চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসি। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বা বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকার বা প্রায় ৭ শতাংশ। গত বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির আয় ছিল ৩০ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকার। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। তাতে ৯ মাসের আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি সর্বশেষ জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক তথ্যও আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির বিক্রি বা ব্যবসা বাড়লেও মুনাফা কমে গেছে। গত বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ৬০৩ কোটি টাকা বা প্রায় ৪৬ শতাংশ কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৭২০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে চলতি বছর মুনাফা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধি। এ ছাড়া কোম্পানির কারখানা ও প্রধান কার্যালয় স্থানান্তরেও এ সময়ে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। যার প্রভাবও মুনাফায় পড়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোম্পানির আয় থেকে কর, ভ্যাট, পরিচালন খরচসহ সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে, সেটিই ওই সময়ের কোম্পানির মুনাফা হিসেবে বিবেচিত হয়।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ কোম্পানিটির খরচ হয়েছে ২৭ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা বা প্রায় ১৪ শতাংশ। কোম্পানিটির বিক্রি বা ব্যবসা যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ খরচ। এ কারণে শুল্ক-কর ও ভ্যাট পরিশোধের পর বিক্রি থেকে প্রকৃত আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে কোম্পানিটির।

এদিকে চলতি বছরের জুন মাসে কোম্পানিটি তাদের কারখানা ঢাকা থেকে সাভারে সরিয়ে নিতে শুরু করে। প্রায় ৬০ বছর পর কোম্পানিটি রাজধানীর মহাখালী থেকে সাভারের আশুলিয়ায় তাদের কারখানা সরিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি মহাখালী থেকে কোম্পানিটির কার্যালয়ও সরিয়ে নেওয়া হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কারখানা ও কার্যালয় স্থানান্তরে কোম্পানিটির খরচ হয়েছে ২১২ কোটি টাকার বেশি।

সর্বশেষ গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিএটিবিসি ৯ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। যার বিপরীতে কোম্পানিটি এই সময়ে মুনাফা করে ৩০৫ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। তার বিপরীতে মুনাফা করেছিল ৩৯৭ কোটি টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র প রথম ৯ ম স বছর র একই সময় ট ক র ব যবস স প ট ম বর গত বছর র র খরচ

এছাড়াও পড়ুন:

৭ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

কোম্পানিগুলো হলো- কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসি, রংপুর ডেয়ারি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, মনোস্পুল বাংলাদেশ পিএলসি, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স পিএলসি ও একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলো পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কনফিডেন্স সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১১.২৩ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮৮.৬৮ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৫ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

রংপুর ডেয়ারি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৬১ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬.৯২ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২২ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ৭ ডিসেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

মনোস্পুল বাংলাদেশ: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৭৬ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৫.০৫ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৩ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২.২১ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.৪৭ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২.০৯ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৪.০৮ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৪ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারনে আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৬০ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৪.৭৯ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৩ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

একমি পেস্টিসাইডস: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ০.০১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (১.১৪) টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬.৪১ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ