‘মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী?’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আইসিটি কোর্সের প্রশ্ন নিয়ে সমালোচনা  
তাহমিদ সাকিব/মেহেদি হাসান–৬০১৪৬    
সেকশন: রাজধানী
ট্যাগ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাংবাদিকতা, আইসিটি, তথ্য ও প্রযুক্তি
একসার্পট: একজন লিখেছেন, অনেকেই ট্রল করছে এটা সত্যি নাকি। সত্যি হলে বোঝা উচিত যাঁরা পড়ান তাঁরা কোন যুগে এখনো বসবাস করছেন।
মেটা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আইসিটি কোর্সের প্রশ্ন নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
ছবি: du নামে
ক্যাপশন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আইসিটি স্কিল কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার এই প্রশ্নপত্র নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে   ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
হেডিং: ‘মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী?’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আইসিটি কোর্সের প্রশ্ন নিয়ে সমালোচনা  
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আইসিটি স্কিল কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। গত সোমবার কোর্সের পরীক্ষা শেষে বিভাগের একজন শিক্ষার্থী প্রশ্নপত্রটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কীভাবে ফাইল সেভ করা যায়। এমন প্রশ্ন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন প্রশ্নের মান নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোর্সের আধুনিকায়নের ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার ছিল দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা। ১০টি প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ ২০ নম্বর। উত্তর দিতে শিক্ষার্থীরা সময় পেয়েছেন ৭৫ মিনিট।

ফেসবুকে ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে এমন প্রশ্ন কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাফিজ খান। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সম্প্রতি ডিপার্টমেন্টের আইসিটি কোর্সের একটা প্রশ্নের মান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আমি নিজেও বর্তমানে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কোর্স পড়াচ্ছি। সে ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, শুধু এই বিভাগ নয় বরং ঢাবির বেশির ভাগ বিভাগের এক্সামের (পরীক্ষার) প্রশ্নই এমন শোচনীয়৷ একই প্রশ্নের বারবার পুনরাবৃত্তি কিংবা প্র্যাকটিক্যালের ওপর জোর না দিয়ে বরং থিওরি বেইজড প্রশ্ন করার তুমুল প্রবণতা দেখা যায়। এমনকি ঢাবিতে আমি এমন শিক্ষার্থীও দেখেছি, যারা কিনা স্নাতক পাস করে ফেলার পরও একটা ওয়ার্ড ফাইল টাইপ করতে পারে না।’

জাহাঙ্গীর জাহিদ নামের আরেকজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে প্রশ্নপত্রের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘অনেকেই ট্রল করছে এটা সত্যি নাকি। সত্যি হলে বোঝা উচিত যাঁরা পড়ান, তাঁরা কোন যুগে এখনো বসবাস করছেন?’

দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সেমিস্টারের আইসিটি স্কিল কোর্সের দুটি অংশ। একটি থিওরিটিক্যাল, আরেকটি প্র্যাকটিক্যাল। থিওরিটিক্যাল অংশটি পড়ান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল হক। আর প্র্যাকটিক্যাল অংশটি পড়ান বিভাগের দুজন কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন প্রিন্সিপাল কম্পিউটার অপারেশন অফিসার অসীম কুমার দাশ ও প্রিন্সিপাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার নাছির উদ্দিন।

কোর্সের মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (এমএস ওয়ার্ড) অংশটি পড়ান নাছির উদ্দিন। বিভাগের কম্পিউটার ল্যাবে এ ক্লাস হয়। তিনি মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, তৃতীয় সেমিস্টারে এমএস ওয়ার্ডের ওপর পাঁচটি ল্যাব ক্লাস হয়েছে। সেখান থেকে কোর্স শিক্ষকের নির্দেশনা পেয়ে তাঁরা দুজন মিলে প্রশ্নটি তৈরি করেন। এরপর কোর্স শিক্ষককে প্রশ্নের খসড়া দেখান। তিনি অনুমোদন দেওয়ার পরেই এই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

প্রশ্নের মান নিয়ে কোর্স শিক্ষক সাইফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সিলেবাসের কাঠোমোর মধ্যে বিষয়গুলো ছিল, যা বিভাগ থেকে সমন্বিতভাবে করা হয়েছে। এখানে কোর্স শিক্ষকের কোনো হাত নেই। তাই এর বাইরে যাওয়া যায়নি। পুরোনো সিলেবাস অনুযায়ী যে পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়া হয়েছে, তার মধ্য থেকেই প্রশ্ন করা হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পুরোনো সিলেবাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স পড়ানো কতটুকু যৌক্তিক? এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল হক বলেন, পুরোনো সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মানোন্নয়নের কাজও শেষ হয়েছে। সে অনুযায়ী নতুন আঙ্গিকে এই কোর্স সাজানো হয়েছে।

এ ধরনের প্রশ্ন বেমানান বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেটা জার্নালিজম, ডেটা এনালিটিক্স পড়ানো হয়। সেখানে বাংলাদেশে এ ধরনের প্রশ্ন বেমানান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ হয়তো এই জায়গায়ই আছে।

মইনুল হোসেন আরও বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিভাগে পড়ানোর জন্য মানানসই না। এটার জন্য কাউকে অভিযোগ না দিয়ে, এই অবস্থায় যাওয়ার কারণটা খুঁজে বের করতে হবে। শুধু এ বিভাগের জন্য না। অন্য যেকোনো বিভাগের জন্য কীভাবে মানসম্মত প্রশ্ন করা যায়। সেটা নিয়ে কাজ করা দরকার।

প্রশ্নপত্রে যা আছে নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো—

১.

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কী? এর ব্যবহার বা কাজ কী?

২. কি–বোর্ডে কত প্রকার কী আছে তার নাম লিখ।

৩. মাইক্রোসফট ওয়ার্ড-এ টেবিল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কী?

8. এলাইনমেন্ট কত প্রকার ও কী কী? এলাইনমেন্টের কাজ ব্যাখ্যা করো।

৫. মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কীভাবে একটি নতুন ফাইল তৈরি করা যায়?

৬. মাইক্রোসফট ওয়ার্ড-এ বাংলা টাইপ করার জন্য কী কী ইন্টারফেস ব্যবহার করা যায়? বাংলায় টাইপ করার জন্য কীভাবে বিজয় ক্লাসিক মুডে আসতে হয় লিখ।

৭. মাইক্রোসফট ওয়ার্ড-এ ফাইল সেভ-এর প্রক্রিয়া লিখ।

৮. ইনডেন্ট কত প্রকার ও কী কী? এর কাজ কী?

৯. ট্যাব–এর কাজ কী? মাইক্রোসফট ওয়ার্ড-এ কত প্রকার ট্যাব আছে?

১০. নিম্নের কাজ করার শর্টকাট কী/কমান্ড লিখ:

ক) ডকুমেন্টের পরবর্তী পেজে যাওয়ার কি–বোর্ড কমান্ড কী?

খ) জাস্টিফাই এলাইনমেন্টের কি–বোর্ড কমান্ড কী?

গ) আন ডু টাইপিং–এর কি বোর্ড কমান্ড কী?

ঘ) নতুন ফাইল/ডকুমেন্ট তৈরির কি–বোর্ড কমান্ড কী?

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র ড কম ন ড ক ব ভ গ র আইস ট র জন য ক পর ক ষ ব দ কত ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ জিয়ার জন্য দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণ করলেন বাবুল

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দোয়া ও খাবার বিতরণ করেন প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকার মহান স্বাধীনতার ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রূহের মাগফেরাত কামনা করে শহরের ব্যাংক কলোনি এলাকাস্থ নিউ খানপুর দারুন নাঈম মাদ্রাসায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তিনি । 

শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজ শেষে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে করা হয় এই আয়োজন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জনাব কাম্রুজ্জামানসহ অন্যান্য শিক্ষক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।

আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, ৭নভেম্বর বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসের এক অন্যতম দিন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসেন। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি একটি সুন্দর বাংলাদেশের রূপ। তার স্মরণে এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আমাদের আজকের এই দোয়া মাহফিল। 

মাহফিলে প্রয়াত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের জন্য দোয়া কামনা করা হয়।

আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ বরকতউল্লাহ, সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু, ইকবাল আহমেদ শ্যামল, মোঃ নুরুল ইসলাম, মিশনপাড়া পঞ্চায়েত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম সহ অনেকে।

দোয়া শেষে মাদ্রাসার প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর মাঝে খাবার বিতরণ করা হয় এবং আবু জাফর আহমেদ বাবুলসহ সকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে খাবার উপভোগ করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ