শিশু সেপারেশন অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে ভুগলে করণীয়
Published: 2nd, November 2025 GMT
মা সকালে অফিসে বেরোচ্ছেন। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে শিশুসন্তান। অনেকের ক্ষেত্রেই এটা হয়। স্বাভাবিক ব্যাপারও বটে। কিন্তু যদি এটা প্রতিদিন চলতে থাকে ও সঙ্গে আরও কিছু বিষয় লক্ষ করেন, তবে বিষয়টি ভাবনার। কারণ, এটি হতে পারে ‘সেপারেশন অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার’।
ছয় মাস থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা মনে করে মা আছে মানেই তারা নিরাপদ। তাই মা চোখের আড়াল হলেই উদ্বিগ্ন হয়। সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রবণতা কমে আসে। কিন্তু যখন এই ভয় বয়সের তুলনায় অনেক বেশি তীব্র হয়, দীর্ঘ সময় ধরে থাকে ও শিশুর স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে মেশা বা একা ঘুমানোর মতো ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে, তখন সেটি স্বাভাবিক নয়।
লক্ষণগুলো কেমন, কারণ কী
মা-বাবা কোথাও গেলে বা আলাদা হলে শিশুর তীব্র কান্না শুরু হয়। চিৎকার, শ্বাসকষ্ট বা বমি পর্যন্ত হতে পারে। স্কুলে যেতে ভয় করে, যেতে চায় না। একা ঘুমাতে চায় না। প্রিয়জনের কিছু ‘খারাপ’ হবে—এই ভয় থেকে বারবার আশ্বাস চাওয়া। পেটব্যথা ও মাথাব্যথার মতো উপসর্গও থাকে।
এ সমস্যার একটি কারণ জিনগত। পরিবারের কারও উদ্বেগজনিত সমস্যা থাকলে শিশুর ঝুঁকি বেশি। শিশুর হাসপাতালে ভর্তি থাকা, প্রিয়জনের মৃত্যু বা হঠাৎ স্কুল পরিবর্তনের মতো অভিজ্ঞতা বা ট্রমা থেকে হতে পারে। অভিভাবকের আচরণ যেমন—অতিরিক্ত সুরক্ষা, সন্তানকে একা কিছু করতে না দেওয়া বা ভয় দেখানো ইত্যাদির প্রভাবেও হয়ে থাকে। এ ছাড়া পারিবারিক অশান্তি, বিচ্ছেদ বা ভাই-বোন হওয়ায় প্রভাব ফেলে।
চিকিৎসা
এ ক্ষেত্রে বিহেভিয়ার থেরাপি সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি। এর মাধ্যমে শিশু যাতে ধীরে ধীরে বিচ্ছেদের পরিস্থিতি সামলাতে শিখতে পারে ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তা শেখানো হয়। প্রথমে শিশুর ভয় ও এড়িয়ে চলার ধরন চিহ্নিত করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে অল্প সময়ের জন্য মায়ের থেকে দূরে থাকা, পরিচিত পরিবেশে বা ভরসার ব্যক্তির সঙ্গে থাকতে অভ্যস্ত হওয়া শেখাতে হবে। শিশুকে শেখানো হয় যে মা-বাবা না থাকলেও সে নিরাপদ। ইতিবাচক উৎসাহ যা শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সমস্যা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু নিরাপদ ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
অভিভাবকের করণীয়
শিশুর ভয়কে ছোট করে দেখবেন না আবার প্রশ্রয়ও দেবেন না। বিদায় জানানোর সময় বারবার ফিরে তাকাবেন না। নিজেও অস্থির হবেন না। শিশুর ঘুম, খাওয়া, স্কুলে যাওয়া, খেলা—সব সময়মতো করতে হবে। কিছু সময়ের জন্য বিদায় নিন যেমন প্রথমে ৫ মিনিট, পরে ১৫ মিনিট মাকে ছাড়া থাকতে দেওয়া। নিজের উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণে রাখুন; কারণ, শিশু খুব দ্রুত তা অনুকরণ করে।
ডা.
টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ, সহকারী অধ্যাপক, শিশু মনোরোগবিশেষজ্ঞ
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৫ থেকে ১৩ নভেম্বর ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করতে রবিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
আরো পড়ুন:
ফখরুলের কণ্ঠ নকল, সতর্ক করল বিএনপি
শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ
কর্মসূচিআর মধ্যে রয়েছে, ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ দিন সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে ৭ নভেম্বর সকাল ১০ টায় দলের জাতীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ৭ নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৩ টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালী হবে। ঐ দিন সারা দেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি হবে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।
এছাড়া শ্রমিক দল-৫ নভেম্বর-আলোচনা সভা, ছাত্রদল-৮ নভেম্বর-আলোচনা সভা (৭ ও ৮ নভেম্বর টিএসসি-তে আলোকচিত্র প্রদর্শনী), ওলামা দল-৯ নভেম্বর-এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, তাঁতী দল-১০ নভেম্বর-আলোচনা সভা, কৃষকদল-১১ নভেম্বর-আলোচনা সভা, জাসাস-১৩ নভেম্বর-শহীদ মিনারে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে ১২ নভেম্বর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা, ৬ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ডকুমেন্টরি (ভিডিও, স্থিরচিত্র) ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়াসহ ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পোষ্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
সভায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি/আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি