গাজীপুর বাসন থানাধীন পেয়ারা বাগান এলাকায় ও  কালিয়াকৈর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। 

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। 

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর পেয়ারা বাগান এলাকায় ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে মঙ্গলবার মধ্য রাতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে বাসের মধ্যে কোমবি মানুষ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি৷ পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। আগুনে গাড়ির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। 

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, “মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে গভীর রাতে আগুন দেওয়ার খবর আসে। পরে আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে৷ ”

এছাড়া, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালিয়াকৈর নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। 

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার জ্যোতি ফিলিং স্টেশন এর সামনে রাস্তার পাশে একটি বাস দাঁড়িয়েছিল। এ সময়ে একজন মিস্ত্রি বাসের নিচে শুয়ে মেরামতের কাজ করতেছিল। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে দুইজন যুবক বাসের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। এক পর্যায়ে তারা বাসে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এতে বাসের ক্ষতি হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।” 

 

ঢাকা/রেজাউল/ইভা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ব ত তর আগ ন দ আগ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

লেনদেন স্বাভাবিক করার চেষ্টায় প্রশাসকেরা

একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রশাসকেরা। গ্রাহকদের সঙ্গে সভা করে তাঁরা আমানত ফেরতের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন। পাশাপাশি গ্রাহকেরা যাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা চাহিদামতো উত্তোলন করতে পারেন, সে উদ্যোগও নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া প্রবাসীদের পাঠানো আয় যাতে তাঁদের সুবিধাভোগীরা সময়মতো পান, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে ব্যাংক পাঁচটিকে।

গত বুধবার ব্যাংক পাঁচটিতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর দুই দফায় প্রশাসক দলের সঙ্গে অনলাইনে আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সময় তিনি বেশ কিছু নির্দেশনা দেন এবং ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। ব্যাংকগুলো গভর্নরকে জানায়, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি শাখায় টাকা তোলার অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া অন্যত্র স্বাভাবিক চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে দুটি ব্যাংকের প্রশাসক দল গ্রাহকদের সঙ্গেও আলাদা সভা করেছে। এই দুটি ব্যাংকের প্রশাসকেরা ঢাকার বাইরে গিয়েও গ্রাহকদের সঙ্গে সভা করার পরিকল্পনা করছেন। এসব বৈঠকে প্রশাসকেরা গ্রাহকদের আমানত নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানান। প্রশাসকেরা গ্রাহকদের বলেন, সরকার এখন ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব নিয়েছে। তাই আমানত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রশাসক দলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনোভাবে যেন ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা আর খারাপ না হয়। এ জন্য শুরু থেকেই পুরো ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি বুঝে নিতে বলা হয়। ব্যাংকগুলোতে দৈনিক ভিত্তিতে কত টাকা আদায় বা জমা হচ্ছে এবং কত টাকা উত্তোলিত হচ্ছে, সে হিসাব শুরু করেছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোকে কীভাবে একীভূত করা যায়, সে বিষয়েও কাজ শুরু করেছেন প্রশাসকেরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ব্যাংকগুলোর প্রধান কাজ হবে ব্যাংকের প্রযুক্তিব্যবস্থা একীভূত করা। এতে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, পাঁচ ব্যাংক তিন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এ ছাড়া ব্যাংকভেদে ভিন্ন ভিন্ন সেবা পণ্যও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে, নাকি এখনকার সফটওয়্যারের কোনোটি বেছে নেওয়া হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর জনবল ও শাখা ব্যবস্থাপনা করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ। আপাতত সব জনবল রেখে শাখাগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে—এমন পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া আপাতত আমানত বিমা তহবিল থেকে গ্রাহকদের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার চিন্তা রয়েছে। চলতি মাসেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। ওই প্রজ্ঞাপনে গ্রাহকেরা কখন থেকে টাকা তুলতে পারবেন, তা সুনির্দিষ্ট করে জানানো হবে।

এক্সিম ব্যাংকের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শওকাতুল আলম। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সালাহ উদ্দিন। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান। ইউনিয়ন ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম। তাঁদের সঙ্গে আরও চারজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে পাঁচ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট ২৫ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ