অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করে যাবে: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 12th, November 2025 GMT
নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজটা জাতীয় বেতন কমিশন স্বাধীনভাবে করছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কাজটা অনেক জটিল, তবে অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বেতন কমিশনের প্রতিবেদন (বেতন কাঠামো) চূড়ান্ত করে যাবে। আশা করা যায়, আগামী সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।
রাজনৈতিক সরকার এলে ঝুলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বেতন কাঠামো দিয়ে যেতে পারবে কি না, এটা ছিল সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে প্রশ্ন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাত থেকে আট বছর কিছু হয়নি। আমরা তো একটা উদ্যোগ নিয়েছি। ক্ষোভের পরিবর্তে বরং আমাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। অনেক চিন্তা-ভাবনা করে কাজটি করা হচ্ছে। আগামী সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে না, তা আমার মনে হয় না।’
বেসামরিক, সামরিকসহ মোট তিনটা প্রতিবেদন (আরেকটা বিচার বিভাগ) পাওয়ার পর পারস্পরিক সামঞ্জস্য দেখা হবেও বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কাজগুলো করতে একটু সময় লাগে। প্রশাসনিক কিছু প্রক্রিয়া আছে। সচিব কমিটি দেখবে, জনপ্রশাসন দেখবে। অর্থ বিভাগের সম্পৃক্ততাও আছে। তারপর বাস্তবায়ন করা যাবে। সে জন্যেই বলেছি যে আমাদের সময়ে এটা বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে।’
সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়া অপ্রত্যাশিত। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখতে সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এদিন কোনো ধরনের মিছিল বা লোক জড়ো যেন না হতে পারে, কোনো ধরনের নাশকতা বা জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে-সেজন্য পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “১৩ তারিখকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম চলছে। কে পি আই এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া এখানে সেখানে খোলা তেল বিক্রি বন্ধসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনে নিয়ে সতর্ক আছে সরকার। আশঙ্কার কারণ নেই। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।”
আরো পড়ুন:
মসজিদে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় আটক ১
চট্টগ্রামে সারোয়ার হত্যাসহ তিন ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি এবং নাশকতার আশঙ্কায় পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়েছে। সন্দেহজনক বিভিন্ন বাসা বাড়ি আবাসিক হোটেল ম্যাচসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় র্যাব পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “বিভিন্ন পেজ ও আইডি থেকে নানা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এগুলো দেশের বাইরে থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে তথ্য যাই হোক আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব। কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটির কোনো কার্যক্রম করার সুযোগ নাই।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণসমাবেশ, লকডাউন ঘোষণা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো নানা গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। তবে কোনো নির্দিষ্ট হুমকির তথ্য না থাকলেও, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সংঘাতের আশঙ্কা থাকায় মাঠ প্রশাসনকে যেকোনো উসকানিমূলক তৎপরতা প্রতিরোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জনগণকে গুজবে কান না দিতে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের প্রশ্নে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, “সোমবার রাজধানীতে বিভিন্ন যানবাহনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল আগুন দিয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে শঙ্কার কিছু নেই। নাশকতাকারীদের দমনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে কাজ করছেন।”
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানিয়েছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা কমসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোর প্রস্তুতি নিয়েছে।
বিজিবি মোতায়েন
এদিকে জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অতিরিক্ত ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস, আদালত প্রাঙ্গণ, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড় এবং এর আশেপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সড়কে থাকবে জামায়াতসহ ৮ দল
নাশকতা রোধে সারা দেশে সড়কে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ৮টি দল। বুধবার দলগুলোর পক্ষে জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, আটদলীয় জোটের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার সারা দেশে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে' সড়কে অবস্থান নেবেন।
ঢাকা/এমআর/এসবি