তিন মাসে ৩৮ কোটি টাকা মুনাফা এনভয় টেক্সটাইলের
Published: 12th, November 2025 GMT
বস্ত্র খাতের কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইলের মুনাফা ৫২ শতাংশ বা ১৩ কোটি টাকা বেড়েছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি মুনাফা করেছে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৫ কোটি টাকা।
গত সোমবার অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার মুনাফার এই তথ্য শেয়ারধারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি। তাতে দেখা যায়, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে এনভয় টেক্সটাইলের ব্যবসা বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এনভয় টেক্সটাইল ৪৭৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ব্যবসা করেছিল ৪৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে পৌনে ৮ শতাংশ বা ৩৪ কোটি টাকার। ৮ শতাংশ ব্যবসা বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৫২ শতাংশ। ব্যবসা যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে মুনাফা; কারণ, উৎপাদন খরচ ও সুদবাবদ ব্যয় উভয়ই গত বছরের চেয়ে কমেছে।
কয়েক বছর ধরে আমরা পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, গবেষণা ও উদ্ভাবনে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি। যার ফলে ক্রেতাদের সামনে নিত্যনতুন ডিজাইনের পণ্য তুলে ধরতে পারছি। যার সুফল ব্যবসায় পাওয়া যাচ্ছেতানভীর আহমেদ, এমডি, এনভয় টেক্সটাইলআর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছর কোম্পানিটির ৪৪০ কোটি টাকার ব্যবসার বিপরীতে উৎপাদন খরচ ছিল ৩৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ব্যবসার সোয়া ৮২ শতাংশই ছিল উৎপাদন খরচ। আর চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটির ৪৭৪ কোটি টাকার ব্যবসার বিপরীতে উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ৩৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যবসার বিপরীতে উৎপাদন খরচ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কমে ৮০ শতাংশে নেমেছে। এ ছাড়া গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটির সুদবাবদ খরচ হয়েছিল ৩৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের একই সময়ে তা কমে নেমে এসেছে ৩৫ কোটি টাকায়। তাতে মুনাফাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে এনভয় টেক্সটাইল মুনাফা করেছে ১৪১ কোটি টাকা। তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা ৮১ কোটি টাকা বেড়েছে। মুনাফা বৃদ্ধির এই ধারা চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও অব্যাহত রয়েছে।
কোম্পানিটির ধারাবাহিক মুনাফা বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে এনভয় টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, গবেষণা ও উদ্ভাবনে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি। যার ফলে ক্রেতাদের সামনে নিত্যনতুন ডিজাইনের পণ্য তুলে ধরতে পারছি। এ ছাড়া সোর্সিং ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায়ও আমরা অনেক বেশি বৈচিত্র্য এনেছি। যার সুফল ব্যবসায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যবসা বৃদ্ধির পাশাপাশি মুনাফাও বাড়ছে। এই ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই স প ট ম বর প র ন ত ক বছর র একই সময় গত বছর র র ব যবস ব যবস র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশ থেকে ১৯৬ প্রাণী কিনতে চায় জাতীয় চিড়িয়াখানা, কী কী থাকছে
ঢাকার মিরপুরের বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ পাঁচ অর্থবছরে বিদেশ থেকে ৩৫ প্রজাতির ১৯৬টি প্রাণী কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে।
সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনাটি অনুমোদন দিয়েছে। চিড়িয়াখানাটিতে থাকা নিঃসঙ্গ প্রাণীদের সঙ্গী দেওয়া, আন্তপ্রজনন ঠেকানো, আয়ুষ্কাল অতিক্রম করা প্রাণী প্রতিস্থাপন, নতুন প্রজাতি সংযোজন, প্রদর্শনীর আকর্ষণ বাড়ানোর মতো বিষয় বিবেচনায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে প্রাণী কেনার মহাপরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছে। চলতি বছর যেসব প্রাণী কেনা হবে, তার জন্য দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করা হবে।’
আগামী পাঁচ বছরে প্রাণী কেনার মহাপরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছে। চলতি বছর যেসব প্রাণী কেনা হবে, তার জন্য দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করা হবে।মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার, পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানাজাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, গত তিন অর্থবছরে এলসি (আমদানির ঋণপত্র) সংকট, প্রশাসনিক জটিলতার মতো কারণে কোনো প্রাণী কেনা সম্ভব হয়নি। দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এখন এলসি খুলে আবার প্রাণী সংগ্রহের পথ সৃষ্টি হয়েছে।
যে ৩৫ প্রজাতির পশুপাখি কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো—জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, আফ্রিকান সিংহ, উল্লুক, হনুমান লেঙ্গুর, কুলু বানর, সারস ক্রেন, লোনাপানির কুমির, কমন ইল্যান্ড, ওয়াটারবাক, কেশোয়ারি, আলেকজান্দ্রিন প্যারাকিট, টারকুইজ প্যারাকিট, এশীয় কালো ভালুক, গিনি বেবুন, হামাদ্রিয়াস বেবুন, সালফার ক্রেস্টেড কাকাতুয়া, মিঠাপানির কুমির, রেড ক্যাঙারু, রেড অ্যান্ড গ্রিন ম্যাকাও, হলুদ টিয়া, ধূসর ককাটেইল, লাভ বার্ড লুটিনো ফিশার, গ্রেটার কুডু, অরিক্স, ডোরাকাটা হায়েনা, হায়েনা চিত্রা, রিং-টেইলড লেমুর, গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো, কালো গলা বক, অলিভ বেবুন, জিরাফ, চিতাবাঘ, আফ্রিকান গন্ডার ও ওরাংওটাং।
চলতি বছর কেনা হবে ১৪ প্রজাতির প্রাণীপরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে ১৪ প্রজাতির ৭৮টি প্রাণী কিনতে চায় জাতীয় চিড়িয়াখানা।
প্রজাতিগুলো হলো—জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, আফ্রিকান সিংহ, উল্লুক, হনুমান লেঙ্গুর, কুলু বানর, সারস ক্রেন, লোনাপানির কুমির, কমন ইল্যান্ড, ওয়াটারবাক, কেশোয়ারি, আলেকজান্দ্রিন প্যারাকিট, টারকুইজ প্যারাকিট ও এশীয় কালো ভালুক।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাণীগুলো কিনতে দরকার সাত কোটি টাকা। বরাদ্দ আছে দুই কোটি। এখন এই অর্থ দিয়ে কিছু প্রাণী কেনার জন্য শিগগির দরপত্র প্রকাশ করা হবে। বাকি প্রাণীগুলো কেনার জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ পেলে পরবর্তী দরপত্র প্রকাশ করা হবে। এ অর্থবছরে যেসব প্রাণী কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর জন্য অবকাঠামো আছে। অল্পকিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন হবে।
জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, গত তিন অর্থবছরে এলসি (আমদানির ঋণপত্র) সংকট, প্রশাসনিক জটিলতার মতো কারণে কোনো প্রাণী কেনা সম্ভব হয়নি। দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এখন এলসি খুলে আবার প্রাণী সংগ্রহের পথ সৃষ্টি হয়েছে।কেন প্রাণী কেনার পরিকল্পনাবর্তমানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় জেব্রা আছে পাঁচটি। একটি পুরুষ, চারটি স্ত্রী। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, এই জেব্রাগুলোর পূর্বপুরুষ একই। তাই আন্তপ্রজনন ঠেকাতে বাইরে থেকে তিনটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী জেব্রা আনতে হবে।
স্ত্রী ওয়াইল্ডবিস্ট আছে দুটি। কোনো পুরুষ ওয়াইল্ডবিস্ট নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, সঙ্গী দেওয়ার জন্য তারা তিনটি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী ওয়াইল্ডবিস্ট কিনতে চায়।
একটি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী আফ্রিকান সিংহ আছে চিড়িয়াখানায়। প্রজননের জন্য আরও তিনটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী আফ্রিকান সিংহ কেনার পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের।
চিড়িয়াখানায় স্ত্রী উল্লুক আছে একটি। সঙ্গী দেওয়াসহ বংশবৃদ্ধির জন্য চারটি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী উল্লুক কিনতে চায় কর্তৃপক্ষ।
তিনটি পুরুষ হনুমান লেঙ্গুর আছে চিড়িয়াখানায়। তাদের কোনো স্ত্রী সঙ্গী নেই। সঙ্গী দেওয়ার জন্য এখন তিনটি স্ত্রী হনুমান লেঙ্গুর কেনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
চিড়িয়াখানায় একটি পুরুষ কুলু বানর আছে। কর্তৃপক্ষ এখন তিনটি কুলু বানর (একটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী) কিনতে চায়।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় থাকা স্ত্রী কমন ইল্যান্ডটি বয়স্ক হয়ে গেছে