ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
Published: 2nd, November 2025 GMT
দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে কমিটি নেই নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের। একইভাবে কমিটি নেই নোয়াখালীর ৯ উপজেলার চারটিতে। বাকি পাঁচ উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ। এমন অবস্থায় নোয়াখালীতে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ওই কমিটিতে সভাপতি পদে আজগর উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো.
জেলা ছাত্রদলের একাধিক সাবেক নেতার সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তাঁরা বলেন, কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে। যে যাঁর মতো দায়সারাভাবে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করছেন। জেলা শাখার তদারকি না থাকায় অধীন ইউনিটগুলোর কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতা বলেন, গত বছর কমিটি বিলুপ্তির পর নতুন কমিটি গঠন হবে—এ আশায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। তবে এসব নেতা-কর্মী এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের কার্যক্রমে গতি বাড়াতে দ্রুত কমিটি গঠন করা উচিত বলে জানান তাঁরা।
জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল, এটা সত্য। কিন্তু কী কারণে কমিটি হঠাৎ বিলুপ্ত করা হলো, তা আমরা জানি না। তবে দলের স্বার্থে বলব, দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করা উচিত। তা না হলে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের একজন আনোয়ার হোসাইন। তিনি বিগত কমিটিতে সহসভাপতির পদে ছিলেন। আনোয়ার হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে সংঘবদ্ধভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া কমিটি না থাকার কারণে দলের ভেতর জবাবদিহির জায়গাও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে কেউ কেউ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সামগ্রিকভাবে দলের জন্য ক্ষতিকর।
চার উপজেলায় কমিটি নেই, পাঁচটিতে মেয়াদোত্তীর্ণজেলার মতো নোয়াখালীর চার উপজেলাতেও ছাত্রদলের কমিটি নেই। এসব উপজেলা হলো চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর। এর বাইরে জেলার বাকি পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটিতে আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে চার বছর আগে। এসব উপজেলা হলো সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী। এ ছাড়া অপর উপজেলা হাতিয়ায় গত ১২ আগস্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এক মাসের জন্য গঠিত এই আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে।
জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকসুসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে এত দিন আমাদের ব্যস্ততা ছিল। এ কারণে জেলা কমিটিগুলোর দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে জেলা কমিটি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই নোয়াখালীতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ক গঠন কর দল র ক র কম ট গঠন ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতার নাম
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেম জালিয়াতি করে সঞ্চয়পত্রের ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক আবুল খায়ের মো. খালিদ বাদী হয়ে গতকাল বুধবার মামলাটি করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন মো. আরিফুর রহমান, মোহাম্মদ মারুফ এলাহী, আল আমিন ও মহিউদ্দিন আহমেদ। তাঁদের মধ্যে আরিফুর রহমানকে আজ সন্ধ্যায় মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মামলার আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ মারুফ এলাহী এই চক্রের হোতা। তিনি ছাত্রদলের বিগত কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। তার আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল শাখার আহ্বায়ক ছিলেন।
মোহাম্মদ মারুফ এলাহীর বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, মারুফ এলাহী আগের কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তাঁর কোনো পদপদবি নেই।
এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে টাকা তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত সোমবার মহা হিসাব নিরীক্ষণ কার্যালয়ের হিসাব নিরীক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এস এম রেজভীর আয়কর রিটার্ন পূরণ করতে গিয়ে দেখেন তাঁর নামে কেনা ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ১৩ অক্টোবর তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু রেভজী সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার কোনো আবেদন করেননি। পরে গ্রাহকের মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তন, টাকা লেনদেনের সীমা ২ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা করাসহ নানাভাবে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ২৩ অক্টোবর সঞ্চয়পত্রের ওই ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও দুই ব্যক্তির নামে থাকা ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল চক্রটি। কিন্তু ব্যর্থ হয় তারা।
কীভাবে এই জালিয়াতি
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো গ্রাহক সঞ্চয়পত্র কেনার সময় যে ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেবেন, সেই হিসাবেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা হয়, কোনো তথ্য পরিবর্তন, সুদ বা আসল নেওয়ার জন্য অবশ্যই সেই অফিসে আবেদন করতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর গ্রাহকের দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) যায়। উপস্থিত গ্রাহক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে তৎক্ষণাৎ সেই ওটিপি দেখানোর পর তা ব্যবহার করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তথ্য পরিবর্তন করা হয়। সব ক্ষেত্রে সার্ভারে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বা প্রমাণ থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, তাঁদের ওখানে যেসব কর্মকর্তার কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাসওয়ার্ড ছিল, তাঁদের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড নিয়ে এই জালিয়াতি করা হয়েছে