জামালপুর শহরে ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও পাঁচ দফা দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছেন চালক ও মালিকেরা। আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে, চলবে বেলা দুইটা পর্যন্ত। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের শিক্ষার্থী, কর্মজীবীসহ সাধারণ মানুষ।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক দিন লাল ও এক দিন সবুজ ইজিবাইক চলাচল করবে। এর প্রতিবাদে আজ সকাল ছয়টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন চালক ও মালিকেরা। এতে স্বল্পদূরত্বের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ, ইজিবাইকের মাধ্যমে তাঁদের পরিবার চলে। জামালপুর শহর খুব ছোট্ট। আগের মতো এখন আয় নেই। অথচ পৌরসভা প্রতিবছর নানাভাবে চালক ও মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। প্রতিবছর লাইসেন্স ফি বাবদ পৌরসভা ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নেয়। এবার ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করেছে। এ ছাড়া এক দিন লাল ও এক দিন সবুজ ইজিবাইক চলাচল করবে। আবার এই ইজিবাইকের রং চালক অথবা মালিককে করতে হবে। এত টাকা খরচ করা একজন চালকের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণে তাঁরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।

আজ সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়ক ফাঁকা। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করছে না। যাত্রীরা হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। অনেকে আবার মালামাল মাথায় নিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরাও হেঁটে যাতায়াত করছে।

শহরের গেটপাড় এলাকায় ইজিবাইকের চালক ও মালিকেরা সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। দুই-একটি ইজিবাইক এলেই তাঁরা যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন।

সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের শিক্ষার্থী মো.

রাফি বেকায়দায় পড়েছেন। কলেজে যাওয়ার জন্য শহরের মুকুন্দবাড়ি এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনো ইজিবাইক নেই। বাধ্য হয়ে তিনি হেঁটেই কলেজের দিকে রওনা হলেন। তিনি বলেন, দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। তবে সেটা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে কেন। অন্য কোনো উপায়ে দাবি-দাওয়া আদায় করা যেত না! এভাবে হঠাৎ সব বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়।

গেটপাড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে আছেন ইজিবাইকের চালক মো. মুন্না। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয়। সেখান থেকে গাড়ির মালিককে দিতে হয়। চার্জ বাবদ খরচ আছে। তাহলে আমাদের থাকে কী? এর মধ্যে পৌরসভা প্রতিবছর লাইসেন্স ফি বাবদ টাকা বাড়ায়। এসব আমরা মানি না।’

জামালপুর শহরে প্রায় ১১ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। এর মধ্যে লাইসেন্স আছে ৭ হাজার ৪০০ ইজিবাইকের।

জামালপুর পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরে ২০১০ সাল থেকে ইজিবাইক চলাচল শুরু হয়। গত ১৪ বছরে ইজিবাইকের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। ২০১৮ সালে সিদ্ধান্ত হয়, পৌর শহরে লাইসেন্স করা ৩ হাজার ইজিবাইক চলাচল করবে। সেই লক্ষ্যে পৌর কর্তৃপক্ষ তিন হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স দেয়। গত সাত বছরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আরও ৪ হাজার ৪০০ ইজিবাইকের লাইসেন্স দিয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে ৭ হাজার ৪০০ ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তবে অবৈধ বাকি ৩ হাজার ৬০০ ইজিবাইক শহরে চলাচল বন্ধ করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে এখনো পুরো শহরে প্রায় ১১ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে।

জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম প্রথম আলোকে বলেন, চালক ও মালিকেরা না বুঝেই আন্দোলন করছেন। লাল ও সবুজ রং পৌরসভাই করে দেবে। আর লাইসেন্স ফি বাবদ যে ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে, সেই টাকা চালকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজনে খরচ করা হবে। তাঁরা ভুল তথ্য পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের ডেকে সব বিষয়ে কথা বলা হবে। তারপর আশা করি এ নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ লক ও ম ল ক র প র শহর ৫০০ ট ক এক দ ন প রসভ শহর র ত বছর

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৫ থেকে ১৩ নভেম্বর ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করতে রবিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

আরো পড়ুন:

ফখরুলের কণ্ঠ নকল, সতর্ক করল বিএনপি

শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ

কর্মসূচিআর মধ্যে রয়েছে, ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ দিন সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে ৭ নভেম্বর সকাল ১০ টায় দলের জাতীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ৭ নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৩ টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র‌্যালী হবে। ঐ দিন সারা দেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র‌্যালি হবে।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।

এছাড়া শ্রমিক দল-৫ নভেম্বর-আলোচনা সভা, ছাত্রদল-৮ নভেম্বর-আলোচনা সভা (৭ ও ৮ নভেম্বর টিএসসি-তে আলোকচিত্র প্রদর্শনী), ওলামা দল-৯ নভেম্বর-এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, তাঁতী দল-১০ নভেম্বর-আলোচনা সভা, কৃষকদল-১১ নভেম্বর-আলোচনা সভা, জাসাস-১৩ নভেম্বর-শহীদ মিনারে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে ১২ নভেম্বর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা, ৬ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ডকুমেন্টরি (ভিডিও, স্থিরচিত্র) ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়াসহ ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব  ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পোষ্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।

সভায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি/আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ