আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর পেয়েছে বাংলাদেশ। তাঁর নাম ম্যাক্স টুনন। গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে তিনি পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। আইএলওর বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পাউতিয়ানেনের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি। আইএলও বাংলাদেশ কার্যালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

ঢাকায় দায়িত্ব নেওয়ার আগে ম্যাক্স টুনন কাতারের দোহায় আইএলও কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাতারে একটি বিস্তৃত শ্রমসংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করার দায়িত্বও পালন করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ব্যাংকক, নয়াদিল্লি, বেইজিংসহ আইএলওর বিভিন্ন কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেছেন, বাংলাদেশের সরকার ও সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা শুধু বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য আরও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা নয়, বরং বাংলাদেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের সক্ষমতাও বাড়াবে।’

ম্যাক্স টুনন বলেন, ‘প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। এ দেশে শোভন কর্মসংস্থানের এজেন্ডা এখন জরুরি। তাই আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যৌথভাবে কাজ করলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে এবং মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইএলও বাংলাদেশ সরকার ও এর ত্রিপক্ষীয় অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে শ্রম আইন পর্যালোচনা ও সংশোধন, শ্রম অধিকার, পেশাগত নিরাপত্তা এবং আইন প্রয়োগে কারিগরি ও নীতিগত সহায়তা দিয়ে আসছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য ক স ট নন

এছাড়াও পড়ুন:

আইএলওর ৩টি কনভেনশন একসঙ্গে অনুসমর্থন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: উপদেষ্টা

শ্রমিকদের অধিকার ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশন একসঙ্গে অনুসমর্থন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও বাংলাদেশ। 

অনুসমর্থনের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে স্মরণীয় করে রাখতে বৃহস্পতিবার এক উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমি, স্টেট গেস্ট হাউস ‘সুগন্ধা’-তে এ উদযাপন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, “এ অর্জন কেবল একটি আইনি মাইলফলক নয়-এটি বিশ্বের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যে আমাদের শ্রমিকদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।”

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতির সময়ে এই সিদ্ধান্তটি কৌশলগত ও দূরদর্শী, যা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের নৈতিক ও টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।”

উপদেষ্টা জানান, তিনটি কনভেনশনের মধ্যে কনভেনশন নম্বর ১৫৫ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য) ও কনভেনশন নম্বর ১৮৭ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রচারমূলক কাঠামো) আইএলও’র মৌলিক কনভেনশন। এর সঙ্গে কনভেনশন নম্বর ১৯০ (কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ) অনুসমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলও’র ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশে পরিণত হয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া কনভেনশন বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, “কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে, যাতে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর মাইকেল মিলার বলেন, “বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুসমর্থন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৃহৎ বাজার তৈরির উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।” 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “এলডিসি থেকে উত্তরণের পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ বৈশ্বিক বাজারে তার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে সক্ষম হবে।” 

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সহযোগিতার ক্ষেত্রকে সুদৃঢ় করতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।”

তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে উভয়পক্ষের সম্মিলিত উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশে আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনোন এই অনুসমর্থনকে ‘একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ আখ্যায়িত করেন।

গত ২২ অক্টোবর যমুনা স্টেট গেস্ট হাউসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম উপদেষ্টা তিনটি কনভেনশনের অনুসমর্থনপত্রে স্বাক্ষর করেন। 

পরবর্তীতে ২১ নভেম্বর আইএলও’র জেনেভাস্থ সদর দপ্তরে ৩৫৫তম গভর্নিং বডি অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএলও মহাপরিচালকের কাছে অনুস্বাক্ষরের এ দলিল হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিষয়ক অ্যাটাসে লিনা খান, টিসিসির সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইএলওর ৩টি কনভেনশন একসঙ্গে অনুসমর্থন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: উপদেষ্টা
  • আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন জরুরি এখন