সাড়ে ৬ মাস পর গ্যাস পেয়ে সিইউএফএলে সার উৎপাদন শুরু
Published: 2nd, November 2025 GMT
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) ইউরিয়া উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। গ্যাসসংকটে সাড়ে ছয় মাস বন্ধ থাকার পর আজ রোববার ভোরে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল থেকে কারখানাটিতে ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ১৯ অক্টোবর থেকে আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে কারখানাটিতে। এরপর কারখানাটি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান কারখানায় উৎপাদন শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাস পাওয়ার পর যাবতীয় স্টার্টআপ (কারখানা চালুর প্রক্রিয়া) শেষে ভোরে ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়েছে। ফলে কারখানার শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই খুশি।
কারখানা সূত্র জানায়, সিইউএফএল চালু থাকলে দৈনিক ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করা যায়। প্রতি মেট্রিক টন সার ৩৮ হাজার টাকা হিসেবে কারখানাটিতে দৈনিক ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার সার উৎপাদিত হয়। কারখানা বন্ধ থাকায় গত সাড়ে ছয় মাসে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার সার উৎপাদন করা যায়নি।
কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, কয়েক বছর ধরে কখনো যান্ত্রিক ত্রুটি, কখনো গ্যাসসংকটে দীর্ঘ সময় বন্ধ থেকেছে কারখানা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে শুধু পাঁচ দিন চালু ছিল সিইউএফএল কারখানা। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। টানা ১০ মাস বন্ধের পর ১৩ অক্টোবর সিইউএফএল চালু হয়। তবে এ বছরের ৩ জানুয়ারি আবারও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে দীর্ঘ সময় লাগে কারখানাটি চালু করতে। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার সময় কারখানা চালু হলেও ১১ এপ্রিল গ্যাসসংকটে আবারও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনক্ষমতা ছিল। তবে বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম কারখানাটি। পাশাপাশি দৈনিক ৮০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।
সিইউএফএল সূত্র আরও জানায়, পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাসসংকট ও যান্ত্রিক নানা সমস্যা থাকায় গত অর্থবছর কারখানাটিতে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়েছে। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ট র ক টন ইউর ল খ ম ট র ক টন স ইউএফএল স র উৎপ দ ইউর য ইউর য়
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।