১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
Published: 17th, September 2025 GMT
রংপুরের পীরগাছা স্টেশন এলাকায় লাইনচ্যুত যাত্রীবাহী পদ্মরাগ ট্রেনের পাঁচটি বগি ১৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। এতে সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
দুটি রিলিফ ট্রেনের সহায়তায় লাইনচ্যুত বগি উদ্ধারের পর মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পীরগাছা স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার ইউসুফ আলী।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, সান্তাহার থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেন ‘পদ্মরাগ’ দুপুর ১টার দিকে রংপুরের পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এসময় পঞ্চগড় থেকে সান্তাহারগামী ‘দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ একই স্টেশনে আসায় ‘পদ্মরাগ’ ট্রেনটি দুই নম্বর লাইনে অবস্থান করে।
দোলনচাঁপা পীরগাছা ছেড়ে গেলে লালমনিরহাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে ‘পদ্মরাগ’ ট্রেনটি। এসময় এক নম্বর লাইনে থেকে দুই নম্বর লাইনে ক্রসিংয়ের সময় হঠাৎ ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলেও লাইন ও সিগন্যালের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বেলা সাড়ে ৪টার দিকে লালমনিরহাট থেকে একটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এলেও বগির ভার বহন করতে না পারায় সেটিকে কাজে লাগানো যায়নি। তবে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত বগিগুলোর সামনের একটি বগি উদ্ধার করে কাউনিয়া রেলওয়ে জংশনে নিয়ে যায় রিলিফ ট্রেনটি।
সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় লাইনচ্যুত বগিগুলোকে উদ্ধার করতে পার্বতীপুর থেকে আরেকটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে। ক্রেন কাজে লাগানো না যাওয়ায় সনাতন পদ্ধতিতে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। রাত ১টার দিকে লাইনচ্যুত সবকটি বগি উদ্ধার সম্ভব হয়। তবে মূল লাইনের স্লিপারে সমস্যা ধরা পড়ায় ট্রেন চলাচলে আরও এক ঘণ্টা বেশি সময় লাগে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলম বলেন, “দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের বগিগুলো রাত ৯টার মধ্যে উদ্ধারের টার্গেট নিয়ে কাজ শুরু করি। কিন্তু বৃষ্টি আর অতিরিক্ত উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে তা বিলম্বিত হয়। রাত প্রায় ১টার দিকে লাইনচ্যুত বগিগুলোকে উদ্ধার করা যায়। তবে পরীক্ষায় মূল লাইনের দুটি স্লিপারে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ট্রেন চলাচলে আর কিছুটা বেশি সময় লেগে যায়। পরে রাত ১টা ৪০ মিনিটে রেললাইনটি পুরোপুরি ঠিক হলে ২টা থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আপাতত আর কোনো সমস্যা নাই।”
ঢাকা/আমিরুল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইনচ য ত উদ ধ র ক প রগ ছ র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস