সোনিয়া সুলতানা (২৪) নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের কাছে চারটি চিরকুট পাওয়া গেছে। এর একটিতে লেখা—‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি।’

বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকার ইসলাম টাওয়ারের সপ্তম তলার ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল সোনিয়ার মরদেহ। 

সোনিয়া রাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০২০ সেশনের (৬৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন সোনিয়া। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী।

সোনিয়ার ঘরে রঙিন কাগজে লেখা চারটি চিরকুট পাওয়া গেছে। একটি চিরকুটে লেখা, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার যেন পোস্টমর্টেম না করা হয়। আম্মু, আব্বু, ধ্রুবতারা আমি খুব ভালোবাসি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আল্লাহকে বলো আমাকে মাফ করে দিতে।”

আরেকটি চিরকুটে লেখা, “আমি প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছি মা। কবরের আযাব কীভাবে সহ্য করব। আব্বুকে বলবা আমার কবরের পাশে থাকতে। আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করে দেন।”

অন্যটিতে লেখা, “আব্বু আম্মু তোমরা আমাকে মাফ করে দিও। তোমাদের জন্য আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল মা। আমি কিচ্ছু পারলাম না। আব্বু আম্মু শুধু দোয়া করো যেন আমাকে মাফ করে দেন।” 

আরেক চিরকুটে লেখা, “আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি বিশ্বাস করো তোমরা। কিন্তু নিজের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠলাম না।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মাহবুবর রহমান বলেছেন, “বিষয়টি মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে, মৃত্যুর কোনো সঠিক কারণ আমরা জানতে পারিনি। পুলিশও আমাদের কোনো কিছু জানাতে পারেনি। হয়ত পরে আমরা জানতে পারব।”

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেছেন, “ওড়না গলায় পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ ঝুলছিল। এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। সোনিয়া চিরকুটে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করার অনুরোধ জানিয়ে গেছে। পরিবারও সেটি চায়নি। তাই, ময়নাতদন্ত করা হয়নি। মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ রক ট ম ফ কর মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

লিবিয়ার উপকূলে অভিবাসীদের নৌকাডুবি

লিবিয়ার উপকূলে একটি রাবার নৌকা ডুবে যাওয়ার পর কমপক্ষে ৪২ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। 

গত সপ্তাহে লিবিয়ার উপকূলের উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত উপকূলীয় স্থাপনা আল বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে ৪৯ জনকে বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়। ছয় দিন ধরে সমুদ্রে ভেসে থাকা সাতজনকে লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, অভিবাসীরা সুদান, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এবং সোমালিয়ার বাসিন্দা।

ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের সময় ২০১১ সালে স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির শাসনামলের পর থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে সংঘাত ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসীদের জন্য লিবিয়া একটি ট্রানজিট রুট হয়ে উঠেছে।

অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছর মধ্য ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। পুরো ভূমধ্যসাগর জুড়ে ২০২৪ সালে ২ হাজার ৪৫২ জন মারা গেছে।

সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সুরমান এবং ল্যাম্পেডুসার কাছে অন্যান্য মারাত্মক ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অভিবাসী এবং শরণার্থীদের মুখোমুখি হওয়া ক্রমাগত বিপদের কথা তুলে ধরে।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ