যে যান ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক যেতে মাত্র ১ মিনিট সময় নেয়
Published: 25th, September 2025 GMT
ঢাকা শহর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের দূরত্ব প্রায় আট হাজার মাইল। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে বিমানের ১৬-১৭ ঘণ্টা লেগে যায়। নাসার বিজ্ঞানীরা এমন এক যান নিয়ে কাজ করেন, যার কাছে এই দূরত্ব পার হতে এক মিনিটের মতো সময় লাগবে। নাসার পার্কার সোলার প্রোব রকেট সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করছে। এই যান সর্বোচ্চ গতি স্পর্শ করার নতুন রেকর্ড গড়েছে। যানটির গতি ঘণ্টায় ৬ লাখ ৮৭ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করার বিরল রেকর্ড স্পর্শ করেছে। যদি এই গতি স্থির থাকে, তাহলে যানটি ঢাকা থেকে নিউইয়র্কে যেতে এক মিনিটের কম সময় নেবে।
নাসার পার্কার সোলার প্রোব রকেটটি ১৮ সেপ্টেম্বর সূর্যকে ২৫তম বারের মতো প্রদক্ষিণ করেছে। প্রদক্ষিণের সময় রকেটটি পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। প্রদক্ষিণ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিন্স অ্যাপ্লায়েড ফিজিকস ল্যাবরেটরির (এপিএল) ফ্লাইট কন্ট্রোলারদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। এই অভিযানে মহাকাশযানটি ঘণ্টায় ৬ লাখ ৮৭ হাজার কিলোমিটারের সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছায়। এর আগেও দুবার এমন গতিতে ছুটেছিল যানটি।
নাসা পার্কার সোলার প্রোবের মাধ্যমে সূর্যের সৌরবায়ু ও অন্যান্য কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহ করছে। সূর্য বর্তমানে তার ১১ বছরের চক্রের একটি সক্রিয় পর্যায়ে রয়েছে। পার্কার সোলার প্রোবের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য সূর্য সম্পর্কে নতুন কিছু জানার সুযোগ করে দিচ্ছে।
সূর্যের রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে পার্কার প্রোব। চরম পরিস্থিতিতে প্রবেশ করে পার্কার প্রোব বিজ্ঞানীদের সূর্যের কিছু বড় রহস্য সমাধান করতে সাহায্য করছে। সৌরবায়ুর উৎপত্তি হয় কীভাবে, সূর্যের পৃষ্ঠের চেয়ে করোনা স্তর কেন বেশি উত্তপ্ত আর বিশাল প্লাজমা মেঘ কীভাবে গঠিত হয়, তা জানার জন্য কাজ করছে। নাসা বলেছে, সৌর ও অন্যান্য সৌর ঘটনা যেমন সৌরশিখা ও করোনাল মাস ইজেকশনের ওপর পার্কারের পর্যবেক্ষণ সূর্য ও মহাজাগতিক আবহাওয়া সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা নভোচারী, স্যাটেলাইট, বিমান চলাচল থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিদ্যুৎ গ্রিডের জন্যও ঝুঁকি তৈরি করে বলে এ নিয়ে তথ্য জানা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার পরিচালনা করছে পার্কার সোলার প্রোবটি। ২০১৮ সালে নাসার লিভিং উইথ আ স্টার (এলডব্লিউএস) কর্মসূচির অংশ হিসেবে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দাড়ি রেখে ইতিহাসে স্থান করে নিতে চলেছেন জোহরান মামদানি
নিউইয়র্ক সিটি এবার শুধু প্রথম মুসলিম মেয়রই পাচ্ছে না। জোহরান মামদানি হচ্ছেন শহরের প্রথম দক্ষিণ এশীয়, প্রথম আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মেয়র; সঙ্গে এক শতাব্দীর বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে তরুণ মেয়রও।
অভিষেকের আগে যদি হঠাৎ চুল-দাড়ি কাটার বড় কোনো সিদ্ধান্ত না নেন, তবে জোহরান হবেন ১৯১৩ সালে মারা যাওয়া উইলিয়াম জে গেনরের পর নিউইয়র্কের প্রথম শ্মশ্রুমণ্ডিত মেয়র। যদিও শতভাগ নিশ্চিত করে বলা কঠিন যে এরপর কোনো মেয়রের মুখে দাড়ি ছিল না। তবে মেয়রদের অফিশিয়াল প্রতিকৃতি ঘেঁটে দেখা যায়, সবাই ছিলেন দাড়ি–গোঁফ ছাড়া। শুধু ডেভিড ডিঙ্কিন্সের গোঁফ ছিল ব্যতিক্রম।
জোহরানের দাড়ি দেখতে জে গেনরের মতো হলেও তার বিশেষত্ব একেবারেই ভিন্ন। গেনর যখন ১৯০৯ সালে নির্বাচিত হন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর। তাঁর ধূসর-সাদা, ছাঁটা দাড়ি আর সিল্কের টুপি তাঁকে এক পরিণত মানুষ হিসেবে তুলে ধরত।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির কাজে কীভাবে ট্রাম্প বাগড়া দিতে পারেন ১৯ ঘণ্টা আগেতখনকার সংস্কৃতিও ছিল অন্য রকম। গেনরকে নিয়ে ১৯৫১ সালের এক জীবনীতে বলা হয়, সে সময় যাঁরা পূর্ণ ‘ভ্যানডাইক’ দাড়ি রাখতেন, তাঁদের অনেকে সমাজে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন। এ দাড়ি তাঁকে একজন সফল ব্যবসায়ী, ওয়াল স্ট্রিটের মধ্যস্থতকারী কিংবা অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবেই উপস্থাপন করত।
২০১৩ সালে একটি প্রবন্ধে জোহরান লিখেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এক বছর আগেই দাড়ি রাখতে শুরু করেন তিনি। মূলত এটা ছিল দেশে প্রচলিত সেই ধারণার বিরুদ্ধে একধরনের প্রতীকী প্রতিবাদ, যা অনেক সময় প্রকাশ্যে বলা হয় না, কিন্তু অনেকেই মেনে নেন—‘বাদামি গায়ের রং আর দাড়ি? মানে সন্ত্রাসী!’অন্যদিকে জোহরান এখন ৩৪ বছরের তরুণ, মিলেনিয়াল প্রজন্মের প্রতিনিধি। তাঁর দাড়ি যেন পুরোনো রাজনৈতিক কাঠামো বদলে দেওয়ার অঙ্গীকারের প্রতীক। এ অর্থে তাঁর দাড়ি বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স কিংবা কিছুটা বয়স্ক ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের দাড়ির মতোও নয়।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে ভোট দিয়েছেন ৯৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার১১ নভেম্বর ২০২৫ওই দুই ব্যক্তি (ভ্যান্স ও ট্রাম্প জুনিয়র) শ্বেতাঙ্গ আর জোহরান একজন বাদামি চামড়ার মুসলিম। যুক্তরাষ্ট্রে শ্মশ্রুমণ্ডিত বাদামি মুসলমান হওয়া মানে কী, সেটি তিনি খুব ভালোভাবেই বোঝেন। নিজের ভাবমূর্তি বা জনমত গঠনের কৌশলও তিনি ভালোই জানেন।
১৯১৩ সালে মারা যাওয়া নিউইয়র্কের শ্মম্রুমণ্ডিত মেয়র উইলিয়াম জে গেনরের প্রতিকৃতি