছরের জন্য তা তুলে দেওয়া হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানির হাতে। আদানি গোষ্ঠী সেখানে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়বে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, ঠিক এভাবে বিভিন্ন রাজ্যে ভোটের আগে মোদি সরকার জমি তুলে দিচ্ছে তাঁর ঘনিষ্ঠতম শিল্পবন্ধু গৌতম আদানির হাতে। বিহারের লাগোয়া ঝাড়খন্ডের গোড্ডাতেও ভোটের আগে তারা জমি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠীকে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য। ঝাড়খন্ডের ভোটে বিজেপি হেরেছিল। এবার বিহারের ভোটের আগে বিজেপি একই কাজ করছে। এখানেও হারবে।

আদানিদের ওই জমি দেওয়া হয়েছে ভাগলপুরে। সেখানে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন। সেখানে তৈরি হবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।

শিলান্যাস অনুষ্ঠানের ঠিক আগে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা প্রধানমন্ত্রীর ‘আদানি–প্রীতির’ অভিযোগ তুলে বলেন, বিনা পয়সায় পাওয়া জমিতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করে আদানি গোষ্ঠী বিহারের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ বেচবে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৭৫ পয়সায়। এটা হলো বিজেপির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের ‘ডাবল লুট’।

পবন খেরা বলেন, ঠিক এভাবে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটের আগে বিজেপি ধারাভি প্রকল্প ও বিদ্যুৎকেন্দ্র তুলে দিয়েছিল আদানির হাতে। ছত্তিশগড়েও ভোটের আগে পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন প্রকল্প। এটা একটা প্যাটার্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কংগ্রেস নেতা ও মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, যখনই বিজেপি বুঝতে পারে ভোটে গড়বড় হতে পারে, তখনই তারা আদানিদের কিছু না কিছু পাইয়ে দেয়। এবার বিহারের ভাগলপুরে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, বিজেপি বুঝতে পারছে এবার তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না।

কেন্দ্রের কাছ থেকে আদানি গোষ্ঠীর কোনো না কোনো প্রকল্পের বরাত পাওয়া জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেদিন ভাগলপুরের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন, সেই দিনেই অর্থাৎ গত মঙ্গলবার আদানি এন্টারপ্রাইজ উত্তরাখন্ডের শোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার রোপওয়ে প্রকল্পের বরাত পায়।

শোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার পথ রোপওয়ে দিয়ে জুড়ে দেবে আদানি এন্টারপ্রাইজ। গত মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল। উত্তরাখন্ড রাজ্যও বিজেপিশাসিত।

ভোটমুখী বিহারে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী মোদি মোট ৩৬ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, যার অন্যতম আদানিদের ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।

পবন খেরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আদানিরা বিহারের জমি পাচ্ছে বিনা মূল্যে। বিহারে উৎপাদিত কয়লা তারা ব্যবহার করবে। বিহারে প্রবাহিত নদীর জল ব্যবহার করবে। অথচ বিহারকে বিদ্যুৎ বেচবে চড়া দামে।

পবন খেরার আরও অভিযোগ, এই প্রকল্পের জন্য ন্যায্য দাম না দিয়ে কৃষকের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাতে বিক্ষোভ দেখাতে না পারেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আগে তাঁদের গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল।

পবন খেরার অভিযোগ, সরকার প্রথমে বলেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করবে। অথচ তা তুলে দেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু শিল্পপতির হাতে। তিনি বলেন, এই লুটের কারণে বিহার আবার ‘বিমারু’ বা রোগগ্রস্ত রাজ্য হয়ে যাবে।

কংগ্রেসের এই অভিযোগের জবাবে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বা বিহার রাজ্য সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র ভ ট র আগ পবন খ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বছরে ১ টাকা ইজারায় ‘মোদির বন্ধু’ আদানিকে দেওয়া হলো ১০৫০ একর জমি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আদানি–প্রেমের’ আরেক ‘নমুনা’ পেশ করল কংগ্রেস। অভিযোগ করল, ১ হাজার ৫০ একর জমি, যার ওপর রয়েছে ১০ লাখ গাছ, তা বছরে মাত্র ১ টাকা ভাড়ায় ৩৩ বছরের জন্য তা তুলে দেওয়া হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানির হাতে। আদানি গোষ্ঠী সেখানে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়বে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, ঠিক এভাবে বিভিন্ন রাজ্যে ভোটের আগে মোদি সরকার জমি তুলে দিচ্ছে তাঁর ঘনিষ্ঠতম শিল্পবন্ধু গৌতম আদানির হাতে। বিহারের লাগোয়া ঝাড়খন্ডের গোড্ডাতেও ভোটের আগে তারা জমি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠীকে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য। ঝাড়খন্ডের ভোটে বিজেপি হেরেছিল। এবার বিহারের ভোটের আগে বিজেপি একই কাজ করছে। এখানেও হারবে।

আদানিদের ওই জমি দেওয়া হয়েছে ভাগলপুরে। সেখানে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন। সেখানে তৈরি হবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।

শিলান্যাস অনুষ্ঠানের ঠিক আগে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা প্রধানমন্ত্রীর ‘আদানি–প্রীতির’ অভিযোগ তুলে বলেন, বিনা পয়সায় পাওয়া জমিতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করে আদানি গোষ্ঠী বিহারের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ বেচবে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৭৫ পয়সায়। এটা হলো বিজেপির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের ‘ডাবল লুট’।

পবন খেরা বলেন, ঠিক এভাবে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটের আগে বিজেপি ধারাভি প্রকল্প ও বিদ্যুৎকেন্দ্র তুলে দিয়েছিল আদানির হাতে। ছত্তিশগড়েও ভোটের আগে পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন প্রকল্প। এটা একটা প্যাটার্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কংগ্রেস নেতা ও মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, যখনই বিজেপি বুঝতে পারে ভোটে গড়বড় হতে পারে, তখনই তারা আদানিদের কিছু না কিছু পাইয়ে দেয়। এবার বিহারের ভাগলপুরে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, বিজেপি বুঝতে পারছে এবার তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না।

কেন্দ্রের কাছ থেকে আদানি গোষ্ঠীর কোনো না কোনো প্রকল্পের বরাত পাওয়া জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেদিন ভাগলপুরের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন, সেই দিনেই অর্থাৎ গত মঙ্গলবার আদানি এন্টারপ্রাইজ উত্তরাখন্ডের শোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার রোপওয়ে প্রকল্পের বরাত পায়।

শোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার পথ রোপওয়ে দিয়ে জুড়ে দেবে আদানি এন্টারপ্রাইজ। গত মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল। উত্তরাখন্ড রাজ্যও বিজেপিশাসিত।

ভোটমুখী বিহারে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী মোদি মোট ৩৬ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, যার অন্যতম আদানিদের ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।

পবন খেরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আদানিরা বিহারের জমি পাচ্ছে বিনা মূল্যে। বিহারে উৎপাদিত কয়লা তারা ব্যবহার করবে। বিহারে প্রবাহিত নদীর জল ব্যবহার করবে। অথচ বিহারকে বিদ্যুৎ বেচবে চড়া দামে।

পবন খেরার আরও অভিযোগ, এই প্রকল্পের জন্য ন্যায্য দাম না দিয়ে কৃষকের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাতে বিক্ষোভ দেখাতে না পারেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আগে তাঁদের গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল।

পবন খেরার অভিযোগ, সরকার প্রথমে বলেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করবে। অথচ তা তুলে দেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু শিল্পপতির হাতে। তিনি বলেন, এই লুটের কারণে বিহার আবার ‘বিমারু’ বা রোগগ্রস্ত রাজ্য হয়ে যাবে।

কংগ্রেসের এই অভিযোগের জবাবে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বা বিহার রাজ্য সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ