স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য: প্রদীপের নিচের অন্ধকার
Published: 12th, November 2025 GMT
স্বাস্থ্য খাতের বৈষম্য নিয়ে লিখতে গিয়ে মনে হলো, নানা খাতের মধ্যে সে নিতান্তই ব্রাত্য এবং বৈষম্য এর স্তরে স্তরে। গত অর্ধশতকে বৈষম্য কেবলই বেড়েছে।
জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র—এ কথা আমাদের সংবিধানে লেখা আছে। অবশ্য এটা রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা নয়, আকাঙ্ক্ষা মাত্র। কিন্তু ‘স্বাস্থ্য মৌলিক অধিকার’—এ কথা বলে এ খাতের জন্য ৫ শতাংশের কম বাজেট বরাদ্দ করা কোনো কাজের কথা নয়।
গড় আয়ুর ধারাবাহিক বৃদ্ধির সূচকের দিকে তাকিয়ে ‘আমরা স্বাস্থ্যে প্রভূত উন্নতি করেছি’ বলার অর্থ নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করা। শুধু বেঁচে থাকাই কি মানুষের জীবন? কীভাবে বেঁচে আছি, রোগব্যাধির পেছনে কত খরচ করে বেঁচে আছি, সেসব না বুঝে বেঁচে থাকার দৈর্ঘ্য নিয়ে গর্ব করা জীবনের অতি সরলীকরণ।
জরিপে সংখ্যাপ্রীতি বেশি
আমাদের রাজনীতিবিদদের সংখ্যাপ্রীতি প্রবল। স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সূচকে ধারাবাহিক উন্নতি দেখতে এবং দেখাতে খুব পছন্দ করেন। বাস্তব পরিস্থিতি যা–ই হোক, পরিসংখ্যানে মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ইত্যাদির সংখ্যা যত কম দেখা যাবে, তাঁরা তত খুশি হবেন। উল্টোভাবে, স্বাস্থ্যসেবাগ্রহীতার সংখ্যা যত বড় হবে, তাঁদের আনন্দ তত বাড়বে। আর যাঁরা মন্ত্রীদের তুষ্টি বাড়াতে চান, তাঁরা বড় বড় সংখ্যা উপস্থাপনের চেষ্টায় থাকেন। একটি জাতীয় জরিপে তুষ্টিমূলক সংখ্যা পাওয়া যায়নি বলে সেটির প্রকাশ দুই বছর আটকে রাখা হয়েছিল।
সংখ্যাপ্রীতির কারণে একধরনের মরীচিকা তৈরি হয়। কারণ, সংখ্যাগুলো সাধারণত ‘গড়’ হিসাব। গড় হিসাবে বৈষম্য ও বঞ্চনার চিত্র থাকে না। সংখ্যার প্রবণতা হলো, সে স্ফীতির গল্প বলে, কিন্তু মানের অবনতির গল্প বলে না। দরিদ্র মানুষ যে নিম্নমানের সেবা বেশি দামে কিনছে, এই গল্প সংখ্যা কখনো বলে না।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পীদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছে: শাকিল খান
নব্বই দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিল খান। ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ দিয়ে জনপ্রিয়তার ছোঁয়া পান। টানা এক দশকেরও বেশি সময় দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলেন। তবে এখন সিনেমা জগতের বাইরে রয়েছেন। অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছেন রুপালি দুনিয়াকে।
সিনেমা ছাড়ার কারণ জানাতে গিয়ে শাকিল খান খোলামেলা স্বীকার করলেন, তার প্রধান উদ্বেগ ছিল চলচ্চিত্রে ক্রমে বাড়তে থাকা অশ্লীলতার প্রভাব। এ নায়ক বলেন, “আমি তখন লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতাম, সিনেমাও ভালো ব্যবসা করছিল। কিন্তু আশপাশে অশ্লীলতার ছায়া দেখতে পেলাম; নিজেকে ওই স্পর্শে যেতে দিতে পারিনি। মানুষের সামনে আমার কী উত্তর থাকবে? সন্তানদের কী বলব? এ কারণে ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে চলচ্চিত্র ছেড়ে দিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
দুজন মিলেই বিয়ের কথা গোপন রেখেছিলাম: অপু বিশ্বাস
এবার ঢাকায় ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড’
চলচ্চিত্রের বর্তমান কাঠামো, বিশেষ করে শিল্পী সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন শাকিল খান। তার ভাষায়, “শিল্পী সমিতির নির্বাচন একটা ফালতু জিনিসে পরিণত হয়েছে। এটা এখন শিল্পীদের হাসির পাত্র। সমিতি আজ অর্থহীন রাজনৈতিক বর্জে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রকৃত শিল্পীদের উপেক্ষা করা হয়।”
বর্তমানে চলচ্চিত্রে ‘সুপারস্টার’ তকমা দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাকিল খান। তিনি বলেন, “কারা আসলে সুপারস্টার? এখন তো যে কেউ নিজের নামের সঙ্গে তকমা লাগিয়ে নিচ্ছেন। আমার এক ঈদে ১৬টা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল, তবু নিজেকে কখনো সুপারস্টার বলিনি। পুরোনো প্রজন্ম—শাবানা, রাজ্জাকরা এসব নিয়ে ভাবতেনই না।”
চিত্রনায়ক শাকিব খানকে নিয়েও কথা বলেন শাকিল খান। তিনি বলেন, “শাকিব এখন জনপ্রিয়, কদর আছে— তাই নিচ্ছে। তবে কোটি টাকার ওপরে নেয়, এটা ঠিক নয়। আমার জানা মতে, অর্ধকোটি থেকেও কম পায়। আসল বিষয় পারিশ্রমিক নয়, চলচ্চিত্র বাঁচাতে সমষ্টিগত উদ্যোগ দরকার। এক শাকিবকে কেন্দ্র করে সিনেমা টিকবে না; আরো নতুন অভিনেতা তৈরি করতে হবে।”
কন্যা সামিকা, ছেলে সাদমান ও স্ত্রীকে নিয়েই শাকিল খানের সংসার। এখন পরিবার ও ব্যবসায় পুরোপুরি মন দিয়েছেন প্রাক্তন এই নায়ক। জানালেন, তার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আছে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত