জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোর্স সংযোজন: ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’কোর্স গেল বদলে
Published: 12th, November 2025 GMT
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রফেশনাল স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে নতুন একটি আবশ্যিক বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। কোর্সটির নাম ‘বাংলাদেশের ইতিহাস: ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয়’। ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’-এর পরিবর্তে এটি পড়ানো হবে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে কোর্সটি চালু করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনমানবিক বিভাগ থেকে পড়েও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, শাহীন আক্তারের গল্প যেন অনুপ্রেরণার ১১ নভেম্বর ২০২৫জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম বর্ষ প্রফেশনাল স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের সব বিষয়: বিএসসি (অনার্স) ইন এএমটি, এফডিটি, কেএমটি, টিএসটি, ইসিই, সিএসই, মেরিন ফিশারিস, মেরিন নটিক্যাল, বিবিএ (অনার্স)-প্রফেশনাল, বিবিএ (অনার্স) ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, বিএ (অনার্স) ইন ড্রামা অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, বিএফএ (অনার্স), বি-মিউজিক (অনার্স) ও বিএড (অনার্স) প্রোগ্রামে নতুন কোর্সটির কোড নির্ধারণ করা হয়েছে ২১৯৯০১।
৬ নভেম্বর প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা বিষয়ের শিক্ষকেরাই নতুন কোর্সটির পাঠদান করবেন।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতি বদলে গেল, প্রজ্ঞাপন জারি১০ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন র স
এছাড়াও পড়ুন:
জলবায়ু বিপর্যয়ে এক দশকে ২৫ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত
জলবায়ু সংকট নিরসনে ব্রাজিলের বেলেম শহরে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। আজ সোমবার এ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে জলবায়ুর সংকটের ভয়াবহতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তাতে বলা হয়েছে, জলবায়ু সংকটের জেরে গত ১ দশকে ২৫ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ব্রাজিলে এবারের জলবায়ু সম্মেলন চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনের দায়িত্বে রয়েছেন ব্রাজিলের কূটনীতিক আন্দ্রে কোরেরা দো লাগো। সম্মেলন ঘিরে নানা আশাবাদ থাকলেও শুরুর দিনে শঙ্কার একটি কথা শুনিয়েছেন তিনি। কোরেরা বলেছেন, জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোই এই সংকট নিরসনের লড়াইয়ে আগ্রহ হারিয়েছে।
জলবায়ু সংকটের কারণে মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়া নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ বছর ২৫ কোটি হিসাবে প্রতিদিন বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের ঘরবাড়ি ত্যাগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে কপ৩০ প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।
‘নো স্কেপ-২: দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড’ বা ‘পালানোর পথ নেই-২: আগামীর দিশা’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যা, ঝড়, খরা ও তীব্র তাপমাত্রার মতো আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা ও সংঘাত বাড়ছে। পাশাপাশি ধীরে ধীরে আঘাত হানা বিভিন্ন দুর্যোগ, যেমন বন উজাড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, বাস্তুসংস্থান ধ্বংস, খাবার ও পানির নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে।
সংঘাত ও জলবায়ুর কারণে মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে—এমন দেশের সংখ্যা ২০০৯ সাল থেকে তিন গুণ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। এরপরও দুর্দশাগ্রস্ত ও সংঘাতে জর্জর যেসব দেশে শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে, ওই দেশগুলো প্রয়োজনের চার ভাগের এক ভাগ জলবায়ু সহায়তা পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা না রেখেও বাস্তুচ্যুতদের অনেক সময় দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে।
দেশে দেশে দুর্যোগ
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে শরণার্থী ও অন্যান্য বাস্তুচ্যুত মানুষের চার ভাগের তিন ভাগ এমন সব দেশে বাস করছে, যেগুলো উচ্চ বা চরম জলবায়ুজনিত বিপর্যয়ে আক্রান্ত। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ইউএনএইচসিআর যতবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল, তার তিন ভাগের এক ভাগের কারণ ছিল বন্যা, খরা, দাবানলসহ অন্যান্য চরম আবহাওয়া-সংক্রান্ত ঘটনা।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের মে মাসে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের রিও গ্রানদে দো সুল রাজ্যে ভয়াবহ বন্যার কথা বলা হয়েছে। ওই বন্যায় ১৮১ জনের মৃত্যু হয়। বাস্তুচ্যুত হয় ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ৪৩ হাজার শরণার্থী ছিল। এর আগের বছরে এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আঘাত হানে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় মোচা।
আফ্রিকার দেশ চাদে ১৪ লাখের বেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী বসবাস করে। শুধু ২০২৪ সালেই বন্যার কারণে দেশটিতে ১৩ লাখের বেশি মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ও আশ্রয়শিবির ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সুদানের শরণার্থীরা প্রতিদিনের ১০ লিটারের কম পানি পাচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সব মিলিয়ে আফ্রিকার ৭৫ শতাংশ ভূখণ্ডের অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
১. গত ১০ বছরে প্রতিদিন বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।২. সংঘাত ও জলবায়ুর কারণে মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে—এমন দেশের সংখ্যা ২০০৯ সাল থেকে তিন গুণ হয়েছে।
৩. ২০৪০ সাল নাগাদ চরম জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে পড়া দেশের সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৬৫ হতে পারে।
যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ২০৪০ সাল নাগাদ চরম জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে পড়া দেশের সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৬৫–তে পৌঁছাতে পারে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ গাম্বিয়া, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সেনেগাল ও মালির ১৫টি শরণার্থীশিবির বছরে প্রায় ২০০ দিন বিপর্যয়কর তাপমাত্রার মুখে পড়তে পারে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘চরম জলবায়ুর প্রভাব থেকে শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত পরিবারকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে তহবিলে কাটছাঁট। আমরা যদি স্থিতিশীলতা চাই, তাহলে মানুষ যেখানে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে বিনিয়োগ করতে হবে। বাস্তুচ্যুত হওয়া থামাতে জলবায়ু তহবিল সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে।’
পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে এগিয়ে চীন
আজ শুরু হওয়া কপ৩০ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ১৯৪ দেশের প্রতিনিধিরা। প্যারিস চুক্তিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে যে ঐকমত্য হয়েছিল, সে বিষয়ে আলোচনা করবেন তাঁরা। একই সঙ্গে কীভাবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা যায় এবং দরিদ্র দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়েও আলোচনা হবে।
তবে এসব লক্ষ্য পূরণের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে ব্রাজিলের কূটনীতিক আন্দ্রে কোরেরা দো লাগো বলেন, জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো এই সংকট নিরসনের লড়াইয়ে আগ্রহ হারিয়েছে। তবে ভালো করছে চীন। দেশটি সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করলেও পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জ্বালানির সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী। অন্য দেশগুলোকে এটি অনুসরণ করতে হবে।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে কাসিম উদ্দিনের। সম্প্রতি নদের এই চরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ২৯ অক্টোবর কুড়িগ্রামে