‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না’
Published: 12th, November 2025 GMT
পবিত্র কোরআন মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করার জন্য নাজিল হয়েছে, কিন্তু অনেক সময় আমরা তার গভীরতায় ডুব দিই না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না, নাকি তাদের হৃদয়ে তালা লাগানো আছে? (সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২৪)
এই আয়াত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে কোরআন শুধু পড়ার জিনিস নয়, বরং তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। এর ভাষা, সংক্ষিপ্ততা, উপমা, বাক্য গঠন, শুরু ও শেষ—সবকিছুতে রয়েছে অসাধারণ সৌন্দর্য।
ইমাম সুয়ুতি (রহ.
কোরআনের এই অলৌকিকতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয় তার প্রভাবে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি এমন কোনো কোরআন থাকত, যার দ্বারা পাহাড় সঞ্চালিত হতো, পৃথিবী খণ্ডিত হতো বা মৃতরা কথা বলত...(সুরা রাদ, আয়াত: ৩১)
এখানে উত্তরটি লুকানো আছে।
প্রথম অর্থ হলো, যদি কোনো কোরআন এমন ক্ষমতা রাখত, তাহলে এই কোরআনই তা করত, যা মহানবী (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে।
মক্কার মুশরিকরা নবীজিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল: পাহাড় সরাও, বাতাসকে আমাদের বাহন বানাও, মৃতদের জীবিত করো—যেমন দাউদ (আ.)-এর জন্য পাহাড় সঞ্চালিত হতো, সুলাইমান (আ.)-এর জন্য বাতাস নিয়ন্ত্রিত হতো, ইসা (আ.) মৃতদের জীবিত করতেন। তারা বলেছিল, ‘আমরা বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমাদেরকে দেওয়া হয় রাসুলদের মতো কিছু।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১২৪)
আরও পড়ুনব্যস্ত জীবনেও কোরআন খতমের কার্যকর কৌশল০৩ আগস্ট ২০২৫তারপর তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মতো বা তার চেয়েও কঠিন। পাথর থেকে তো নদী বের হয়, ফেটে পানি বের হয়, কিছু পাথর আল্লাহর ভয়ে নিচে খসে পড়ে।সুরা বাকারা, আয়াত: ৭৪এর জবাবে আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেন, যাতে বোঝানো হয় কোরআনের মহত্ত্ব এসবের চেয়ে অনেক বড়। যদি এই কোরআন কোনো পাহাড়ে নাজিল হতো, তাহলে পাহাড় আল্লাহর ভয়ে ফেটে যেত। (সুরা হাশর, আয়াত: ২১)
যাঁরা কোরআনের স্পর্শ অনুভব করেছেন, তাঁরা এর সত্যতা হৃদয়ে টের পান। সাইয়িদ কুতুব (রহ.) তাঁর ফি যিলালিল কোরআন তাফসিরে বলেছেন, এই আয়াতের আলোই একমাত্র এই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। (ফি যিলালিল কোরআন, ৪/২১৫৬, দারুশ শুরুক, কায়রো, ১৯৭৪)
কবি আহমদ শাওকি তাঁর কবিতায় বলেছেন: নবীগণ আয়াত নিয়ে এসেছিলেন, যা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু তুমি এমন কিতাব এনেছ, যা কখনো শেষ হয় না। তাঁর আয়াতগুলো সময়ের সঙ্গে নতুন হয়, পুরোনো হলেও মহিমায় ভরা। ইসা মৃতকে জীবিত করেছিলেন, কিন্তু তুমি অস্তিত্বহীন প্রজন্মকে জীবন দিয়েছ। এর সঙ্গে মিলিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘যে মৃত ছিল, আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে আলো দিয়েছি, যা দিয়ে সে মানুষের মাঝে চলে, সে কি তার সমান যে অন্ধকারে আছে এবং বের হতে পারছে না?’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১২২)
কিন্তু আমাদের হৃদয় প্রায়ই কঠিন হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘তারপর তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মতো বা তার চেয়েও কঠিন। পাথর থেকে তো নদী বের হয়, ফেটে পানি বের হয়, কিছু পাথর আল্লাহর ভয়ে নিচে খসে পড়ে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৭৪)
পাথরের বাইরে নরম লাগলেও ভেতরে কঠিন, কিন্তু আমাদের হৃদয় তার চেয়েও শক্ত।
এই আয়াতের দ্বিতীয় অর্থ হলো, যদি এসব মোজেজা দেখানো হতো—পাহাড় সরানো, পৃথিবী খণ্ডিত করা, মৃতদের কথা বলানো—তবু তারা ইমান আনত না। কিছু মুফাসসির বলেছেন, এটি সেই লোকদের জন্য, যারা জেদ করে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি আমি ফেরেশতা নাজিল করতাম, মৃতরা কথা বলত, সবকিছু তাদের সামনে জড়ো করতাম, তবু তারা ইমান আনত না;যদি না আল্লাহ চান।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১১১)
আরও পড়ুনকোরআন থেকে ইতিহাস ও বাস্তবতার নিয়ম বোঝা২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫যদি আমি ফেরেশতা নাজিল করতাম, মৃতরা কথা বলত, সবকিছু তাদের সামনে জড়ো করতাম, তবু তারা ইমান আনত না;যদি না আল্লাহ চান।সুরা আনআম, আয়াত: ১১১ইমাম আবদুর রহমান বিন নাসির আস-সা’দি (রহ.) বলেছেন, এটি বোঝায় যে বড় বড় আয়াত দেখলেও ইমান আসবে না; যদি আল্লাহ না চান। (তাইসিরুল কারিমির রহমান ফি তাফসিরি কালামিল মান্নান, পৃষ্ঠা ২৪৫, মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ, বৈরুত, ২০০০)
এমন আরেকটি আয়াত আছে: ‘যাদের ওপর তোমার রবের কথা সত্য হয়েছে, তারা ইমান আনবে না যদিও সব নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না কঠিন শাস্তি দেখে তারা।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ৯৬-৯৭)
আরেকটি আয়াত হলো: ‘যদি আমি তোমার ওপর কাগজের কিতাব নাজিল করতাম, যা তারা হাতে ছুঁয়ে দেখত, তবু কাফিররা বলত এটা স্পষ্ট জাদু।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৭)
নবীজি (সা.) তাদের ইমানের জন্য এত উদগ্রীব ছিলেন যে তারা না মানলে দুঃখে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলার মতো হতেন। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হয়তো নিজেকে ধ্বংস করে ফেলবে তাদের পেছনে, যদি তারা এই কথায় ইমান না আনে।’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৬)
আল্লাহ তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, তোমার কাজ শুধু পৌঁছে দেওয়া। তাদের অজুহাতগুলো জেদ থেকে আসে। আধুনিক সময়ে ইসলাম প্রচারকেরাও এমন দেখেন। শায়খ নাবিলসি বলেছেন, হেদায়াত মানুষের ভেতরের সিদ্ধান্ত।
যদি সে চায়, ছোট্ট জিনিসই তাকে পথ দেখায়। কিন্তু যদি মুখ ফেরায়, নবীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকলেও, পাহাড় সরলেও ইমান আসবে না। (মুহাম্মাদ রাতিব আন-নাবুলুসি, খুতাব ও মুহাদারাত, ১/১৮৭, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ১৯৯৫)
সারকথা, এই লুকানো উত্তর দুটি: এক. কোরআন সবচেয়ে মহান, প্রকৃতির নিয়ম ভাঙলে এটাই ভাঙত। দুই. এসব দেখালেও তারা ইমান আনত না জেদে—‘তারা তা অস্বীকার করেছে যদিও তাদের অন্তর তা সত্য জেনেছে, অহংকারে।’ (সুরা নামল, আয়াত: ১৪)।
আমাদের দরকার কোরআন নিয়ে একান্তে বসা, চিন্তা করা। এতে ইমান বাড়বে, হৃদয় নরম হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না? যদি এটি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও কাছ থেকে হতো, তাহলে অনেক অসংগতি পেত।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৮২)
কোরআনের উপদেশ, উপমা, প্রতিশ্রুতি, সতর্কতা, কাহিনি—সবই সেরা ভাষায়। চলুন, হৃদয়ের তালা খুলি, কোরআনের আলোয় জীবন গড়ি।
আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রআন ন য় জ ব ত কর ন জ ল কর ক রআন র এই আয় ত বল ছ ন আম দ র র জন য ব র হয় করত ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না’
পবিত্র কোরআন মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করার জন্য নাজিল হয়েছে, কিন্তু অনেক সময় আমরা তার গভীরতায় ডুব দিই না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না, নাকি তাদের হৃদয়ে তালা লাগানো আছে? (সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২৪)
এই আয়াত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে কোরআন শুধু পড়ার জিনিস নয়, বরং তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। এর ভাষা, সংক্ষিপ্ততা, উপমা, বাক্য গঠন, শুরু ও শেষ—সবকিছুতে রয়েছে অসাধারণ সৌন্দর্য।
ইমাম সুয়ুতি (রহ.) তাঁর ‘আলফিয়্যাহ ফিল বালাগাহ’ গ্রন্থে বলেছেন যে কোরআনের সুরাগুলো শুরুতে বিশুদ্ধতায় এবং শেষে সবচেয়ে নিখুঁতভাবে এসেছে, কারণ এটি আল্লাহর কালাম। (জালালুদ্দিন আস-সুয়ুতি, আল-ইতকান ফি উলুমিল কোরআন, ২/১২৫, দারুল কুতুবিল আরাবি, বৈরুত, ১৪২১ হিজরি)
কোরআনের এই অলৌকিকতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয় তার প্রভাবে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি এমন কোনো কোরআন থাকত, যার দ্বারা পাহাড় সঞ্চালিত হতো, পৃথিবী খণ্ডিত হতো বা মৃতরা কথা বলত...(সুরা রাদ, আয়াত: ৩১)
এখানে উত্তরটি লুকানো আছে।
প্রথম অর্থ হলো, যদি কোনো কোরআন এমন ক্ষমতা রাখত, তাহলে এই কোরআনই তা করত, যা মহানবী (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে।
মক্কার মুশরিকরা নবীজিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল: পাহাড় সরাও, বাতাসকে আমাদের বাহন বানাও, মৃতদের জীবিত করো—যেমন দাউদ (আ.)-এর জন্য পাহাড় সঞ্চালিত হতো, সুলাইমান (আ.)-এর জন্য বাতাস নিয়ন্ত্রিত হতো, ইসা (আ.) মৃতদের জীবিত করতেন। তারা বলেছিল, ‘আমরা বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমাদেরকে দেওয়া হয় রাসুলদের মতো কিছু।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১২৪)
আরও পড়ুনব্যস্ত জীবনেও কোরআন খতমের কার্যকর কৌশল০৩ আগস্ট ২০২৫তারপর তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মতো বা তার চেয়েও কঠিন। পাথর থেকে তো নদী বের হয়, ফেটে পানি বের হয়, কিছু পাথর আল্লাহর ভয়ে নিচে খসে পড়ে।সুরা বাকারা, আয়াত: ৭৪এর জবাবে আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেন, যাতে বোঝানো হয় কোরআনের মহত্ত্ব এসবের চেয়ে অনেক বড়। যদি এই কোরআন কোনো পাহাড়ে নাজিল হতো, তাহলে পাহাড় আল্লাহর ভয়ে ফেটে যেত। (সুরা হাশর, আয়াত: ২১)
যাঁরা কোরআনের স্পর্শ অনুভব করেছেন, তাঁরা এর সত্যতা হৃদয়ে টের পান। সাইয়িদ কুতুব (রহ.) তাঁর ফি যিলালিল কোরআন তাফসিরে বলেছেন, এই আয়াতের আলোই একমাত্র এই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। (ফি যিলালিল কোরআন, ৪/২১৫৬, দারুশ শুরুক, কায়রো, ১৯৭৪)
কবি আহমদ শাওকি তাঁর কবিতায় বলেছেন: নবীগণ আয়াত নিয়ে এসেছিলেন, যা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু তুমি এমন কিতাব এনেছ, যা কখনো শেষ হয় না। তাঁর আয়াতগুলো সময়ের সঙ্গে নতুন হয়, পুরোনো হলেও মহিমায় ভরা। ইসা মৃতকে জীবিত করেছিলেন, কিন্তু তুমি অস্তিত্বহীন প্রজন্মকে জীবন দিয়েছ। এর সঙ্গে মিলিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘যে মৃত ছিল, আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে আলো দিয়েছি, যা দিয়ে সে মানুষের মাঝে চলে, সে কি তার সমান যে অন্ধকারে আছে এবং বের হতে পারছে না?’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১২২)
কিন্তু আমাদের হৃদয় প্রায়ই কঠিন হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘তারপর তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে, তা পাথরের মতো বা তার চেয়েও কঠিন। পাথর থেকে তো নদী বের হয়, ফেটে পানি বের হয়, কিছু পাথর আল্লাহর ভয়ে নিচে খসে পড়ে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৭৪)
পাথরের বাইরে নরম লাগলেও ভেতরে কঠিন, কিন্তু আমাদের হৃদয় তার চেয়েও শক্ত।
এই আয়াতের দ্বিতীয় অর্থ হলো, যদি এসব মোজেজা দেখানো হতো—পাহাড় সরানো, পৃথিবী খণ্ডিত করা, মৃতদের কথা বলানো—তবু তারা ইমান আনত না। কিছু মুফাসসির বলেছেন, এটি সেই লোকদের জন্য, যারা জেদ করে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি আমি ফেরেশতা নাজিল করতাম, মৃতরা কথা বলত, সবকিছু তাদের সামনে জড়ো করতাম, তবু তারা ইমান আনত না;যদি না আল্লাহ চান।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১১১)
আরও পড়ুনকোরআন থেকে ইতিহাস ও বাস্তবতার নিয়ম বোঝা২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫যদি আমি ফেরেশতা নাজিল করতাম, মৃতরা কথা বলত, সবকিছু তাদের সামনে জড়ো করতাম, তবু তারা ইমান আনত না;যদি না আল্লাহ চান।সুরা আনআম, আয়াত: ১১১ইমাম আবদুর রহমান বিন নাসির আস-সা’দি (রহ.) বলেছেন, এটি বোঝায় যে বড় বড় আয়াত দেখলেও ইমান আসবে না; যদি আল্লাহ না চান। (তাইসিরুল কারিমির রহমান ফি তাফসিরি কালামিল মান্নান, পৃষ্ঠা ২৪৫, মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ, বৈরুত, ২০০০)
এমন আরেকটি আয়াত আছে: ‘যাদের ওপর তোমার রবের কথা সত্য হয়েছে, তারা ইমান আনবে না যদিও সব নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না কঠিন শাস্তি দেখে তারা।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ৯৬-৯৭)
আরেকটি আয়াত হলো: ‘যদি আমি তোমার ওপর কাগজের কিতাব নাজিল করতাম, যা তারা হাতে ছুঁয়ে দেখত, তবু কাফিররা বলত এটা স্পষ্ট জাদু।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৭)
নবীজি (সা.) তাদের ইমানের জন্য এত উদগ্রীব ছিলেন যে তারা না মানলে দুঃখে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলার মতো হতেন। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হয়তো নিজেকে ধ্বংস করে ফেলবে তাদের পেছনে, যদি তারা এই কথায় ইমান না আনে।’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৬)
আল্লাহ তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, তোমার কাজ শুধু পৌঁছে দেওয়া। তাদের অজুহাতগুলো জেদ থেকে আসে। আধুনিক সময়ে ইসলাম প্রচারকেরাও এমন দেখেন। শায়খ নাবিলসি বলেছেন, হেদায়াত মানুষের ভেতরের সিদ্ধান্ত।
যদি সে চায়, ছোট্ট জিনিসই তাকে পথ দেখায়। কিন্তু যদি মুখ ফেরায়, নবীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকলেও, পাহাড় সরলেও ইমান আসবে না। (মুহাম্মাদ রাতিব আন-নাবুলুসি, খুতাব ও মুহাদারাত, ১/১৮৭, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ১৯৯৫)
সারকথা, এই লুকানো উত্তর দুটি: এক. কোরআন সবচেয়ে মহান, প্রকৃতির নিয়ম ভাঙলে এটাই ভাঙত। দুই. এসব দেখালেও তারা ইমান আনত না জেদে—‘তারা তা অস্বীকার করেছে যদিও তাদের অন্তর তা সত্য জেনেছে, অহংকারে।’ (সুরা নামল, আয়াত: ১৪)।
আমাদের দরকার কোরআন নিয়ে একান্তে বসা, চিন্তা করা। এতে ইমান বাড়বে, হৃদয় নরম হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না? যদি এটি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও কাছ থেকে হতো, তাহলে অনেক অসংগতি পেত।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৮২)
কোরআনের উপদেশ, উপমা, প্রতিশ্রুতি, সতর্কতা, কাহিনি—সবই সেরা ভাষায়। চলুন, হৃদয়ের তালা খুলি, কোরআনের আলোয় জীবন গড়ি।
আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩