প্রয়োজনে ভারতকে ছাড়াই সার্ককে এগিয়ে নিতে হবে
Published: 2nd, November 2025 GMT
প্রতিরক্ষানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে ‘সবার আগে আগে বাংলাদেশ’ নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে জুলাইয়ের চেতনায় স্বাধীন ও শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করতে হবে। ভূরাজনীতিতে নিজেদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে কৌশলগত দূরদর্শিতা দেখাতে হবে। প্রয়োজনে ভারতকে ছাড়াই দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট সার্ককে এগিয়ে নিতে হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘টুয়ার্ডস আ কমপ্রিহেন্সিভ ফরেন পলিসি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের একটি চিন্তন প্রতিষ্ঠান এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের একটা অবস্থান নেওয়ার সময় এসেছে। সার্ককে সক্রিয় করার ক্ষেত্রে ভারত যদি সঙ্গে থাকে দারুণ। আর যদি তারা গোঁ ধরে থাকে, তখন এগিয়ে যেতে হবে। দুনিয়া তো কারও জন্য বসে থাকবে না।’
বাংলাদেশের আত্মপ্রত্যয়ী পররাষ্ট্রনীতির প্রয়োজন মন্তব্য করে সাবেক এই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য আমি একজন ডিপ্লোম্যাটকে (কূটনীতিককে) ছয় মাস রেখে বদলি করে দিলাম, এভাবে দক্ষ ডিপ্লোম্যাট তৈরি হয় না। ভারত দক্ষ ডিপ্লোম্যাট তৈরি করতে পেরেছে, পেশাদারত্ব বজায় রাখতে পেরেছে।’
এ সময় আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিবিদদের নানা বিষয়ে ঝগড়া–বিবাদ থাকবে। তবে জাতীয় স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি সে বার্তা দিতে হবে বাইরে। আপনি ভারতকে দেখেন; তাদের মধ্যে বিবাদ থাকলেও জাতীয় স্বার্থে তারা ঐক্যবদ্ধ।’
পররাষ্ট্রনীতির কাঠামো বদলে যাবে
আলোচনা অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একটা দেশের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে তার সিটিজেনসদের গ্রাউন্ডিংয়ের (নাগরিকদের বোঝাপড়া) যে দরকারটা বা ওনারশিপটা (মালিকানা) যে দরকার, আনফরচুনেটলিট (দুর্ভাগ্যজনকভাবে) আমরা সেটা তৈরি করতে পারিনি।’
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা ফরেন পলিসিটা (পররাষ্ট্রনীতি) করি বাইরের জন্য। ১৯২টি দেশ; এসব দেশের মধ্যে কার ভূরাজনীতি কেমন হচ্ছে, কার আঞ্চলিক রাজনীতি কেমন হচ্ছে—এসব গভীরভাবে বুঝতে হবে। নিজেদের কৌশলগত স্বার্থ বোঝার মতো দূরদর্শিতা থাকতে হবে।’
এ জন্য পেশাদারত্ব অর্জনের বিকল্প নেই জানিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ডিপ্লোমেটিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (কূটনৈতিক) করার জন্য যেটুকু পলিসি সাপোর্ট (নীতি সমর্থন) দরকার, যেটুকু পাবলিক সাপোর্ট (জনসমর্থন) দরকার, যেটুকু ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট (আর্থিক সহযোগিতা) দরকার, বাংলাদেশে কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেটা নেই।’
আমাদের রাজনীতিবিদদের নানা বিষয়ে ঝগড়া–বিবাদ থাকবে। তবে জাতীয় স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, সে বার্তা দিতে হবে বাইরে। আপনি ভারতকে দেখেন; তাদের মধ্যে বিবাদ থাকলেও জাতীয় স্বার্থে তাঁঁরা ঐক্যবদ্ধআবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীগত ৫৪ বছরে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যে ধরনের সম্পর্ক বাংলাদেশ বজায় রেখেছিল, সেটার কাঠামো পাল্টে যাবে বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের আকঙ্ক্ষো ও নেক্সট গ্র্যাজুয়েশন (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা) চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে আমাদের জন্য। গত ৫৪ বছর ধরে আমরা ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) সঙ্গে যেই ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখেছি, সেই ভিত্তিটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে। আমাদের এই পুরো কাঠামোটা বদলে যাবে।’
সে জন্য ব্যাপক আকারে অভ্যন্তরীণ সংস্কার করতে হবে জানিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ম্যাসিভ স্কেলে (ব্যাপকভাবে) আমাকে ডমেস্টিক রিফর্ম (অভ্যন্তরীণ সংস্কার) করতে হবে।’
ক্ষমতায় থাকতে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি
গত ১৭ বছরে ক্ষমতায় থাকার জন্য পররাষ্ট্রনীতিকে নতজানু করে রাখা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যু থেকে রোহিঙ্গা ইস্যু—এসব পরবর্তী সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রোহিঙ্গাদের দুইবার প্রত্যাবাসন করতে পেরেছিলেন। বিএনপি সে অভিজ্ঞতার আলোকে রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবিলা করবে।
ফাউন্ডেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহী আকবর বলেন, ‘কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুতা—এ পররাষ্ট্রনীতি একটা অবাস্তব ও কাব্যিক নীতি। বিগত আমলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে রূপান্তর করা হয়েছিল, যা ছিল বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য লজ্জা।’
আওয়ামী লীগের আমলে ১১টি প্রতিরক্ষা চুক্তির মধ্য দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এমন একটা সংসদ ছিল তখন, যেখানে একটা চুক্তিও কখনো প্রকাশ করা হয়নি, আলোচনা করা হয়নি। প্রতিরক্ষানীতি ও পররাষ্ট্রনীতির মধ্যে ভারসাম্য ও সমন্বয় করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) মাহমুদ হোসাইন বলেন, ‘প্রতিরক্ষানীতি ছাড়া কোনো দেশেরই পররাষ্ট্রনীতি তৈরি হয় না। যুক্তরাষ্ট্রে যে রাষ্ট্রদূতদের সময়কাল শেষ হয়ে যায়, তাঁরা সামরিক বাহিনীর কাছে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। আমাদের সে চর্চা নাই।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ঠিক থাকলেই কেবল পররাষ্ট্রনীতি একটা দেশকে সঠিক পথ দেখাতে পারে।
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম বলেন, ‘অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতির পাশাপাশি আমাদের জলবায়ু ডিপ্লোমেসিকে (কূটনীতিকে) কাজে লাগাতে হবে।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এয়ার কমোডর এম শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান আলী আশরাফ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো রাজিয়া সুলতানা, ঢাকা ফোরাম ইনিশিয়েটিভের আশফাক জামান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র অন ষ ঠ ন স ব ক এই র বল ন র জন য র জন ত র র জন আম দ র ভ রতক দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যেভাবে আবিষ্কৃত হলো ডুবে যাওয়া টাইটানিক
প্রায় ৪০ বছর আগে ১ সেপ্টেম্বর ভোরের দিকে বিশ্বের বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিকের খোঁজ মেলে। সেই দিন আটলান্টিকের তলদেশে তল্লাশি চালানো গবেষণা জাহাজ নরের কমান্ড সেন্টারের ভিডিও ফিডে একটি ধাতব সিলিন্ডারের অস্পষ্ট সাদাকালো ছবি ভেসে ওঠে।
জাহাজের চার সদস্যের পর্যবেক্ষণ দলের সদস্যরা সন্দেহ করেন বস্তুটি কোনো একটি ডুবে যাওয়া জাহাজের বয়লার হতে পারে। পর্যবেক্ষকেরা তখন জাহাজের রাঁধুনিকে পাঠান অভিযাত্রার প্রধান বিজ্ঞানী বব ব্যালার্ডকে ডেকে আনতে। বব ১৯৭০ দশক থেকে এই ধ্বংসাবশেষ খুঁজছিলেন। ব্যালার্ড তখন তাঁর কেবিনের বাংকে শুয়ে পড়ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের ফলিত সমুদ্র পদার্থবিদ্যা ও প্রকৌশলের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ব্যালার্ড স্মরণ করে বলেন, সেই রাঁধুনি তাঁর বাক্য শেষ করার আগেই আমি লাফিয়ে উঠলাম। আমি আক্ষরিক অর্থে আমার ফ্লাইটসুটটি পায়জামার ওপর পরেছিলাম তখন। পরের কয়েক দিন সেই সুট আর খুলিনি। টাইটানিক আবিষ্কারের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে নিজের অভিজ্ঞতা এভাবে প্রকাশ করেন বব ব্যালার্ড। ব্যালার্ড বলেন, ‘আমি যখন কমান্ড সেন্টারের ভেতরে, তখন বয়লার দেখলাম। আমাদের কাছে বয়লারের একটি ছবি ছিল। আমরা বুঝতে পারলাম এটি নিশ্চিতভাবেই টাইটানিকের।’
১৯১২ সালে সেই আইকনিক জাহাজটির যাত্রা শুরুর ৭৩ বছর পর ব্যালার্ড ও তাঁর দল ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান। এর আগপর্যন্ত টাইটানিক যেন ছিল এক অবিরাম আকর্ষণের উৎস। ডুবন্ত নয় বলে পরিচিত এই জাহাজ এক স্বর্ণালি যুগে আমেরিকান ধনীদের নিয়ে প্রথম যাত্রায় ডুবে যায়। মানুষের নির্বুদ্ধিতা, শ্রেণিগত কুসংস্কার আর প্রযুক্তিগত ব্যর্থতার এক করুণ গল্প হিসেবে টাইটানিক আজও আলোচিত।
১৯৮৫ সালে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার টাইটানিকের প্রতি আরও আকর্ষণকে তীব্র করে তোলে। বিজ্ঞানী ব্যালার্ড ও তাঁর সহকর্মীদের মতো সমুদ্র অভিযাত্রীদের জন্য টাইটানিক খুঁজে পাওয়া ছিল মাউন্ট এভারেস্টে প্রথমবার আরোহণ করার মতো। ১৯৮৫ সালে টাইটানিকের অনুসন্ধান ব্যালার্ডের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার প্রথম প্রচেষ্টা ছিল না। ব্যালার্ড তাঁর স্মৃতিকথা ইনটু দ্য ডিপে লিখেছেন, ১৯৭৭ সালের একটি অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল, যখন একটি ৩ হাজার ফুটের ড্রিলিং পাইপ সোনার ও ক্যামেরা নিয়ে মাঝখানে ভেঙে যায়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে ব্যালার্ড রিমোটলি অপারেটেড আন্ডারওয়াটার ভেহিকেল (আরওভি) ব্যবহার করার চেষ্টা করেন।
মার্কিন নৌবাহিনী এমন এক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল। আর্গো নামের প্রযুক্তি দিয়ে গভীর সমুদ্রভিত্তিক ইমেজিং সিস্টেম তৈরি করা হয়। মার্কিন নৌবাহিনী জানতে চেষ্টা করছিল এই প্রযুক্তির মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন ইউএসএস থ্রেশার ও ইউএসএস স্করপিওন খুঁজে পাওয়া যায় কি না। ১৯৬০–এর দশকে এই দুটি সাবমেরিন আটলান্টিকে ডুবে গিয়েছিল। বিজ্ঞানী ব্যালার্ড নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাবমেরিন জরিপ করার অভিযানের সময় টাইটানিক অনুসন্ধানের জন্য কিছু সময় দিতে রাজি করান। এই কৌশল অবশ্য নৌবাহিনীর গোপন মিশনের জন্য একটি কভার স্টোরি হিসেবে কাজ করেছিল। বিজ্ঞানী ব্যালার্ড বলেন, সেই সময় বেশির ভাগ মানুষ যা জানতেন না টাইটানিক অনুসন্ধান আসলে নৌ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে করা একটি অতি গোপনীয় সামরিক অভিযানের আড়ালের মিশন ছিল। আমরা চাইনি সোভিয়েতরা আমাদের সাবমেরিন কোথায় ছিল তা জানুক।
বহু বছরের পরিকল্পনা সত্ত্বেও ব্যালার্ড দুটি কারণে টাইটানিক খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন না। অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত সময় ছিল স্বল্প। আর ফরাসি মহাসাগরীয় প্রতিষ্ঠান আইফ্রেমারের প্রকৌশলী জ্যাঁ-লুই মিশেল অত্যাধুনিক জাহাজ-মাউন্টেড সোনার সিস্টেম ব্যবহার করা শুরু করে। ব্যালার্ড বলেন, ‘আমাদের চুক্তি ছিল ফরাসিরা জাহাজটি খুঁজে বের করবে। একবার তারা খুঁজে পেলে এক সপ্তাহ ধরে আমি ভিডিও করব। ফরাসি দলটি কাছাকাছি পৌঁছালেও ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়নি।’
স্করপিওন সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষের মানচিত্র তৈরি করার সময় ব্যালার্ডের একটি বুদ্ধি খুঁজে পান। সাধারণভাবে ভারী বস্তু সোজা সমুদ্রের তলদেশে ডুবে যায়। আর হালকা ধ্বংসাবশেষ ধীরে ধীরে নিচে নামে আর সমুদ্রের স্রোত তা আরও দূরে নিয়ে যায়। সেই হিসেবে টাইটানিক জাহাজ স্করপিওন সাবমেরিনের মতোই গভীরতায় ডুবেছিল। তখন জাহাজের কাঠামো বা অন্যান্য ভারী অংশ খুঁজে বের করার চেয়ে স্রোত খুঁজে বের করার কাজ করেন তারা।
আর্গোর মাধ্যমে ১৯৮৫ সালে টাইটানিকের সাদাকালো ভিডিও ধারণ করা হয়। এক বছর পরে আরও উন্নত রঙিন ক্যামেরা ব্যবহার করে জাহাজের সুইমিংপুল, গ্র্যান্ড সিঁড়ি এবং ধনুক বা সামনের অংশ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ব্যালার্ড সেই বছর অ্যালভিন নামক একটি ক্রুড সাবমার্সিবলের মাধ্যমে ধ্বংসাবশেষটি পরিদর্শনকারী প্রথম ব্যক্তি হয়েছিলেন। সেই সাবমার্সিবলের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। সেখানে তিনি একটি শিশুর পুতুল, শ্যাম্পেনের বোতল ও রুপার থালাবাসনসহ বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে পান। টাইটানিকের ওপর মরিচা পড়েছিল। দীর্ঘ ও লালচে কাঁটার মতো কাঠামো তৈরি হয়েছিল সেখানে।
বিজ্ঞানী ব্যালার্ড শুধু টাইটানিকের শেষ বিশ্রামস্থল আবিষ্কার করেননি। তিনি মিড-আটলান্টিক রিজে অভিযান পরিচালনা করেন। নাৎসি যুদ্ধজাহাজ বিসমার্ক, বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস ইয়র্কটাউনসহ বিভিন্ন জাহাজ খুঁজে বের করেন।
সূত্র: সিএনএন