ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তাঁদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপরীতে ভূমিকা নেওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে গত ১৫ মার্চ আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, তথ্যচিত্র, ভিডিও ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিটি ওই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও দমনমূলক কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনো রেজল্যুশন আকারে হয়নি। কাউকে চিঠিও দেওয়া হয়নি। রেজল্যুশন হলে, চিঠি দেওয়া হলে অফিসিয়ালি জানাতে পারব।’

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আমাকে আহ্বায়ক করেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে তদন্ত শুরু করি। বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তর থেকে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়। লিখিত অভিযোগ, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবি ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা সর্বশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে সক্ষম হই।’

উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরও একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি বিবেচনা করবে, কাকে কতটুকু শাস্তি দেওয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

এদিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকায় থাকা আইন বিভাগের দুই শিক্ষক শাহজাহান মণ্ডল ও রেবা মণ্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা একটার দিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে তাঁরা মানববন্ধন করেন। পরে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন।

ইংরেজি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল–সহ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।

মানববন্ধনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি পক্ষপাতিত্ব করে রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়ে চুনোপুঁটিদের ধরায় ব্যস্ত। সিদ্ধান্তটি পক্ষপাতমূলক ও অযৌক্তিক।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা আল শাহরিয়ার বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় আমি ১২ দিন জেলে ছিলাম। তখন রেবা মণ্ডল ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান, আর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শাহজাহান মণ্ডল। আন্দোলনের সময় আমাদের বিভাগ থেকে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়নি। এই দুজন শিক্ষক সব সময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেছেন। আমরা তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ফেরত চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত জন শ ক ষ বরখ স ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।

এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।  

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন
  • পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা