বর্তমান সংকটের জন্য সরকারকে দায়ী করে, সংকট উত্তরণে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মন যুগিয়ে চলার নীতি বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি দলের শীর্ষনেতারা। তারা বলেছেন, সরকার শুরু থেকে জনগণ বা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার কথা না ভেবে, কখনও বিএনপি, কখনও জামায়াত, কখনও এনসিপির চাপে সিদ্ধান্ত বদল করেছে, বর্তমান সংকটের এটাও একটা বড় কারণ।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও আপ বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘স্বল্প আস্থার সমাজে সংস্কার ও নির্বাচনী ঐক‍্যের রাজনৈতিক চ‍্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।

প্রধান আলোচক অধ্যাপক মুশতাক হোসেন বলেন, ‘‘সমাজকে পরিবর্তন করতে যে জাতি জীবন দিতে পারে সেই জাতি অনেক শ্রদ্ধার। নতুন বন্দোবস্ত চুক্তি করে হয় না, কারণ কায়েমি স্বার্থবাদীরা নতুন বন্দোবস্ত মেনে নেয় না। তবে নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’

ইংল্যান্ডের টরি পার্টির বিরুদ্ধে দুর্বল রাজনৈতিক দলগুলোর বিপ্লবের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেখানেও সমঝোতা হয়নি, সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছিল।’’ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায় তারা উচ্চকক্ষ নিম্নকক্ষ সব জায়গা দখলের পদ্ধতি জানে।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘আস্থার অভাবে ঝগড়া করে এদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথচ আস্থাশীল হলে সবাই লাভবান হতে পারত। এ দেশের মানুষের সহজে ক্ষমা করে দেয়ার প্রবণতার কারণে আওয়ামী লীগ বেচে গেছে। স্বার্থবাদী দলগুলো 'ভাইভাই রাজনীতি' করে বলেই স্বৈরাচার আর ফ্যাসিস্ট বারবার আসে।’’ 

অপরাধ করলে কোন না কোনভাবে শাস্তির ব্যবস্থা থাকতেই হবে জানিয়ে অধ্যাপক মুশতাক বলেন, ‘‘আস্থাহীনতা কমাতে হলে সামাজিক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে যেন অপরাধ করলে সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়। অনিয়ম করলে তাকে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয়ভাবে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘সকল শ্রেণী পেশার মানুষের আস্থা অর্জন কঠিন হলেও নিজেদের মধ্যে আস্থা বজায় রাখতে হবে এবং চোরদের সাথে কখনো আপোষ করা যাবে না। যারা আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল তাদের কোন না কোনভাবে বিচার বা ক্ষমা চাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’’

ঐক্যমত্য বা নতুন সংবিধান এখনি না হলেও লড়াই চালিয়ে গেলে জনতা পাশে থাকবে বলেও তিনি আশাবাদ জানান। 

সভাপতির বক্তব্যে হাসনাত কাইউম বলেন, ‘‘অনেক মতদ্বৈততা থাকলেও দেশের প্রশ্নে এক হয়ে নতুন রাজনীতির জন্য কাজ করতে হবে। এখনি রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু করতে হবে। হাসিনা-ওবায়দুল কাদেররা সাংবিধানিক পদ্ধতি এমনভাবে সাজিয়েছে তার মধ্যেই ফ্যাসিস্ট হওয়ার উপাদান নিহিত আছে। অতীতে জনগণের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে পারার কারণে সফলতা এসেছে। এবার আন্দোলনের নেতৃত্বকে কিছু বুড়ো মানুষ ভুল পথে পরিচালিত করেছে, এবং টাকাওয়ালাদের কাছে নিয়ে গেছে, ফলে রাষ্ট্রের সংস্কার আজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’’ 

পুরোনো পথে নতুন বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন হবে না। তিনটি দলের এই আয়োজন দল ও ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয় বলেও জানান তিনি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘‘বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ কথায় কথায় সংবিধানের রেফারেন্স দেন, এটা ভালো। তবে তার কাছে প্রশ্ন- ফ‍্যসিস্ট হাসিনা সংবিধানের কোন আর্টিকেলের আলোকে আপনাকে গুম করে বিনা ভাড়ায় বিনা টিকিটে শিলংয়ে নিয়ে গিয়েছিল? আমাদের জানতে ইচ্ছে করে।’’ 

এবি পার্টি শক্তিশালী হলে তার লোকেরা পাবলিক টয়লেট ইজারা নেবে না এমন গ্যারান্টি নাই মন্তব্য করে মঞ্জু বলেন, এই সংস্কৃতি বদলানোর জন্যই নতুন রাজনীতি দরকার। নতুন রাজনীতি দাঁড়াতে না পারার কারণ খোঁজার আহ্বান জানান তিনি। 

অধ্যাপক ইউনূসের সরকার তিন দলের চাপে পড়ে বারবার সিদ্ধান্ত বদল করে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘জনগণের জন্য যা ভালো সেটা করতে হবে; কোনো দলের স্বার্থ হাসিলের জন্য নয়।’’ জনগণের কথা না শোনায় উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আপনাদের কিছুদিন পর জনগণের কাতারে আসতে হবে।'

সরকারের উদ্দ্যেশ্যে তিনি বলেন, এক-দুইটা রাজনৈতিক দলের মন যুগিয়ে চললে জুলাই শহীদ এবং আহতদের কাছে আজীবন ভিলেন হিসেবে অভিশাপ পেতে হবে।


আলি আহসান জুনায়েদ বলেন, হাসিনার হাতে ভেঙ্গে পড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক শক্তিগুলি ক্ষমতা ভোগের উৎসবে মেতেছে। ভোট কেন্দ্র দখলে অভ্যস্ত এবং বিপ্লব বিরোধীরা ক্ষমতায় আসলে জনগন আবারো হতাশ হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

জনগণকে অন্ধকারে রেখে চেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জনগনের রাষ্ট্র গঠন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনীতি করা উচিৎ বলে মত দেন তিনি। গণভোটে দুইটা ব্যালট রাখার প্রস্তাব আবারো তুলে ধরেন তিনি। সংস্কার প্রশ্নে জনগণকে সাথে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন তিনি। 

শহিদ উদ্দিন স্বপন বলেন, আইনের শাসন না থাকা এবং বৈষম্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতা।  জুলাই অভ্যুত্থানের পর সমাজ বিপ্লবের সম্ভাবনা তৈরি হলেও রাজনৈতিক নেতাদের পুরোনো চিন্তাচেতনার কারণে মানুষ আশাহত হয়েছে। যেটুকু অগ্রগতি গত ১৫ মাসে হয়েছে তাকে ভিত্তি ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।

সৈয়দ হাসিব উদ্দিন বলেন, এই মুহুর্তে চরম দুর্বল অবস্থায় আছে বাংলাদেশ, এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই অবস্থার মোকাবেলায় নির্বাচন জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোকে গরম বক্তব্য না দিয়ে জনগনকে সাথে নিয়ে সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে। 


অধ্যাপক আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, আমাদের দেশের সর্বস্তরে আস্থার প্রচণ্ড সংকট, এটি দূর করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের কাছে পরীক্ষা দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা জীবিত থাকতে আওয়ামী লীগ এদেশে রাজনীতি করবে সেটি হতে পারে না। অহমিকা ছেড়ে সব দলকে ঐক্যের পথে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ডায়নোসর অনেক বড় ছিল কিন্তু আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

আরেফিন মো.

হিজবুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদকে নির্মূল করতে শেখ মুজিবের ছবি টানানো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাঠামোগত ফ্যাসিবাদ সংকটকে তরান্বিত করছে। যেসব জায়গায় ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ার আশংকা আছে সেগুলো বন্ধ করতে হবে।

দিদার ভুইয়া বলেন, ছেড়া 'স্যান্ডেল থেকে ফাইভস্টার হোটেল কোন বিপ্লবীর চরিত্র হতে পারে না।' রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যে আস্থাহীনতা বর্তমান সংকটের অন্যতম কারণ। উচ্চকক্ষে পিআর না মেনে বিএনপি নিজেদের ক্ষতি করছে। এমনকি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা তৈরি হচ্ছে। 

ব্যারিস্টার জোবায়ের বলেন, প্রশাসনে নিজস্ব লোক সেট করতে ব্যস্ত তিন দল অথচ টেকসই রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য রাজনৈতিক ইকো সিস্টেম জরুরি।

সভায় তিন দলের ঐক্যবদ্ধ পথ চলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। 

রাইজিংবিডি/নঈমুদ্দীন নি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ জনগণ র নত ন র ন র জন র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে অনৈক্যের সুর দেখতে পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘এই বিভেদ এবং অনৈক্য উসকে দিয়েছে বাংলাদেশের একটি বড় পার্টি, সেটা হলো বিএনপি। অভ্যুত্থানের পরে যদি ইতিহাসে লেখা থাকে, প্রথম কোন দল বাংলাদেশে অনৈক্য জন্ম দিয়েছে? সেটা হলো বিএনপি।’ একে ‘অসুস্থ রাজনৈতিক চর্চা’ উল্লেখ করে এখান থেকে সরে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে’ শীর্ষক সেমিনারে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথাগুলো বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে দলের যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘জামায়াত প্রশ্ন নিয়ে এসেছে, লোয়ার হাউসে (নিম্নকক্ষে) পিআর; বিএনপি প্রশ্ন নিয়ে এসেছে, নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত); এগুলো নিয়ে তারা সরকারের সাথে বার্গেইন (দর–কষাকষি) করতে চায়—কোথায় ডিসি নিয়োগ দিবে, কোথায় এসপি নিয়োগ দিবে? জাতি যখন সংকটে, এই দুই দল বাংলাদেশকে অন্য একটা সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

গণভোটের প্রসঙ্গ তুলে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে এটি বাংলাদেশের জনগণের বিজয় হবে। তিনি বলেন, ‘এটা তো জামায়াতে ইসলামীর জয় হবে না। এ জন্য আমরা জামায়াতে ইসলামীর কাছে আহ্বান রাখব, ভণ্ডামি বাদ দেন আপনারা। ভণ্ডামি বাদ দিয়ে অন্তরে কী আছে, একটু খুলে বলেন।’

অসুস্থ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান

নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) বিষয়ে বিএনপির বক্তব্যের সমালোচনা করে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে সালাহউদ্দিন সাহেব (সালাহউদ্দিন আহমদ) বলেছেন, কমিশনে যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছে, আমি সেগুলোকে বলব, “নোট অব ডিসেন্ট” নয় “নোট অব চিটিং”। ঠিক এই “নোট অব চিটিং”য়ের মাধ্যমে তারা পুরো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সাথে প্রতারণা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতারণাটা বাংলাদেশের তরুণ ছাত্র–জনতার কাছে ধরা পড়েছে।’

বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ‘ভেটো’ দিয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অথচ তারা (বিএনপি) একটা সময় এটা চেয়েছিল।’

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) নিরপেক্ষ হওয়ার প্রস্তাবে বিএনপির ভিন্নমতের সমালোচনা করেন নাসীরুদ্দীন। নিরপেক্ষ পিএসসি ও দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) গঠনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় পার্টি সম্পর্কে বিএনপিকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কুসুম কুসুম প্রেম আপনারা আওয়ামী লীগের সাথে দিয়েছিলেন। এখন জাতীয় পার্টির সাথে দিচ্ছেন, জাতীয় পার্টি সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, “‘নোট অব চিটিং” বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নিবে না। এবং এই “নোট অব চিটিং”য়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিএনপি যে ধরনের অসুস্থতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, আমরা তাদেরকে আহ্বান জানাব যে আপনারা এই সব কার্যক্রম থেকে সরে আসুন। নতুনভাবে বাংলাদেশের মধ্যে রাজনীতি করুন।’

‘নিম্নকক্ষে পিআর জামায়াতের ভণ্ডামি’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে জামায়াত একটা “বাইট” দেওয়ার চেষ্টা করছে যে তারা খুব সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু বিএনপি খারাপ হলেও একদিকে ভালো যে তারা যে সংস্কারের বিপক্ষে, এটা জনগণের সামনে সরাসরি বলে। আর জামায়াত হলো এমন যে মনে বলে সংস্কারের বিপক্ষে; মুখে তারা বলে সংস্কারের পক্ষে। আমরা এখনো সুপারিশমালার কোনো সমাধান করতে পারি...তারা নতুন করে মার্কেটে নিয়ে এসেছে গণভোট হবে।’

জামায়াতে ইসলামীকে সঠিক জায়গায় কথা বলার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘সঠিক জায়গায় কথা বলুন, বেজাগায় কথা বলিয়েন না। ’৭১–এ আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) উল্টাপাল্টা কাজ করেছিলেন, ’২৪–এ এসে এখন উল্টাপাল্টা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য জামায়াতে ইসলামীকে আমরা বলব, গণভোট নিয়ে জনগণের আতঙ্ক সৃষ্টি না করে, সংস্কারের জন্য নোট অব ডিসেন্টের প্রক্রিয়াগুলো কীভাবে সমাধানে পৌঁছতে পারি, আদেশটা কীভাবে জারি করা যায়?... সে বিষয়ে আপনার দাবি তোলা উচিত। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে মনে করি, জামায়াত যে দাবিগুলো তুলছে, লোয়ার হাউসের পিআর...এগুলো হলো জামায়াতের ভণ্ডামি, এগুলো হলো কিছু সিটের (আসন) বার্গেনের (দর–কষাকষি) জন্য।’

এনসিপির রাজনীতির একটি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা সেই সম্ভাবনার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা দেখছেন, আপনারা বিচার করবেন। পুরো বাংলাদেশ বিচার করবে।’ এনসিপির নেতাদের গাড়ি–বাড়ি অর্জনের অভিযোগও নাকচ করেন তিনি। এ ছাড়া প্রতীক হিসেবে এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বানও জানান নাসীরুদ্দীন।

‘জনতা বঙ্গভবনে যাবে’

দেশবাসী উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তির জন্য গণ–অভ্যুত্থানের সরকারপ্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা দ্রুত আদেশ জারি করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাঁদের আবেদন থাকবে।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টার উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ডক্টর ইউনূসকে বাংলাদেশের সামনে অতিসত্বর শহীদ মিনারে গিয়ে জনগণের সামনে উপস্থিত হয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আদেশ জারি করতে হবে। যদি সে ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হয়, তাহলে সেটা আমরা কীভাবে করব, সেটা আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আবার রাজপথে দেখিয়ে দিব ইনশা আল্লাহ। আমরা যথেষ্ট উৎকণ্ঠা এবং উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে যে আপনাদের কাছে নীতিমালা এসেছে। আপনারা দ্রুত আদেশ জারি করুন। আমাদের এই উৎকণ্ঠা, বিএনপি অনৈক্য সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, এটা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিন। আমরা দ্রুত ইলেকশনের ফেজে (নিবার্চনী পর্বে) ঢুকতে চাই।’

অধ্যাদেশ বা প্রজ্ঞাপন বা আদেশ জারির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কোনো বৈধতা নেই, এমন মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘যদি চুপ্পুকে (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) দিয়ে আদেশ দেওয়ার বাংলাদেশে কোনো চেষ্টা চালানো হয়, তাহলে জনতা বঙ্গভবনে চলে যাবে। আগে গণভবনে গিয়েছিল, নতুন করে যদি এ ধরনের কোনো প্রচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে জনতা আবার বঙ্গভবনে যাবে ইনশা আল্লাহ।’

জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী