পঞ্চগড়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালু করতে তহবিল গঠন, ১০ লাখ টাকা দিল জামায়াত
Published: 2nd, November 2025 GMT
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালকে ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও জনবল, শয্যা ও চিকিৎসার সরঞ্জামে বরাদ্দ না পাওয়ায় চালু করা যাচ্ছিল না। অবশেষে হাসপাতালটি চালু করতে ‘পঞ্চগড় স্বাস্থ্য সহায়তা তহবিল’ নামে একটি তহবিল গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে ব্যাংক হিসাব। সেই তহবিলে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মো.
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে পঞ্চগড়কে জেলা ঘোষণার পর পঞ্চগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল করা হয়। ২০০৫ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়ে আধুনিক সদর হাসপাতালে পরিণত হয়। এর পর থেকেই চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল–সংকট আজও ঘোচেনি। হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। শয্যাসংকট ঘোচানো ও চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় রূপান্তরের জন্য ৯ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জুনে আটতলা পর্যন্ত কাজ করে ভবনটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত বিভাগ। নবম তলায় আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিটের কাজ এবং লিফট সংস্কারের কাজ এখনো চলমান।
এদিকে হাসপাতালের পুরোনো ভবনে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। জেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গত ১৮ অক্টোবর হাসপাতালের নতুন ভবন চালুর বিষয়ে একটি সভা করেন জেলা প্রশাসক। সেখানে জেলা স্বাস্থ্য সহায়তা তহবিল গঠন করে তা পরিচালনার জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। খোলা হয় ব্যাংক হিসাবও। এর পর থেকেই জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিত্তবান ব্যক্তিরা ওই তহবিলে অনুদান জমা দেওয়া শুরু করেন। চলতি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সীমিত পরিসরে হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে সব দলের নেতা ও সচেতন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠন করা স্বাস্থ্য তহবিল প্রথম দিকে হাসপাতালের নতুন ভবন চালু করার উদ্দেশ্যে গঠন করা হলেও এটি স্থায়ীভাবে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্নভাবে কাজে আসবে। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিত্তবানদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সীমিত পরিসরে নতুন ভবনটি চালু করা সম্ভব হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গঠন কর ন র জন তহব ল
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’