‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল
Published: 2nd, November 2025 GMT
সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।
আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’
মঞ্চে আর্টসেল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জামায়াতের
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বিএনপি যতই উসকানি দিক, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে বিরোধে জড়াতে চায় না। মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক আছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দূর করে স্পষ্ট করা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। সুতরাং আসুন আমরা সব ভুলে আলোচনায় বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন, জুলাই সনদ, গণভোট নিয়ে একধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সবকিছুতে পানি ঢেলে আসুন আমরা আলোচনা করি।’
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘রাজনীতির অনেক খেলা আছে, আমরা খেলতে চাই না। আসুন সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করি।’
বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘আমরা এই আহ্বান এখন মিডিয়ার মাধ্যমে দিচ্ছি। দেখি তারা মিডিয়ায় কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। আগামীকাল সোমবার জামায়াতের দলীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা শিগগিরই একটা বড় সমাবেশ করার ব্যাপারে আলোচনা করছি।’
নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটের নজির সারা দুনিয়ার কোথাও নেই উল্লেখ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, দ্বিমত করার অধিকার সবার রয়েছে, তবে সিদ্ধান্ত হলো যা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মিলে নিয়েছে। সে জন্য বিএনপি যখন নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, তখন জামায়াত সেটিতে আপত্তি করেনি। ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা দলের নেতার নোট অব ডিসেন্টের কোনো সম্পর্ক নেই।
গণভোটের খরচের বিষয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘কোনো কোনো মহল বলেন যে গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাঁদের জবাবে আমি বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।’
এখন দেশে গণভোট হলে ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে যাবে বলে মনে করেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবির জিতেছে, আবার গণভোটেও ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে গেলে জাতীয় নির্বাচনে তো এটার প্রভাব পড়বে। ওনারা এটা বুঝে গেছেন। এ জন্যই বিএনপি গণভোটে যেতে চায় না।
বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তাঁর সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন।