ডুবচরে আটকা পড়া ‘বোগদাদিয়া ৭’ এর যাত্রীরা নিরাপদে
Published: 1st, November 2025 GMT
চাঁদপুরের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ঢাকা যাওয়ার পথে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকার মেঘনা নদীতে ডুবচরে আটকে পড়ার পর যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লঞ্চটির যাত্রীরা ডাকাত আতঙ্কে ছিলেন, তারা কান্নাকাটি করছিলেন। ঘন কুয়াশার রাতে এই লঞ্চ রুটে আগেও ডাকাতির ঘটনা রয়েছে। যাত্রীদের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে অন্য দুটি লঞ্চের সহায়তায় তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
মেঘনায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ জেলের মরদেহ উদ্ধার
মেঘনায় সাড়ে ১৮ হাজার সিমেন্টের বস্তা নিয়ে ডুবল জাহাজ
শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ১১টায় লঞ্চটির ডুবচরে আটকে থাকার তথ্য দেন বিআইডব্লিউটিএর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য।
বিকাল ৫টায় ঢাকার উদ্দেশে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে প্রায় দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ‘বোগদাদিয়া ৭’ নামে লঞ্চটি। রাত ৮টায় ঝড়ের কবলে পড়ে এবং ঘন কুয়াশায় গজারিয়া লঞ্চঘাটের উত্তর পাশের ডুবচরে আটকা পড়ে লঞ্চটি। এতে লঞ্চে থাকা যাত্রীরা ডাকাত আতঙ্কে ভয়ে কান্নাকাটি করে উদ্ধারের আকুতি জানাতে থাকেন। খবর পেয়ে দটি লঞ্চের সাহায্যে যাত্রীদের উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক বাবু লাল বলেন, “চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ‘এমভি ইমাম হাসান ৫’ এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘বোগদাদিয়া ৮’ লঞ্চ এসে যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয় নিয়েছে। কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ‘বোগদাদিয়া ৭’ লঞ্চটি এখনো ওখানেই রয়েছে। হয়তো জোয়ার এলে ডুবচর থেকে নামানোর কাজ শুরু হবে।
“আমরা নৌ পুলিশকে ডুবচরে আটকা পড়া লঞ্চটির নিরাপত্তা দিতে বলেছি,” বলেন বাবু লাল।
ঢাকা/অমরেশ/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ঘন ন র পদ ড বচর
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদের তীরের ব্যক্তিমালিকানাধীন ফসলি জমি থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ‘লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর আদালতে মামলাটি করেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা গোলাম হোসেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা মামলাটি দায়ের ও আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রতারগাঁও মৌজায় ধোপাজান নদের তীরে তাঁর পরিবারের ২ একর ৪০ শতক ফসলি জমি রয়েছে। ওই জমি নিয়ে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা চলমান। কিন্তু লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং ধোপাজান নদে বিটি বালু উত্তোলনের অনুমতি নিয়ে তাঁর জমি থেকে জোরপূর্বক নদের পাড় কেটে ও ফসলি জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলন করেছে।
বাদীর অভিযোগ, ২৭ অক্টোবর রাতে তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিমপিডের লোকজনকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখেন। বাধা দিলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, আসামিপক্ষ তাঁর জমি থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বালু তুলে বিক্রি করেছে। এতে তাঁর জমির একাংশ নদে বিলীন হয়ে গেছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত ধোপাজান নদ। ভারত সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা এই নদের ইজারা ২০১৮ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ড্রেজার দিয়ে অবাধ বালু উত্তোলনের ফলে এলাকায় ব্যাপক ভাঙন ও পরিবেশগত ক্ষতি হওয়ায় সরকার ওই সময় ইজারা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। নদটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন।
ইজারা বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এই নদে প্রকাশ্যে বালু লুট শুরু হয়। প্রায় আড়াই মাসে এখান থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বালু লুট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখনো ধোপাজান নদ থেকে নানাভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এর মধ্যেই গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের প্রতিষ্ঠানটিকে ১ কোটি ২১ লাখ ঘনফুট বিটি বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চলমান কাজে এ বালু ব্যবহার করা হবে। তবে ধোপাজান নদ বিআইডব্লিউটিএর আওতাভুক্ত নয়। এরপর আগস্টে জেলা প্রশাসন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ধোপাজান নদে বিটি বালু নেই, এখানে রয়েছে উন্নতমানের সিলিকা বালু। এ বালু উত্তোলনের অনুমতি দিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এবং অনুমোদনপ্রক্রিয়াটিও বিধিসম্মত হয়নি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এর পর থেকেই লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বালু উত্তোলনের বিরোধিতা করে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন, সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত বুধবার একই দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
নদের তীরের মুসলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার বলেন, নানাভাবে এই বালু তোলা বন্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে, কিন্তু ফল হচ্ছে না। এর সঙ্গে বড় বালুখেকোরা জড়িত। তাঁরা স্থানীয় প্রভাবশালীসহ সুবিধাভোগীদের ম্যানেজ করে বালু তুলে বিক্রি করছেন। এই বালু লুট বন্ধ করতে হবে।