গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের রিসোর্টে বোতল বোমা নিক্ষেপ
Published: 12th, November 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের ‘নিসর্গ’ রিসোর্টে বোতল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোরে কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের কুচলিবাড়ি এলাকায় অবস্থিত নিসর্গ রিসোর্টে এ নাশকতা হয়। পাঁচ মাস আগেও ওই রিসোর্টে অনুরূপ হামলা হয়েছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোরের দিকে রিসোর্টের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে দুটি বোতল বোমা দেখতে পান নিরাপত্তাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সেগুলো জব্দ করে।
কালীগঞ্জ থানার উলুখোলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন বলেছেন, নিসর্গ রিসোর্ট থেকে দুটি কাঁচের বোতল জব্দ করা হয়েছে। এর ভেতরে কেরোসিন জাতীয় তরল পদার্থ ছিল। দুর্বৃত্তরা সেগুলো নিক্ষেপ করলেও রিসোর্টের কোনো ক্ষতি হয়নি।
তিনি জানিয়েছেন, আগের বোমা হামলার মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। আজকের ঘটনার বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা রিসোর্টের ভিতরে বোমাগুলো নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
এর আগে গত ২৬ মে মধ্যরাতে একই রিসোর্টের ভেতরে পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তখন পরপর দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আগুন ধরে গেলে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে সুতলি দিয়ে বাঁধা তরল পদার্থভর্তি কাঁচের বোতল, ভাঙা কাঁচ ও একটি প্লাস্টিকের জেরিক্যান উদ্ধার করা হয়। পরে রিসোর্টের ডিউটি অফিসার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা ট্রাস্টি হলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
ঢাকা/রেজাউল/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে প্রতি ১০টির মধ্যে ৯টি পরিবারই অনাহারে বা ঋণে জর্জরিত
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের প্রতি ১০ পরিবারের ৯টিই অনাহারে থাকছে বা টিকে থাকতে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে দারিদ্র্যপীড়িত পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে ফেরত আসা লাখো শরণার্থীর চাপ দেশটির অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ আফগান নিজ দেশে ফিরে এসেছে।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে বোরকা পরার নির্দেশ তালেবান সরকারের
আজিজুলের সেঞ্চুরিতে সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতে সিরিজ বাঁচাল বাংলাদেশ
প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান শাসিত আফগানিস্তান ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য হ্রাস, নিষেধাজ্ঞা এবং আগস্টে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পসহ বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। এর মধ্যে পাকিস্তান ও ইরান আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কারের প্রচেষ্টা জোরদার করায় চলতি বছর প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক দেশে ফিরতে হয়েছে।
ফিরে আসা আফগানরা মারাত্মক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ফেরত আসা পরিবারের অর্ধেকের বেশি খাবার জোগাতে চিকিৎসা সেবা বাদ দিচ্ছে এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি পরিবার ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এসব পরিবারের গড় ঋণের পরিমাণ ৩৭৩ থেকে ৯০০ ডলার পর্যন্ত, অথচ গড় মাসিক আয় মাত্র ১০০ ডলার। ৪৮ হাজারের বেশি পরিবারের ওপর করা এক জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, বাসা ভাড়া তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় ফেরত আসা লোকজন বাসস্থানের সমস্যাতেও ভুগছে। অর্ধেকের বেশি মানুষ জানিয়েছে যে, তাদের পর্যাপ্ত স্থান বা বিছানাপত্র নেই। পশ্চিম আফগানিস্তানের ইনজিল এবং গুজারা জেলায় ফেরত আসা বেশিরভাগ মানুষ শরণার্থী তাঁবুতে বা জরাজীর্ণ স্থাপনায় বসবাস করছে।
উচ্চ-প্রত্যাবর্তনকারী অঞ্চলে আফগানদের জীবিকা এবং পরিষেবা জোরদার করার জন্য ইউএনডিপি জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
আফগানিস্তানে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন রদ্রিগেস বলেন, “আঞ্চলিকভাবে আয়, বাসস্থান ও সামাজিক সংহতি জোরদার করে উচ্চ-প্রত্যাবর্তনের জেলাগুলোর ওপর চাপ কমানো সম্ভব।”
দীর্ঘ যুদ্ধ, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার এবং পরবর্তী মানবিক সংকটের পর আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জাতিসংঘ এ বছর আফগানিস্তানের জন্য ৩.১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল চেয়েছিল, যা দাতা দেশগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তালেবান সরকার চলতি বছরের ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে এবং পাকিস্তানের শরণার্থী বহিষ্কারের পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়েছে।
ইউএনডিপি আরো সতর্ক করেছে যে, নারীদের কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় পরিবারগুলোর দুরবস্থা আরো বেড়েছে। দেশটিতে নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ এখন মাত্র ৬ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্নতম। নারীদের চলাচলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে নারীপ্রধান পরিবারগুলোর জন্য কাজ, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ইউএনডিপির আঞ্চলিক পরিচালক কানি উইগ্নারাজা বলেন, “কিছু প্রদেশে প্রতি চার পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী হিসেবে নারীদের উপর নির্ভর করে, তাই যখন নারীদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়, তখন পরিবার, সম্প্রদায়, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
ঢাকা/ফিরোজ