জাতিসংঘ আগামী শুক্রবার বিলুপ্ত হয়ে গেলে বিশ্বজুড়ে কী হতে পারে
Published: 12th, November 2025 GMT
এখন থেকে ৮০ বছর আগে অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতিসংঘ। এই বিশ্বসংস্থা এখন দুনিয়াজুড়ে দেশ ও মানুষের জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
বিগত আট দশকে বৈশ্বিক নানা সংকটে বিশ্বকে পথ দেখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জাতিসংঘ। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, আন্তর্জাতিক আইন, কূটনীতি, মানবিক সহায়তা, শান্তি রক্ষায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। সঠিক বা ভুল যা–ই হোক না কেন—বেশির ভাগ মানুষ এটিকে বিশ্বব্যবস্থা বলে মনে করে।
তবে, অনেকে এর ভূমিকাকে এখনো গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও জাতিসংঘ গ্লোবাল সাউথের (উন্নয়নশীল দেশ) প্রয়োজনের তুলনায় পশ্চিমা বিশ্বের এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দেয়। এ জন্য ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে পড়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া জাতিসংঘের সেনা উপস্থিতি সত্ত্বেও ১৯৯০-এর দশকে রুয়ান্ডা ও বসনিয়া-হার্জেগোভিনার গণহত্যা এবং সুদানের দারফুর অঞ্চলে নৃশংস সহিংসতারোধে এই বিশ্বসংস্থা ব্যর্থ হয়েছে।
অনেকেই যুক্তি দেখাবেন, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা বন্ধের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ইসরায়েল সংস্থাটির বৈধতাকে প্রশ্নবদ্ধি করেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জাতিসংঘের ঐতিহ্যগত ভূমিকাকে যুক্তরাষ্ট্র ছিনতাই করেছে।
তাহলে এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কী। রাষ্ট্রগুলো কি নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মোকাবিলা করতে পারত না? সর্বোপরি, জাতিসংঘ বৈশ্বিক সংস্থা হিসেবে প্রথম কোনো কোনো প্রচেষ্টাও নয়। এর আগে ১৯২০ সালে লিগ অফ নেশনস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সংস্থাটি প্রায় টিকে থাকতে পারেনি। তাহলে, কেন আমরা আশা করব, জাতিসংঘ চিরকাল চলবে?
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল–জাজিরা বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করেছে, আগামী শুক্রবার যদি জাতিসংঘ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তবে তাদের মতে বিশ্বে কী ঘটবে।
অভিবাসী ও শরণার্থীদের কী হবে
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিফিউজি স্টাডিজ সেন্টারের গবেষো সহযোগী জেফ ক্রিসপ বলছিলেন, আপনি যদি শুক্রবার জাতিসংঘ বিলুপ্ত করেন, তবে সোমবারের মধ্যে আপনি এটি পুনর্গঠনের একটি উপায় খুঁজবেন।
ক্রিসপ জাতসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমশিনের সাবেক হাইকমিশনার। তিনি বলছিলেন, আজ বিশ্ব যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই আন্তদেশীয়। উদাহরণস্বরূপ শরণার্থীদের কথা ধরুন—বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ১০ কোটি শরণার্থী, বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং অনিয়মিত অভিবাসী রয়েছেন। এটি এমন একটি সমস্যা—যা কোনো একটি রাষ্ট্র সমাধান করতে পারে না। এ জন্য একটি আন্তদেশীয় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ক্রিসপ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই সাহায্য কমানো দেখতে পাচ্ছি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সহায়তা কমানো হচ্ছে। এর ফলে জাতিসংঘ–সমর্থিত ক্যাম্পগুলোয় খাদ্যনিরাপত্তা কমে যাচ্ছে এবং পুষ্টিহীনতা ও সামাজিক উত্তেজনা বেড়ে যাচ্ছে।’
এই গবষেণ সহযোগী বলেন, সহায়তা ফুরিয়ে গেলে আরও বেশি শরণার্থী আশ্রয়শিবির থেকে শহুরে অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। সেখানে তারা কখনো কখনো অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির মাধ্যমে বেঁচে থাকতে পারেন। কিন্তু তাঁদের আগমনে সেই শহুরে অঞ্চলের সম্পদ ও পরিষেবার ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অবশ্য এতে তাদের কোনো দোষে নেই।
আশ্রয়শিবিরে স্বজনদের সঙ্গে অভিবাসী শিশুরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শরণ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে শীত
পঞ্চগড়ে দিন দিন কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ভোরবেলা ও গভীর রাতে হালকা কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে শীতের আগমনী বার্তা পাচ্ছেন সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে, মঙ্গলবার এখানে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থানের কারণে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় পঞ্চগড়ে আগে শীত নামে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এখনই ভোরের দিকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারপাশ। সূর্যের দেখা মিলছে দেরিতে। দুপুরের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকেল গড়াতেই আবারো বাড়ছে শীতের অনুভূতি। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের পোশাকে এসেছে পরিবর্তন। সন্ধ্যা নামলেই অনেকে শীতের পোষাক পরা শুরু করেছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে। নভেম্বরের শেষ দিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এরপর ডিসেম্বর মাসজুড়ে পঞ্চগড় ও আশপাশের এলাকায় একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
ঢাকা/নাঈম/এস