খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ডিসিপ্লিনে পিএইচডির সুযোগ, আবেদন শেষ ২০ নভেম্বর
Published: 23rd, October 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্কুলের আওতাধীন ডিসিপ্লিনে জানুয়ারি ২০২৬ সেশনে পিএইচডি ফেলো প্রোগ্রামে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
# আবেদনপত্র জমার শেষ তারিখ: ২০ নভেম্বর ২০২৫।
ভতি৴র যোগ৵তা —
১. সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লায়েড বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অথবা দেশের অন্য কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টাস৴ ডিগ্রি থাকতে হবে অথবা অন্য কোনো দেশি–বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি (যা ইউজিসি কর্তৃক সমমানের ডিগ্রি হিসেবে স্বীকৃত) থাকতে হবে।
২.
৩. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনকারীদের ক্ষেত্রে ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদনের প্রমাণপত্র এবং অনুমোদিত ক্যাম্পাস থেকে ডিগ্রি অর্জনের প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।আরও পড়ুনখুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম, আছে ফেলোশিপ১৫ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনজাপানে মেক্সট স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষা, জিপিএ ২.৩০ হলে আবেদন ১৯ অক্টোবর ২০২৫
শিক্ষাগত যোগ৵তা —
১. এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় যেকোনো একটিতে প্রথম বিভাগ (সিজিপিএ–৪.০০–এর মধ্যে ৩.০০ এবং ৫.০০–এর মধ্যে ৩.৫০)।
২. স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির যেকোনো একটিতে প্রথম শ্রেণি (সিজিপিএ–৪.০০–এর মধ্যে ৩.০০ এবং ৫.০০–এর মধ্যে ৩.৫০) থাকতে হবে।
৩. কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ গ্রহণ করা হবে না।
# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট: www.ku.ac.bd
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই উপদেষ্টার ক্ষমতায় থাকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও বিতর্ক
অর্ন্তবর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে নিয়ে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনের মূলকথা হলো মাহফুজ আলম এখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ ঢাকা থেকে ভোট করার কথা বলেছেন এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে তিনি সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। তবে তিনি কোন দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। (মাহফুজ সিদ্ধান্তহীন, আসিফের রাজনৈতিক ঠিকানা অনির্দিষ্ট, প্রথম আলো, ২ ডিসেম্বর ২০২৫)
জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র দুই মাসের অল্প কয়েক দিন বেশি সময় বাকি আছে; আগামী সপ্তাহে যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এরপরও দুই উপদেষ্টার ক্ষমতায় বহাল থাকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
২.উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে শুরুতে খুব বেশি বিতর্ক ছিল না। এই বিতর্ক তীব্র হয় তখন, যখন গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থাকার ফলে অনেকেই দলটিকে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন। এসব বিতর্ক এবং জনমনে তৈরি হওয়া ধারণাকে পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, গঠনপ্রণালির দিক থেকে তা অনেকটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হবে এবং তারা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবে। এসব কারণেই এ ধরনের সরকারে দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিরাই থাকবেন, এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল।
কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এই ধারা কতটা বজায় রাখতে পেরেছে, তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সমর্থক উপদেষ্টারা রয়েছেন, এই দলগুলোই বিভিন্ন সময়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ করেছে। লক্ষণীয় হলো, মাহফুজ আলম বা আসিফ মাহমুদ ছাড়া অন্য কোনো উপদেষ্টা নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানা যায়নি। এ কারণে এই দুই উপদেষ্টাই আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
৩.মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের উপদেষ্টা পদে বহাল থাকার বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সংবিধানবিশেষজ্ঞ রিদওয়ানুল হক বলেন, ‘...অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে প্রায় হুবহু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে বা অনুসরণে। সেই হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার হওয়ার কথা নির্দলীয় এবং সেই সরকারে থাকা কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না; কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দু-একজন উপদেষ্টার আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বেশ জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাকে দারুণভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে তাঁরা পদত্যাগ করবেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে; কিন্তু তাঁরা তো এখন সরকারে থেকে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন এবং ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারছেন। এটা যেমন স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি করছে, তেমনি নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।’ (তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার গঠন নিয়ে আলোচনা দরকার, প্রথম আলো, ৩০ নভেম্বর ২০২৫)
উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনে অংশ নিলে, সেটা যে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ও স্বার্থের সংঘাত তৈরি করে, তা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানও অনুধাবন করেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, এলাকাবাসী তাঁকে নানাভাবে অনুরোধ করলেও তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। এ ক্ষেত্রে তিনি কয়েকটি কারণের কথা বলেছেন।
ফাওজুল কবির খানের ফেসবুক পোস্ট থেকে কিছু অংশ পড়লে তাঁর বক্তব্যটি স্পষ্ট হবে, ‘...জনপ্রতিনিধি হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। কিন্তু যেমনটি মতবিনিময় সভায় বলেছি, আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না।’
কারণগুলো হলো এক. যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের লক্ষ্য থাকে সংসদ সদস্য হওয়া। এ জন্য তাঁরা ত্যাগ স্বীকার করেন। সারা জীবন আমার কোনো দলীয় রাজনীতির সাথে সংস্পর্শ ছিল না। রাজনীতিবিদদের বঞ্চিত করে, আমি হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসতে চাই না। তাই আমি নির্দলীয় মানুষ হিসাবেই বাকি জীবন কাটাতে চাই। উপদেষ্টা হিসাবে আমি নিরপেক্ষতার শপথ আবদ্ধ।
দুই. আমাকে অনুরোধ করা হচ্ছে। কারণ, উপদেষ্টা হিসাবে আমি সন্দ্বীপের জন্য কিছু কাজ করেছি; কিন্তু এখানে একটা স্বার্থের সংঘাত আছে। আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করে, ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে পারি না।...’
প্রশ্ন হলো, উপদেষ্টা হিসেবে ফাওজুল কবির খান যে ‘নিরপেক্ষতার শপথ’ এবং ‘স্বার্থের সংঘাতের’ কথা বলেছেন, সেটি কি মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না?
৪.মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের উপদেষ্টা হিসেবে বহাল থাকার বিষয়টি যে স্বার্থের সংঘাত ও সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে, তা উপদেষ্টা পরিষদের অন্য সদস্যরাও আগেই অনুধাবন করেছিলেন। এ কারণেই অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। (দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল, প্রথম আলো, ২৩ অক্টোবর ২০২৫)। কিন্তু তাঁরা সেই পরামর্শ আমলে নেননি।
আলোচিত দুই উপদেষ্টার এ বিষয়টি কি আমাদের রাজনীতির কিছু পুরোনো প্রবণতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে না? এমন প্রবণতা কাউকে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করে দেয় এবং এতে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে ক্ষমতা ব্যবহারের লক্ষণও প্রকাশ পায়। বিগত সরকারের আমলে আমরা এ ধরনের চেষ্টার চূড়ান্ত প্রদর্শনী দেখেছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, গণ–অভ্যুত্থানের পর এগুলো পুরোপুরি বন্ধ হবে; নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হবে।
● মনজুরুল ইসলাম প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক
*মতামত লেখকের নিজস্ব