কাজের ধারাবাহিকতা থাকলে ৫ বছর পর প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র পাল্টে যাবে: বিধান রঞ্জন রায়
Published: 2nd, November 2025 GMT
শিক্ষা নিয়ে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী পাঁচ বছর পর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চেহারা পাল্টে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়া করে কাজ করা যায় না। আমরা সমস্যা চিহ্নিত করেছি, কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন, তাহলে প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র পাল্টে যাবে।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘মেধা যাচাই পরীক্ষা-২০২৫’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে রোববার দুপুরে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সুনামগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২৯ অক্টোবর এই পরীক্ষা হয়। এতে জেলার ১২টি উপজেলার ১ হাজার ৪৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেয়। রোববার ৫ম শ্রেণির ৫৭ জন, ৪র্থ শ্রেণির ৪৮ জন শিক্ষার্থী, ২০ জন শিক্ষক এবং ২১টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘একসময় যাঁরা শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন করতেন, তাঁদের বলে দেওয়া হতো নম্বর বেশি দেওয়ার জন্য বা এত নম্বরের নিচে দেওয়া যাবে না। যে কারণে জিপিএ-৫ বেশি পেত শিক্ষার্থীরা। পরে দেখা যেত এই সব শিক্ষার্থী ইংরেজি পড়তে পারে না, অঙ্ক জানে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। তাদের ৯৪ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করে।’
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবে জানিয়ে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, বই ছাপা হচ্ছে, গুদামে আসতে শুরু করেছে। এতে নির্বাচনের কোনো প্রভাব পড়বে না। সব শিক্ষার্থী সময়মতো বই পাবে। প্রাথমিকে শিক্ষকের ঘাটতির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে, শিগগির বিজ্ঞাপন দেখবেন। শিক্ষক নিয়োগ হবে উপজেলার ভিত্তিতে। উপজেলায় যেসব খালি পদ আছে, সেগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের শুধু বইয়ের পড়াশোনা করালে চলবে না, তাদের নৈতিক শিক্ষাও দিতে হবে। তাদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে মেধাবী, মানবতাবাদী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক-অভিভাবক সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে মোহাম্মদ সামছুল আহসান, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তোফায়েল আহাম্মেদ, সিলেট প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ অন ষ ঠ ন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জামায়াতের
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বিএনপি যতই উসকানি দিক, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে বিরোধে জড়াতে চায় না। মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক আছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দূর করে স্পষ্ট করা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। সুতরাং আসুন আমরা সব ভুলে আলোচনায় বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন, জুলাই সনদ, গণভোট নিয়ে একধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সবকিছুতে পানি ঢেলে আসুন আমরা আলোচনা করি।’
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘রাজনীতির অনেক খেলা আছে, আমরা খেলতে চাই না। আসুন সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করি।’
বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘আমরা এই আহ্বান এখন মিডিয়ার মাধ্যমে দিচ্ছি। দেখি তারা মিডিয়ায় কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। আগামীকাল সোমবার জামায়াতের দলীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা শিগগিরই একটা বড় সমাবেশ করার ব্যাপারে আলোচনা করছি।’
নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটের নজির সারা দুনিয়ার কোথাও নেই উল্লেখ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, দ্বিমত করার অধিকার সবার রয়েছে, তবে সিদ্ধান্ত হলো যা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মিলে নিয়েছে। সে জন্য বিএনপি যখন নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, তখন জামায়াত সেটিতে আপত্তি করেনি। ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা দলের নেতার নোট অব ডিসেন্টের কোনো সম্পর্ক নেই।
গণভোটের খরচের বিষয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘কোনো কোনো মহল বলেন যে গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাঁদের জবাবে আমি বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।’
এখন দেশে গণভোট হলে ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে যাবে বলে মনে করেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবির জিতেছে, আবার গণভোটেও ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে গেলে জাতীয় নির্বাচনে তো এটার প্রভাব পড়বে। ওনারা এটা বুঝে গেছেন। এ জন্যই বিএনপি গণভোটে যেতে চায় না।
বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তাঁর সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন।