চতুর্থ স্টেজের ক্যানসার ধরা পড়ার আট বছর পরও লড়ে যাচ্ছেন মঞ্জুশ্রী
Published: 12th, November 2025 GMT
২০১৭ সাল। বরিশালের মঞ্জুশ্রী কুন্তলা দত্ত দিব্যি ঘরকন্না করছেন। জানুয়ারি মাসে হঠাৎ কাশি হলো ৪৮ বছর বয়সী এই নারীর। খুব স্বাভাবিকভাবেই ওই মৌসুমে এমন উপসর্গকে সাধারণ বিষয় ধরে নিয়েছিলেন স্থানীয় চিকিৎসক।
তাঁর নির্দেশনামাফিক কিছু ওষুধ সেবনের পর সেরেও উঠলেন মঞ্জুশ্রী। পরে আরও দুয়েকবার কাশি হলো। সঙ্গে বুকে ব্যথা। বুকটা একটু ভারও মনে হতো তখন। আবারও সেখানকার চিকিৎসায় সেরে উঠলেন।
বিপত্তি বাধল নভেম্বর মাসে, যখন কাশির সঙ্গে রক্ত উঠে এল। মঞ্জুশ্রীর একমাত্র সন্তান তিলোত্তমা দত্ত তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ঢাকায় নিয়ে আসা হলো মঞ্জুশ্রীকে। ভর্তি করা হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বুকের সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ল টিউমার। ব্রঙ্কোস্কপির মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হলো। রিপোর্টে ধরা পড়ল ক্যানসার।
আরও পড়ুননিজের হৃৎস্পন্দন টের পাওয়া কি স্বাভাবিক১১ নভেম্বর ২০২৫চতুর্থ স্টেজে ক্যানসারক্যানসার ধরা পড়ার পর মাকে নিয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে এলেন তিলোত্তমা। সেখানকার ক্লিনিক্যাল অনকোলজি অ্যান্ড রেডিওথেরাপি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা.
মঞ্জুশ্রীর বুকে তখন পানি জমে গেছে। সেই পানি বের করার ব্যবস্থা করা হলো। ফুসফুসের পর্দার দুটি স্তরকে আটকে দেওয়া হলো বিশেষ প্রক্রিয়ায়। টিউমারের মলিকুলার স্টাডির (আণবিক পরীক্ষা) জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল ভারতের বেঙ্গালুরুতে। রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হলো টার্গেটেড থেরাপি।
চিকিৎসা হলো যেভাবেসহজভাবে বলতে গেলে টার্গেটেড থেরাপি হলো এমন চিকিৎসাপদ্ধতি, যা কেবল নির্দিষ্ট কোষের ওপরেই কাজ করে। অর্থাৎ দেহের বাকি কোষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না এই চিকিৎসায়।
তবে এই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ খুঁজে পেতে বেশ ভুগতে হয়েছে মঞ্জুশ্রীর পরিবারকে। ২০১৯ সাল থেকে এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর মা হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে মঞ্জুশ্রীকে নানাভাবে সহায়তা করতে শুরু করে।
মাঝে ২০১৮ সালে মঞ্জুশ্রীর পেট সিটি স্ক্যানে ধরা পড়েছিল, ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে মেরুদণ্ডের তিনটি হাড়ে। তাই দিতে হলো রেডিওথেরাপিও। অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেনের পরামর্শেই মাঝে মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মঞ্জুশ্রীকে।
তবে স্কয়ারেই চিকিৎসা চালিয়ে যায় মঞ্জুশ্রীর পরিবার। অবশ্য ভর্তি থাকতে হয়নি একবারও। ২০১৯ সালের বোন স্ক্যান রিপোর্টে আর কোনো অস্বাভাবিকতাও ছিল না।
আরও পড়ুনস্তন ক্যানসার নিয়ে লজ্জা-শঙ্কা-ভয় দূর করতে হবে১১ অক্টোবর ২০২৩সুস্থ জীবনে মঞ্জুশ্রীধীরে ধীরে শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন মঞ্জুশ্রী। তবে টার্গেটেড থেরাপি চালিয়ে যেতে হয়েছে সব সময়ই। আজীবনই চালিয়ে যেতে হবে এই চিকিৎসা। ঠিকঠাক চিকিৎসা নেওয়ায় মারাত্মক পরিস্থিতি থেকেও মঞ্জুশ্রী ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে।
মঞ্জুশ্রীর মেয়ে তিলোত্তমা বলছিলেন, ‘অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন স্যার এমনভাবে চিকিৎসার পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে নির্ধারণ করেছেন, যাতে আমার মায়ের ভয়াবহ শারীরিক কষ্টের উপশম হয়। চতুর্থ স্টেজ ক্যানসার থেকে সুস্থ জীবনে ফেরাটা সত্যিই বিশাল ব্যাপার। এখনো তাঁর তত্ত্বাবধানেই আছেন মা।’
মায়ের লড়াইয়ের সঙ্গী তো তিলোত্তমা নিজেই। মেডিকেল কলেজের পড়ালেখা আর পরীক্ষার চাপ সামলে মাকে নিয়ে তিলোত্তমা লড়েছেন প্রতিটা দিন। ২০২২ সালে চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর ইন্টার্নশিপ শেষ করে প্রবেশ করেন পেশাগত জীবনে।
নতুন লড়াইয়ে২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভালোই চলছিল সব। তবে এরপর মঞ্জুশ্রীর আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। পরে পরীক্ষা–নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, মস্তিষ্কে ছড়িয়েছে টিউমার। আবারও রেডিওথেরাপি দেওয়া হয় তাঁকে।
আর টার্গেটেড থেরাপি তো চলছেই। আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছেন মঞ্জুশ্রী। বাসার ভেতর দিব্যি হাঁটাচলা করেন। আচরণে এখন কোনো অস্বাভাবিকতা নেই।
তিলোত্তমার জীবনে আজও আছেন তাঁর পরম মমতাময়ী মা। মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ার সময় থেকে স্বাভাবিকভাবেই জীবনের বহু রঙিন মুহূর্ত আর দশজন মানুষের মতো করে উপভোগ করার সুযোগ হয়নি তিলোত্তমার।
মায়ের জন্য জীবনের সব চ্যালেঞ্জ হাসিমুখে সামলাচ্ছেন এই চিকিৎসক। মায়ের আদরের কোমলতম স্পর্শটুকু থাকুক তাঁর সঙ্গে, কেবল এটুকুই তাঁর প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন‘আগে ওনার খোঁজ পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতাম না’২২ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নিয়োগ, পদ ১০১
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) ১০১টি শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রাজস্ব খাতভুক্ত ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে এসব নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনপত্র পূরণ ও পরীক্ষার ফি জমাদান শুরু আজ সোমবার (১০ নভেম্বর ২০২৫) থেকে।
পদের নাম ও বিবরণ
১. সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ০৭
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯–এর তফসিল-২ ও ৩ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-১৪) ১০,২০০–২৪,৬৮০ টাকা।
২. হাউজ কিপার
পদসংখ্যা: ০৫
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯–এর তফসিল-২ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-১৪) ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা।
৩. এভি অপারেটর
পদসংখ্যা: ০২
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে বিজ্ঞান শাখায় অন্যূন দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএতে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; অডিও ভিজ্যুয়াল ইকুইপমেন্ট পরিচালনায় অন্যূন ৩ বছরের বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা; কম্পিউটার পরিচালনায় প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-২ ও ৪ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-১৫) ৯,৭০০-২৩,৪৯০ টাকা।
৪. অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ০৫
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে অন্যূন দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএতে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-২ ও ৪ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-১৬) ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
৫. নিরাপত্তা প্রহরী
পদসংখ্যা: ৪০
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; শারীরিকভাবে কর্মক্ষম হতে হবে এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-৫ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-২০) ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
৬. ওয়ার্ড বয়
পদসংখ্যা: ১৮
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-৫ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-২০) ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
৭. অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ০৮
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-৫ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-২০) ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
৮. বাবুর্চি/সহকারী বাবুর্চি
পদসংখ্যা: ১৩
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ অথবা কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-৫ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-২০) ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
৯. পরিচ্ছন্নতাকর্মী
পদসংখ্যা: ০৩
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ অথবা কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; শারীরিকভাবে কর্মক্ষম হতে হবে; এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সংযুক্ত অধিদপ্তর/পরিদপ্তর এবং দপ্তরের কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯–এর তফসিল-৫ অনুযায়ী গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
গ্রেড ও বেতন স্কেল: (গ্রেড-২০) ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা।
বয়সসীমা
১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮-৩২ বছর।
আবেদনের নিয়ম
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।
আবেদন ফি
১ থেকে ৪ নম্বর পদের জন্য ১০০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ১২ টাকাসহ মোট ১১২ টাকা;
৫ থেকে ৯ নম্বর পদের জন্য ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা।
অনগ্রসর শ্রেণির (ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ) প্রার্থীরা আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা।
আবেদনের সময়সীমা
আবেদনপত্র পূরণ ও পরীক্ষার ফি জমাদান শুরুর তারিখ ও সময়: ১০ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা।
আবেদনপত্র পূরণের শেষ তারিখ ও সময়: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, বিকেল ৫টা।