ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকের চান্দুরা শাখায় জানালার কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এতে আসবাব ও কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে ভল্টের টাকা লুট বা বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরায় ওই গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার অবস্থান। ব্যাংকের পেছনে ডরমিটরিতে ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকেন।

গ্রামীণ ব্যাংকের চান্দুরা শাখার ব্যবস্থাপক কলিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ২টা ৫ মিনিটের দিকে বাইরে থেকে জানালার কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হয়। নিরাপত্তা প্রহরী বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাদের জানান। ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে আগুন জ্বলতে দেখি। আগুনে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, শিট, গ্রাহকদের পাসকার্ড, আসবাব, জানালার কাপড় পুড়ে গেছে। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে নিয়ে আগুন নেভাই। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসে।’

কলিম উদ্দিন জানান, ব্যাংকের পেছনে রান্নাঘরের পাশে একটি চেয়ার রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই চেয়ারের মাধ্যমে দুর্বৃত্তরা এসে কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজ করছেন। তিনিসহ কয়েকজন ব্যাংকের পেছনে ডরমিটরিতে থাকেন। তাই দ্রুত আগুন নেভাতে পেরেছেন।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ নথি, ঋণের কাগজপত্র পুড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে কয়েল জ্বলছিল। কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখন বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাড়ির বিমা কেন করবেন, কী সুবিধা পাবেন

গাড়ি এখন আর নিছক বিলাসিতার উপাদান নয়, প্রয়োজনেরও বটে। সে কারণে দেশের মধ্যবিত্তের বড় একটি অংশ গাড়ি কেনেন। এর মধ্য দিয়ে শখের সঙ্গে প্রয়োজনও মেটাচ্ছেন তাঁরা।

শখ ও প্রয়োজন যেখানে একাকার হয়ে যায়, সেখানে যত্নআত্তির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। গাড়ির সাধারণ দেখাশোনার পাশাপাশি বিমাও একধরনের যত্নআত্তির মতো। কেননা, ঢাকাসহ দেশের সব সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে বড় ধরনের উদ্বেগ থাকে। দেশে প্রতিবছর ছোট–বড় অনেক দুর্ঘটনা হয়। এসব দুর্ঘটনায় গাড়ির ক্ষতি হয়।

যাঁরা গাড়ি ব্যবহার করেন, তাঁরা জানেন, একবার গাড়ির ক্ষতি হলে কত টাকা খরচ হয়। সে কারণে বিমা গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির যেকোনো দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বা সম্পদের ক্ষতিপূরণ গাড়ির মালিককে বহন করতে হবে। কিন্তু দেশের প্রচলতি আইন অনুযায়ী গাড়ির জন্য বিমা করা বাধ্যতামূলক নয়। তারপরও বিমা করা ভালো। বিমার কাজ হলো ঝুঁকির বিপরীতে নিরাপত্তা দেওয়া। ফলে মোটর বিমা করা থাকলে একদিকে যেমন গাড়ির মালিক সুরক্ষিত থাকতে পারেন, তেমনি সরকারও রাজস্ব আয় করতে পারে।

গাড়ি বিমায় যেসব সুবিধা

বিমা করা থাকলে কিছু সুনির্দিষ্ট কারণে গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমা সুবিধা পাওয়া যায়। সেগুলো হলো:

১. আগুন, বিস্ফোরণ বা বজ্রপাত

২. চুরি, বাড়ি ভাঙা বা ডাকাতি

৩. চুরির কারণে সম্পত্তি নষ্ট

৪. দাঙ্গা, ধর্মঘট, ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড

৫. দাঙ্গা, ধর্মঘট, ইচ্ছাকৃত ক্ষতি বা সন্ত্রাস কর্মকাণ্ড

৬. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভূমিকম্প

৭. সরাসরি ভূমিকম্প বা ভূমিকম্পের ফলে অগ্নিকাণ্ড

৮. বন্যা, ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন

৯. দুর্ঘটনাজনিত গাড়ির বাইরের অংশের ক্ষতি

১০. গাড়ি পরিবহনের সময় পথে ক্ষতি

কী লাভ

এই ধরনের ক্ষতির পুষিয়ে নিতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। বিমা মানুষকে অর্থাৎ গাড়ির মালিকদের এ ধরনের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত রাখে। অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ দেয়। তাই রাস্তায় গাড়ি নামাতে বা চালাতে হলে মোটর বিমা বাধ্যতামূলক করা উচিত বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

এ বিষয়ে নিটোল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান এ কে এম মনিরুল হক বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আদলে তৃতীয় পক্ষের মোটর বিমা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এতে অন্তত ন্যূনতম দায়বদ্ধতা থাকবে। বর্তমান প্রিমিয়ামের হার ও ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বাড়াতে হবে। ক্ষতি ও দাবি পূরণের প্রক্রিয়া সহজ করা, আদালতে স্থায়ী বেঞ্চ গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের শিগগিরই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেন তিনি।

বিমা করতে কী লাগে

মোটর বিমা করতে সাধারণত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন–সংক্রান্ত কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কর পরিশোধের প্রমাণপত্র (ট্যাক্স টোকেন), মালিকের পরিচয়পত্রসহ (যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট) নানা তথ্য ও দলিল প্রয়োজন হয়। বিমা করতে চাইলে এসব কাগজপত্র নিয়ে সরাসরি বিমা কোম্পানির কার্যালয়ে যোগাযোগ করা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংক কার্যালয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন
  • গাড়ির বিমা কেন করবেন, কী সুবিধা পাবেন