গণঅভ্যুত্থানে হত্যার মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে ছাত্রলীগ নেতা
Published: 23rd, October 2025 GMT
গত বছরের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জে গণঅভ্যুত্থানকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মুন্সীগঞ্জ শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসেন সাগরের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাজ্জাত হোসেন সাগরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ভোর ৫টায় তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পরে দুপুর ২টার দিকে সাজ্জাত হোসেন সাগরকে মুন্সীগঞ্জ আদালতে নেওয়া হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে সজল হত্যা মামলায় তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফিরোজ কবীর বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান সাগর। কোরিয়াতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হওয়ার পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয় তাকে। সম্প্রতি কঠোর গোপনীয়তায় দেশে ফিরে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন সাগর। এক মাস ধরে সাগরকে অনুসরণ করে ডিবি। গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশের মতো ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে জড়ো হয় কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা। এ সময় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নিরস্ত্র আন্দোলনকারীরা ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার সজল মোল্লা, রিয়াজুল ফরাজী ও ডিপজল। আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। এসব ঘটনায় তিনটি হত্যা মামলা ও হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলাতে আসামি করা হয়েছে সাজ্জাত হোসেন সাগরকে।
ঢাকা/রতন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ দ ন র র ম ন ড স গরক
এছাড়াও পড়ুন:
পরিচয় শনাক্তে তোলা হচ্ছে ১১৪ জুলাই শহীদের লাশ
পরিচয় শনাক্ত করতে রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ অজ্ঞাতনামা ১১৪ জনের লাশ তোলা হচ্ছে।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাশ উত্তোলন শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আরো পড়ুন:
এনজিওর ৬০০ কোটি টাকা প্রতারণা, সিআইডির অভিযানে তনু গ্রেপ্তার
১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, “আনাসের মতো যারা বুকের রক্ত ঢেলে দেশের জন্য রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।”
তিনি আরো বলেন, “এই কবরস্থানে যারা নাম-পরিচয়হীন অবস্থায় শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয় তখন যাচাই-বাছাই করা হয়নি। তাদের পরিচয় উদঘাটন করা জাতির প্রতি আমাদের একটি দায়িত্ব। আজ সেই মহান কাজের সূচনা হলো।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার (ওএইচসিএইচআর) মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি গত ৪০ বছরে ৬৫টি দেশে এ ধরনের অপারেশন পরিচালনা করেছেন বলে বাসসের খবরে বলা হয়।
সিআইডি’র প্রধান বলেন, “লাশ শনাক্তের জন্য এরইমধ্যে ১০ জন আবেদন করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা লাশ উত্তোলনের পর জানা যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “সব লাশের পোস্টমর্টেম করা হবে এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে পুনঃদাফন করা হবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিচয় শনাক্ত হলে, পরিবার চাইলে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, “ডিএনএ সংগ্রহের পর, যে কেউ আবেদন করলে সহজেই শনাক্ত করা যাবে। সিআইডির হটলাইন নম্বরগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে, যাতে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন।”
এ সময় ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ইউএনএইচআর) সহযোগিতায় আগত আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার বলেন, “আমি গত তিন মাস ধরে সিআইডির সঙ্গে কাজ করছি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।”
ঢাকা/ইভা