যুক্তরাজ্যে বড়রাও কিনছেন খেলনা, বাড়ছে ক্রিসমাসের বিক্রি
Published: 12th, November 2025 GMT
খেলনা শিশুদের প্রিয় জিনিস—এটাই মানুষ চিরকাল জেনে এসেছে। কিন্তু সবকিছু এক জায়গায় থেমে থাকে না। মানুষের রুচি ও পছন্দের পরিবর্তন হয়। তার অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এখন ১২ বছরের বেশি ও এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরাও পুতুল কিনছেন।
এবার ক্রিসমাসের আগে যুক্তরোজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা যেসব জিনিস কিনছেন, তার তালিকা দেখে অনেকেই অবাক হতে পারেন। কেননা, এই তালিকায় খেলনাও আছে। গান গাওয়া পুতুল উইকেড ২ ডলস, জাপানি কমিক উপন্যাস ‘মাঙ্গা’র অনুকরণে তৈরি লেগো, পোকেমন গেম ও ছোট ফ্রিজ সেট—কী নেই পছন্দের খেলনার তালিকায়। দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে, এবার বড়দিনের উৎসবে শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক—সবার পছন্দের তালিকায় আছে এসব খেলনা।
সংবাদে প্রাপ্তবয়স্ক ক্রেতাদের বোঝানোর জন্য ‘কিডঅ্যাডাল্ট’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়েছে। তথ্য–উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, বড়দিনের আগে যুক্তরাজ্যের বাজারে যত অর্থের খেলনা বিক্রি হচ্ছে, তার প্রতি তিন পাউন্ডের মধ্যে এক পাউন্ড খরচ করছেন এই কিডঅ্যাডাল্টারা। ১২ বছরের বেশি বয়সী এই ক্রেতারা লেগোস থেকে শুরু করে সংগ্রহে রাখার মতো বিভিন্ন চরিত্রের ছোট ছোট আকৃতির পুতুল কিনছেন।
তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহকারী কোম্পানি সারকানার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় অর্ধেক (৪৩%) নিজেদের জন্য বা অন্য কোনো প্রাপ্তবয়স্কের জন্য খেলনা কিনেছেন। জেন–জিদের (১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী ক্রেতা) বেলায় এই হার স্রেফ দ্বিগুণ। এই প্রজন্মের ৭৬ শতাংশ পুতুল কিনেছেন।
ফলে খেলনা বিক্রেতা ও উৎপাদকদের মনে এখন আনন্দ। কয়েক বছর ব্যবসায় মার খাওয়ার পর এবার তাঁদের মধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। একদম হালনাগাদ তথ্য না থাকলেও দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শিশুদের খেলনা বিক্রি বেড়েছে ৬ শতাংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এতটা প্রবৃদ্ধি আর হয়নি। ক্রিসমাসের আগে যে বিক্রি আরও অনেকটা বাড়বে, সে কথা বলাই বাহুল্য।
সারকানার যুক্তরাজ্য বিভাগের খেলনা পরিচালক মেলিসা সাইমন্ডস বলেন, এটা দ্বিমুখী সাফল্যের গল্প। একদিকে শিশুরা আবার খেলাধুলার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেয়েছে, অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্করা নিজের যত্ন, স্মৃতিকাতরতা ও পুরোনো ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পুতুলের দিকে ঝুঁকেছেন। এই দুইয়ে মিলে বাজার এখন প্রাণবন্ত।
সাম্প্রতিক এই বিক্রির ধারা দেখে উপহার বিক্রেতারা ক্রিসমাস মৌসুম নিয়ে বেশ আশাবাদী। তবে কিছুটা আশঙ্কাও আছে। শরৎকালীন বাজেটে কর বাড়লে মানুষ খরচ কমিয়ে দিতে পারে—এ শঙ্কা কিছুটা হলেও আছে।
সাইমন্ডসের মতে, খেলনার বাজার একটু আলাদা। সাধারণ অর্থনৈতিক প্রবণতার সঙ্গে খেলনা মেলানো যায় না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খেলনা ‘আনন্দের অর্থনীতির’ অংশ। আনন্দের জন্য মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে।
সাইমন্ডস আরও বলেন, খেলনা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। গত ডিসেম্বরে খেলনার গড় বিক্রয়মূল্য ছিল ১৩ পাউন্ড ৪৩ পেন্স। যদিও একসময় ১০ থেকে ২০ পাউন্ডের খেলনাই বেশি বিক্রি হতো—বিক্রি হওয়া এক–তৃতীয়াংশ খেলনার দাম ছিল এই সীমার মধ্যে।
যুক্তরাজ্যের টয় রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ড্রিমটয়স নির্বাচন প্যানেলের চেয়ারম্যান পল রিডার বলেন, ২০২৫ সাল এই খাতের জন্য ভালো যাচ্ছে। বাজার প্রকৃত অর্থেই ইতিবাচক। তাঁর আশাবাদ, এই গতিশীলতা ক্রিসমাস পর্যন্ত চলবে।
পল রিডার আরও বলেন, বাজেটের পর মানুষের হাতে খরচ করার মতো অর্থ কমে যাবে—এমন ধারণা বেশ চাউর হয়ে গেছে। তবে বিপণনে তাঁরা কমতি রাখবেন না। গ্রাহকেরা কোন ধরনের পুতুল পছন্দ করতে পারেন, ক্রিসমাসের আগে তার তালিকাও করে রাখা হচ্ছে।
মানুষ ক্রিসমাসে কেনাকাটার পরিকল্পনা শুরু করেছে। তবে মানুষের পকেটে বাজেটের কী প্রভাব পড়বে, সেটা এখনই বলা যাবে না বলে মনে করেন রিডার। তিনি আরও বলেন, ক্রিসমাসের জাদু সব সময়ই থাকবে। মা–বাবা থেকে শুরু করে দাদা-দাদি—সবাই চেষ্টা করেন, ক্রিসমাসের আনন্দে যেন কমতি না থাকে।
কোম্পানিগুলোও খেলনার ঝাঁপি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এবারের ক্রিসমাসের জন্য স্বপ্নের খেলনার তালিকা করেছে টয় রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেই তালিকায় আছে ড্রেস টু ইমপ্রেস মিস্টেরি মডেল ডলস (১২.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র প তবয়স ক য ক তর জ য র জন য আনন দ পছন দ
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাজ্যে বড়রাও কিনছেন খেলনা, বাড়ছে ক্রিসমাসের বিক্রি
খেলনা শিশুদের প্রিয় জিনিস—এটাই মানুষ চিরকাল জেনে এসেছে। কিন্তু সবকিছু এক জায়গায় থেমে থাকে না। মানুষের রুচি ও পছন্দের পরিবর্তন হয়। তার অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এখন ১২ বছরের বেশি ও এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরাও পুতুল কিনছেন।
এবার ক্রিসমাসের আগে যুক্তরোজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা যেসব জিনিস কিনছেন, তার তালিকা দেখে অনেকেই অবাক হতে পারেন। কেননা, এই তালিকায় খেলনাও আছে। গান গাওয়া পুতুল উইকেড ২ ডলস, জাপানি কমিক উপন্যাস ‘মাঙ্গা’র অনুকরণে তৈরি লেগো, পোকেমন গেম ও ছোট ফ্রিজ সেট—কী নেই পছন্দের খেলনার তালিকায়। দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে, এবার বড়দিনের উৎসবে শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক—সবার পছন্দের তালিকায় আছে এসব খেলনা।
সংবাদে প্রাপ্তবয়স্ক ক্রেতাদের বোঝানোর জন্য ‘কিডঅ্যাডাল্ট’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়েছে। তথ্য–উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, বড়দিনের আগে যুক্তরাজ্যের বাজারে যত অর্থের খেলনা বিক্রি হচ্ছে, তার প্রতি তিন পাউন্ডের মধ্যে এক পাউন্ড খরচ করছেন এই কিডঅ্যাডাল্টারা। ১২ বছরের বেশি বয়সী এই ক্রেতারা লেগোস থেকে শুরু করে সংগ্রহে রাখার মতো বিভিন্ন চরিত্রের ছোট ছোট আকৃতির পুতুল কিনছেন।
তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহকারী কোম্পানি সারকানার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় অর্ধেক (৪৩%) নিজেদের জন্য বা অন্য কোনো প্রাপ্তবয়স্কের জন্য খেলনা কিনেছেন। জেন–জিদের (১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী ক্রেতা) বেলায় এই হার স্রেফ দ্বিগুণ। এই প্রজন্মের ৭৬ শতাংশ পুতুল কিনেছেন।
ফলে খেলনা বিক্রেতা ও উৎপাদকদের মনে এখন আনন্দ। কয়েক বছর ব্যবসায় মার খাওয়ার পর এবার তাঁদের মধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। একদম হালনাগাদ তথ্য না থাকলেও দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শিশুদের খেলনা বিক্রি বেড়েছে ৬ শতাংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এতটা প্রবৃদ্ধি আর হয়নি। ক্রিসমাসের আগে যে বিক্রি আরও অনেকটা বাড়বে, সে কথা বলাই বাহুল্য।
সারকানার যুক্তরাজ্য বিভাগের খেলনা পরিচালক মেলিসা সাইমন্ডস বলেন, এটা দ্বিমুখী সাফল্যের গল্প। একদিকে শিশুরা আবার খেলাধুলার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেয়েছে, অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্করা নিজের যত্ন, স্মৃতিকাতরতা ও পুরোনো ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পুতুলের দিকে ঝুঁকেছেন। এই দুইয়ে মিলে বাজার এখন প্রাণবন্ত।
সাম্প্রতিক এই বিক্রির ধারা দেখে উপহার বিক্রেতারা ক্রিসমাস মৌসুম নিয়ে বেশ আশাবাদী। তবে কিছুটা আশঙ্কাও আছে। শরৎকালীন বাজেটে কর বাড়লে মানুষ খরচ কমিয়ে দিতে পারে—এ শঙ্কা কিছুটা হলেও আছে।
সাইমন্ডসের মতে, খেলনার বাজার একটু আলাদা। সাধারণ অর্থনৈতিক প্রবণতার সঙ্গে খেলনা মেলানো যায় না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খেলনা ‘আনন্দের অর্থনীতির’ অংশ। আনন্দের জন্য মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে।
সাইমন্ডস আরও বলেন, খেলনা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। গত ডিসেম্বরে খেলনার গড় বিক্রয়মূল্য ছিল ১৩ পাউন্ড ৪৩ পেন্স। যদিও একসময় ১০ থেকে ২০ পাউন্ডের খেলনাই বেশি বিক্রি হতো—বিক্রি হওয়া এক–তৃতীয়াংশ খেলনার দাম ছিল এই সীমার মধ্যে।
যুক্তরাজ্যের টয় রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ড্রিমটয়স নির্বাচন প্যানেলের চেয়ারম্যান পল রিডার বলেন, ২০২৫ সাল এই খাতের জন্য ভালো যাচ্ছে। বাজার প্রকৃত অর্থেই ইতিবাচক। তাঁর আশাবাদ, এই গতিশীলতা ক্রিসমাস পর্যন্ত চলবে।
পল রিডার আরও বলেন, বাজেটের পর মানুষের হাতে খরচ করার মতো অর্থ কমে যাবে—এমন ধারণা বেশ চাউর হয়ে গেছে। তবে বিপণনে তাঁরা কমতি রাখবেন না। গ্রাহকেরা কোন ধরনের পুতুল পছন্দ করতে পারেন, ক্রিসমাসের আগে তার তালিকাও করে রাখা হচ্ছে।
মানুষ ক্রিসমাসে কেনাকাটার পরিকল্পনা শুরু করেছে। তবে মানুষের পকেটে বাজেটের কী প্রভাব পড়বে, সেটা এখনই বলা যাবে না বলে মনে করেন রিডার। তিনি আরও বলেন, ক্রিসমাসের জাদু সব সময়ই থাকবে। মা–বাবা থেকে শুরু করে দাদা-দাদি—সবাই চেষ্টা করেন, ক্রিসমাসের আনন্দে যেন কমতি না থাকে।
কোম্পানিগুলোও খেলনার ঝাঁপি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এবারের ক্রিসমাসের জন্য স্বপ্নের খেলনার তালিকা করেছে টয় রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেই তালিকায় আছে ড্রেস টু ইমপ্রেস মিস্টেরি মডেল ডলস (১২.৯৯ পাউন্ড), গুই গুই সিমার ডিলাক্স প্যাক (১৯.৯৯ পাউন্ড), হট হুইলস রেসিং এফ১ গ্রাঁ প্রি সার্কিট (৭৯.৯৯ পাউন্ড), হিউম্যান কন্ট্রোলার (৩৪.৯৯ পাউন্ড), জুরাসিক ওয়ার্ল্ড প্রাইমাল হ্যাচ টি রেক্স (৬৪.৯৯ পাউন্ড) ইত্যাদি।