দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান।

এফবিসিসিআই আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রশাসক হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক সদস্য মো.

হাফিজুর রহমানের মেয়াদ গত ১০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। তার পর থেকে এফবিসিসিআইয়ে কোনো প্রশাসক ছিলেন না।

গত ২৭ অক্টোবর অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অফিস আদেশে মন্ত্রণালয় জানায়, সাবেক প্রশাসক হাফিজুর রহমান গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে এক বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের বাণিজ্য সংগঠন আইন অনুযায়ী, সরকার এক বছরের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে। সে জন্য হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে।

অফিস আদেশে বলা হয়, এফবিসিসিআইয়ের নতুন প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্নের মাধ্যমে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবিতে তৎপর হন সদস্যদের একাংশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি পদ থেকে মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেন। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাঁকে ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে নির্বাচিত পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ, চাঁদার হার কমানো এবং মনোনীত পরিচালক নির্বাচন পদ্ধতি ও নির্বাচন বোর্ড গঠন যথাযথ হচ্ছে না, এমন দাবিতে একাধিক ব্যবসায়ী উচ্চ আদালতে রিট মামলা করেন। এমন চারটি রিট মামলার কারণে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়েছে। দুই দফায় নির্বাচন বোর্ড পুনর্গঠন করেও নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই সংগঠনে। সাবেক একাধিক নেতা জানান, সংগঠনটির নির্বাচনপ্রক্রিয়া ঝুলে গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এফব স স আইয় র হ ফ জ র রহম ন ব যবস য় স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জামায়াতের

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বিএনপি যতই উসকানি দিক, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে বিরোধে জড়াতে চায় না। মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক আছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দূর করে স্পষ্ট করা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। সুতরাং আসুন আমরা সব ভুলে আলোচনায় বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন, জুলাই সনদ, গণভোট নিয়ে একধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সবকিছুতে পানি ঢেলে আসুন আমরা আলোচনা করি।’

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘রাজনীতির অনেক খেলা আছে, আমরা খেলতে চাই না। আসুন সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করি।’

বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘আমরা এই আহ্বান এখন মিডিয়ার মাধ্যমে দিচ্ছি। দেখি তারা মিডিয়ায় কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। আগামীকাল সোমবার জামায়াতের দলীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা শিগগিরই একটা বড় সমাবেশ করার ব্যাপারে আলোচনা করছি।’

নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটের নজির সারা দুনিয়ার কোথাও নেই উল্লেখ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, দ্বিমত করার অধিকার সবার রয়েছে, তবে সিদ্ধান্ত হলো যা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মিলে নিয়েছে। সে জন্য বিএনপি যখন নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, তখন জামায়াত সেটিতে আপত্তি করেনি। ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা দলের নেতার নোট অব ডিসেন্টের কোনো সম্পর্ক নেই।

গণভোটের খরচের বিষয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘কোনো কোনো মহল বলেন যে গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাঁদের জবাবে আমি বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।’

এখন দেশে গণভোট হলে ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে যাবে বলে মনে করেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবির জিতেছে, আবার গণভোটেও ৮০ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ ভোটের পক্ষে গেলে জাতীয় নির্বাচনে তো এটার প্রভাব পড়বে। ওনারা এটা বুঝে গেছেন। এ জন্যই বিএনপি গণভোটে যেতে চায় না।

বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তাঁর সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ