ভুয়া তথ্য দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিরা হলেন, ফেনী জেলার অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক জন্মনিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে ও আবদুল জলিল নামে এক ব্যক্তি।

আজ বুধবার দুপুরে দুনীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের (সংযুক্তি) সহকারী পরিচালক অংটি চৌধুরী বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নথি জাল করেছেন।

দুদকের মামলার বিবরণ রয়েছে, কক্সবাজারের বাসিন্দা আবদুল জলিল বৈধ কোনো নাগরিকত্বের কাগজপত্র ছাড়াই জাল জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন জন্মনিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে এবং বন্দর থানার তৎকালীন নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। আবদুল জলিলের জন্ম, নাগরিকত্ব বা তাঁর মা–বাবার কোনো সরকারি রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি। ২০১১ সালের ২২ জুলাই তিনি বৈধ নথি ছাড়া জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করেন। পরে ২০১৭ সালের মে মাসে আবারও ভুয়া স্বাক্ষর ও জাল সনদ ব্যবহার করে জন্মনিবন্ধন নবায়ন করেন।

পরে ওই জাল সনদ ব্যবহার করে নির্বাচন অফিসে ভুয়া তথ্য ও ঠিকানা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেন। নির্বাচন কমিশনের ফরমে তাঁর মা–বাবা, স্ত্রী ও অন্যান্য তথ্যের ঘর ফাঁকা রাখা হয়। একই সঙ্গে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা হিসেবে যে ঠিকানাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোয় তাঁর বসবাসের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। দুদকের ফরেনসিক পরীক্ষায় জন্মনিবন্ধনের স্বাক্ষর ও নিবন্ধকের সই জাল প্রমাণিত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কত টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন

গত কয়েক বছরে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টাকা ফেরত না দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। কিছু ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন ব্যাংকের স্বাস্থ্য খারাপ হয়। অনেক গ্রাহককে ব্যাংকে টাকা রেখে তা ফেরত পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

ব্যাংক খাতের এমন দুরবস্থার মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা অনেক বেশি নিরাপদ। আসল তো পাবেনই, মুনাফার নিশ্চয়তাও আছে।

তাই বিনিয়োগের জন্য মধ্যবিত্তের অন্যতম পছন্দ সঞ্চয়পত্র। এ বিনিয়োগে মুনাফার হারও বেশি। এমন চিন্তা থেকে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কেনেন।

বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের চার ধরনের সঞ্চয় আছে। এগুলো হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া বাকি সব সঞ্চয়পত্রে ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগ করতে পারে।

এবার দেখা যাক, একজন ব্যক্তি কোন সঞ্চয়পত্রে কত বিনিয়োগ করতে পারেন।

সর্বোচ্চ কত টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে

সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরাই কিনতে পারবেন। তবে যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিকের পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ আছে।

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। এটিই একক নামে সর্বোচ্চ বিনিয়োগসীমা। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান কিনতে পারবেন।

অন্যদিকে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।

তিন অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকার কেনা যাবে।

সব মিলিয়ে আপনি যদি একটি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। আর ১০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের পরিবার সঞ্চয়পত্র আছে।

১০ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র আছে। আর তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মূল্যমান ১ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা।

জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা, বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ও ডাকঘর থেকে এই সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো যায়।

মুনাফা কত

পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ করা হয়েছে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে, অর্থাৎ মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফা ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সবচেয়ে বেশি।

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এ ছাড়া তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

মেয়াদ পূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙলে মুনাফা কমে যায়। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মেয়াদ পূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র না ভাঙাই ভালো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন সর্বোচ্চ কত টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন
  • একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কত টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন
  • গাড়ির বিমা কেন করবেন, কী সুবিধা পাবেন
  • বয়স সংশোধনে কঠোর হচ্ছে ইসি