কৃত্রিম বুদ্ধির পৃথিবীতে চলচ্চিত্রের আত্মা
Published: 2nd, November 2025 GMT
চলচ্চিত্রের গল্প বলা শুরু হয় মানুষের চোখে দেখা বাস্তব থেকে। ক্যামেরা ছিল সেই চোখেরই বর্ধিত রূপ। আজ গল্প লেখা হচ্ছে অ্যালগরিদম দিয়ে, অভিনেতা বানানো হচ্ছে কোডে আর ক্যামেরা হয়ে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধির একটি মস্তিষ্ক। মনে হচ্ছে, আমরা সত্যিই হাইপাররিয়েলিটির যুগে প্রবেশ করছি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে চলচ্চিত্রের গল্প এখন কেবল সৃষ্টির বিষয় নয়—হয়ে উঠছে ‘গণনা’র বিষয়; যা দর্শকের পছন্দ, প্রতিক্রিয়া ও ডেটা বিবেচনায় এনে সাজানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে—যদি গল্প তৈরি হয় মেশিনের প্যাটার্ন ও প্রম্পটের ভিত্তিতে, তাহলে কখন তা আসল অনুভব হয়? কৃত্রিম বুদ্ধির তৈরি কাহিনি যত নিখুঁত কাঠামোয় হোক, তাতে কি থাকে মানবিক জীবনের গভীরতা, অভিজ্ঞতার স্পন্দন?
গল্প বলার ইতিহাস মূলত মানুষেরই ইতিহাস। আগুনের চারপাশে বসে প্রথম মানুষের গল্প বলার উপাদান ছিল তার দিনযাপন ও সামাজিক বন্ধন। ধীরে ধীরে যোগ হতে থাকে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক পরিচয়। কিন্তু একুশ শতকের সেই গল্প লেখা হচ্ছে অ্যালগরিদম দিয়ে, বিশ্লেষিত হচ্ছে মেশিনে, আর কাহিনির মূল চালক হয়ে উঠছে ডেটা।
২০১৬ সালে গুগলের টেনসর ফ্লো ব্যবহার করে ফ্রেন্ডস সিরিজের নতুন পর্ব তৈরি হয়েছিল। আজ নেটফ্লিক্স বা ডিজনির মতো স্টুডিওগুলো ইতিমধ্যেই কাহিনি ও দর্শক ডেটা বিশ্লেষণে কৃত্রিম বুদ্ধি ব্যবহার করছে। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মরগান চলচ্চিত্রে কৃত্রিম বুদ্ধির উল্লেখযোগ্য ব্যবহার ছিল। একটি স্টুডিও ও একটি গবেষণা সংস্থা একসঙ্গে কাজ করে ওয়াটসন নামের একটি সিস্টেমকে ব্যবহার করেছিল ট্রেলার তৈরিতে। সেটিকে ১০০টির বেশি ভৌতিক ও থ্রিলার ট্রেলার বিশ্লেষণ করতে দেওয়া হয়, তারপর চলচ্চিত্রের মূল দৃশ্য থেকে ১০টি নির্বাচন করে ট্রেলার তৈরি করা হয়।
আজ গল্প লেখা হচ্ছে অ্যালগরিদম দিয়ে, অভিনেতা বানানো হচ্ছে কোডে আর ক্যামেরা হয়ে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধির একটি মস্তিষ্ক। মনে হচ্ছে, আমরা সত্যিই হাইপাররিয়েলিটির যুগে প্রবেশ করছি।আজ গল্প কেবল বলা হয় না—দর্শক সেই গল্পে প্রবেশ করেন। ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি বা ইন্টারঅ্যাকটিভ প্ল্যাটফর্মে তারা চরিত্রের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংযুক্ত, পথ ও মোড় নির্ধারণ করতে পারে। নেটফ্লিক্সের ব্যান্ডারসন্যাচ বা দ্য ওয়াকিং ডেড: সেন্টস অ্যান্ড সিনার্স ভিআর তাঁর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এখানে অ্যালগরিদম গল্পকে দর্শকের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী রূপান্তরিত করছে, ফলে প্রতিটি অভিজ্ঞতা হয় আলাদা। ইমার্সিভ ও ইন্টারেকটিভ এই অভিজ্ঞতা দর্শককে কেবল পর্দার সামনে না রেখে, গল্পের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করে। ফলে গল্প এখন জীবন্ত হয়ে উঠেছে, প্রত্যেক দর্শকের চোখে আলাদা আলাদা কাহিনি হিসেবে, আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে।
ওয়াল্টার বেঞ্জামিন তাঁর ‘দ্য ওয়ার্ক অব আর্ট ইন দ্য এজ অব মেকানিক্যাল রিপ্রোডাকশন’ প্রবন্ধে ‘অরা’ বা শিল্পের আত্মা হারানোর আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। এখন সেই ‘অরা’ নতুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ—একজন লেখক কি এখনো চলচ্চিত্রের কেন্দ্রে আছেন, নাকি সেটি মেশিনের হাতে চলে যাচ্ছে?
আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী শোশানা জুবফ্ফ তাঁর দ্য এজ অব সারভেইল্যান্স ক্যাপিটালিজম বইটিতে দেখিয়েছেন, ডেটা আজ পুঁজির নতুন জ্বালানি। চলচ্চিত্রও এখন ডেটা-নির্ভর শিল্পে পরিণত হচ্ছে। দর্শকের অনুভবকে মাপা হচ্ছে অ্যালগরিদমিক ক্যালকুলেশনে, গল্প তৈরি হচ্ছে বাজারমুখী প্যাটার্নে। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের প্রযোজনা সংস্থাগুলো এখন দর্শকের আচরণ বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করছে কোন ধরনের গল্প কোন ফর্মে বলা হবে। এই গণনা-চালিত পথ গল্পকথনকে যেমন সীমাবদ্ধ করছে, তেমনি দিচ্ছে এক নতুন পথ।
অভিনয় একসময় ছিল মাংস–রক্তের একান্ত মানবিক শিল্প—চোখের ভাষা, মুখের অভিব্যক্তি আর শরীরের অঙ্গভঙ্গিতেই গড়ে উঠত পর্দার চরিত্র। কিন্তু আজ সেই মুখ আর আসল না–ও হতে পারে। প্রযুক্তির ডিপফেক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন এমনভাবে অভিনেতার মুখ, কণ্ঠ ও শরীর নকল করতে পারে যে দর্শক পার্থক্যই বুঝতে পারেন না। বড় বড় স্টুডিও এখন অভিনেতাদের থ্রি–ডি ফেস স্ক্যান নিয়ে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করছে। ভবিষ্যতে এই মুখ ব্যবহার করে চলচ্চিত্র বানানো সম্ভব—অভিনেতার শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই। এটিই ‘ফেস প্যাটার্ন’ বা চেহারার মালিকানা নিয়ে নতুন বিতর্কের কেন্দ্র।
আজ গল্প কেবল বলা হয় না—দর্শক সেই গল্পে প্রবেশ করেন। ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি বা ইন্টারঅ্যাকটিভ প্ল্যাটফর্মে তারা চরিত্রের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংযুক্ত, পথ ও মোড় নির্ধারণ করতে পারে।এই প্রবণতা ইতিমধ্যে বড় বাজেটের ছবিতেও দেখা গেছে। ২০২৪ সালের হেয়ার চলচ্চিত্রে রবার্ট জেমেকিস অভিনেতা টম হ্যাংকস ও অভিনেত্রী রবিন রাইটসের মুখ ও বয়স পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধি ফেস ট্রান্সফরমেশন প্রযুক্তি—যেখানে তাঁদের বাস্তব মুখকে ডিজিটালি রূপান্তর করে বিভিন্ন বয়সে উপস্থাপন করা হয়। এটি দেখিয়েছে, কীভাবে একজন অভিনেতার মুখ ভবিষ্যতে একটি ডেটাসেট হয়ে যেতে পারে। আবার ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোগ ওয়ান: আ স্টার ওয়ার্স স্টোরি চলচ্চিত্রে প্রয়াত অভিনেতা পিটার কুশিংয়ের মুখ ও কণ্ঠ কৃত্রিম বুদ্ধির প্রযুক্তিতে পুনর্নির্মাণ করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে পর্দায় হাজির করা হয়। প্রথম এর মাধ্যমেই অভিনেতার শারীরিক অনুপস্থিতিতেও একটি চরিত্র জীবিত রাখার উদাহরণ তৈরি করেছে এআই।
প্রযুক্তি পরিপূর্ণতা পেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আবেগকেও সিমুলেশনে রূপ দিতে চাইছে—যেখানে মানুষের প্রতিলিপিই আসলকে ছাপিয়ে যেতে চাচ্ছে। সভ্যতার এই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে—একজন মানুষ কি নিজের মুখ চিরতরে বিক্রি করে দেবেন? শিল্প যদি পুরোপুরি পণ্যে পরিণত হয়, তবে অভিনয় আর জীবন্ত থাকবে না, হয়ে উঠবে কেবল একটি ডেটাসেট। কৃত্রিম বুদ্ধির এই যুগে আমরা একটি সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে—একদিকে প্রযুক্তির অসীম সম্ভাবনা, অন্যদিকে মানবিক সত্তার সংকুচিত পরিসর। কোন পথ বেছে নেওয়া হবে, সেটিই ঠিক করবে ভবিষ্যতের অভিনেতা মানুষ হবে, নাকি কেবল একটি অ্যালগরিদমিক মুখ।
আরও পড়ুনইমারসিভ ও ইন্টারঅ্যাকটিভ সিনেমা: দর্শক যেখানে গল্পের নিয়ন্ত্রক০৯ অক্টোবর ২০২৫এই পরিস্থিতিতে লেখক ও অভিনেতারা চুপ করে বসে নেই। ২০২৩ সালে আমেরিকার লেখকদের সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা এবং অভিনেতাদের সংগঠন স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড-আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্টস ধর্মঘটে নামে। লেখকদের দাবি ছিল, কৃত্রিম বুদ্ধি কোনোভাবে উৎস উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হবে না, অভিজ্ঞ লেখকের কাজ দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধির মডেল প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে না। চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয় সীমাবদ্ধতা—স্টুডিও কোনো লেখককে কৃত্রিম বুদ্ধি ব্যবহার করতে বাধ্য করতে পারবে না এবং কৃত্রিম বুদ্ধি-নির্মিত লেখা সাহিত্য উপাদান হিসেবে গণ্য হবে না। অভিনেতাদের আন্দোলনের অন্যতম কারণ ছিল ডিপফেক প্রযুক্তি। অনেক প্রযোজনা সংস্থা একবার মুখ স্ক্যান করেই আজীবন তা ব্যবহারের অধিকার চাইছিল। এতে অভিনয় পেশা এক অদৃশ্য বেকারত্বের ঝুঁকিতে পড়ে—একবার মুখ কিনে নিলে নতুন করে ডাকার বা পারিশ্রমিক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কৃত্রিম বুদ্ধি এখন কাস্টিং প্রক্রিয়াও স্বয়ংক্রিয় করে ফেলছে—অভিনেতার বয়স, চেহারা ও পারফরম্যান্সের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে চরিত্র বাছাই করছে অ্যালগরিদম।
কৃত্রিম বুদ্ধির আগমনে কাহিনি নির্মাণ, চরিত্রের গঠন, দৃশ্য বিন্যাস ও সংলাপের পাশাপাশি প্রি-প্রোডাকশন পর্যায়েও এসেছে বড় পরিবর্তন। আগে শুটিংয়ের আগে স্ক্রিপ্ট ব্রেকডাউন করে দৃশ্য পরিকল্পনা, বাজেট তৈরি, লোকেশন বাছাই—এসব হতো ম্যানুয়াল টেবিল ও অসংখ্য সভার মাধ্যমে। এখন ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে স্ক্রিপ্ট ভেঙে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হচ্ছে দৃশ্যতালিকা, বাজেট প্রস্তাব ও শুটিং শিডিউল। প্রথাগত এক্সেল টেবিল আর ভারী কাগজপত্রের বদলে এসেছে স্বয়ংক্রিয় প্ল্যাটফর্ম—যেখানে একটি প্রম্পটই যথেষ্ট।
সবচেয়ে বড় বিপ্লব এসেছে পোস্ট প্রোডাকশনে। সম্পাদনা ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট এখন কৃত্রিম বুদ্ধির সহায়তায় অনেক দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে। সিজিআইয়ের জায়গায় এখন ব্যবহৃত হচ্ছে জেনারেটিভ ভিএফেক্স, যা বাস্তবতার চেয়ে বেশি বাস্তব দৃশ্য তৈরি করতে সক্ষম।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প এখনো কৃত্রিম বুদ্ধি প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ প্রভাবে পৌঁছায়নি, তবে এই ঢেউ খুব দ্রুত এসে পড়বে। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞাপন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং স্বল্প বাজেটের প্রযোজনায় কৃত্রিম বুদ্ধির তৈরি চেহারা ও কণ্ঠের ব্যবহার শুরু হয়েছে।পোস্ট হিউম্যান চলচ্চিত্রের যুগে চলচ্চিত্রের আত্মা কখনো শুধু প্রযুক্তি নয়—এটি মানুষের অনুভব ও নৈঃশব্দ্যের সূক্ষ্ম প্রতিফলন। কৃত্রিম বুদ্ধি গল্প বলার নতুন পরিসর খুলে দিয়েছে, তবু প্রশ্ন রয়ে যায়—কল্পনা কি মেশিনের নিজস্ব, নাকি নিছক পুনরাবৃত্তি? এই উত্তরণে মূল দ্বন্দ্ব মানুষ বনাম মেশিন নয়, বরং আত্মা কোথায় বাস করবে—সেই প্রশ্ন। মেশিন গল্প বলতে পারে, কিন্তু তা অধিকাংশ সময়ই যন্ত্রের প্রতিধ্বনিমাত্র। প্রযুক্তি ও অনুভবের এই সংলাপই শেষ পর্যন্ত ঠিক করবে চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প এখনো কৃত্রিম বুদ্ধি প্রযুক্তির পূর্ণাঙ্গ প্রভাবে পৌঁছায়নি, তবে এই ঢেউ খুব দ্রুত এসে পড়বে। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞাপন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং স্বল্প বাজেটের প্রযোজনায় কৃত্রিম বুদ্ধির তৈরি চেহারা ও কণ্ঠের ব্যবহার শুরু হয়েছে। বাস্তব উদাহরণ হিসেবে জুলাই আন্দোলনে দেখা যায়—সেখানে প্রচুর কৃত্রিম বুদ্ধি জেনারেটেড ভিডিও তৈরি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছিল। এসব ভিডিওতে কখনও ভিজ্যুয়াল এফেক্ট ব্যবহার করা হয়েছে, কখনো ডিপফেক বা কৃত্রিম বুদ্ধির তৈরি চেহারা দিয়ে বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শুধু অভিনেতা ও নির্মাতারাই ঝুঁকিতে নেই। সংবাদ পাঠক, সাংবাদিক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররাও এই ঢেউয়ে প্রভাবিত হতে পারেন। কৃত্রিম বুদ্ধির প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁদের ছবি, কণ্ঠ বা বক্তব্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব, যা ভুল তথ্য বা প্রোপাগান্ডার আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে ব্যক্তিগত অধিকার, পেশাগত নিরাপত্তা ও কনটেন্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নতুন ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বিবেচনা করা প্রয়োজন। প্রথমত, ডিপফেক ও ফেস ডেটার ব্যবহার নিয়ে স্পষ্ট আইনি নীতি থাকা আবশ্যক। কোন পরিস্থিতিতে কাকে কীভাবে ব্যবহার করা যাবে, সেটি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, অভিনেতা, সংবাদ পাঠক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরের চেহারা, কণ্ঠ ও ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের ওপর তাঁদের নিজস্ব অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হবে। তৃতীয়ত, যেকোনো কনটেন্টে কৃত্রিম বুদ্ধি ব্যবহারের বিষয়টি স্বচ্ছভাবে ঘোষণা করা উচিত, যাতে দর্শক বা শ্রোতা জানেন কোন অংশটি বাস্তব এবং কোন অংশটি কৃত্রিম। শেষে, স্থানীয় শিল্পী ও সংবাদকর্মীদের সংহত করতে ইউনিয়ন ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে আধুনিক নীতিমালা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পর্কিত চুক্তি তৈরি করতে হবে।
এই প্রস্তুতি না নিলে প্রযুক্তির অগ্রগতি শিল্পীর সৃজনশীলতা ও মানবিকতার জায়গা সংকুচিত করে দিতে পারে। সঠিক নীতি ও সচেতন ব্যবহার নিশ্চিত করলে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও মিডিয়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করতে পারবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র চলচ চ ত র চলচ চ ত র র ব যবহ র কর ল প এখন কনট ন ট ম নব ক র গল প ইন ট র আম র ক চর ত র র একট
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনে রাজধানীতে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ যানজট, ডিএমপির দুঃখপ্রকাশ
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলো অবরোধ করে যে আন্দোলন হচ্ছে, তাতে যানজট বাড়ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
রবিবার (২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় ডিএমপি।
আরো পড়ুন:
খেতুরে এবার ব্যাপক দর্শনার্থী সমাগম, দীর্ঘ যানজট
যানজটে আটকা পড়লেন সড়ক উপদেষ্টা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এমপিও ভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তকরণ, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ এমপিও ভুক্তকরণের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠন অবস্থান করছে। এছাড়া চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নন-ক্যাডারে নিয়োগ প্রদানের জন্য সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। যার ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।”
“শত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তথাপি অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে যানজট বৃদ্ধির ফলে যে জনভোগান্তি তৈরি হয়েছে সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ