জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রায় সাড়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর বাড়ি ফিরল মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আহত ১০ বছর বয়সী দুই শিক্ষার্থী সারিনাহ জাহান সায়রা ও সাইবাহ জাহান সায়মা। তারা যমজ বোন। সায়রার ৩০ শতাংশ ও সায়মার ১৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

আজ বুধবার সকালে ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কার্যালয়ে তাদের বিদায় জানান হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো.

তৌকির ইসলামসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৭ জনই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ছিল। আহত হন ১২৪ জন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন।

সারিনাহ জাহান সায়রা ও সাইবাহ জাহান সায়মাকে বিদায় জানানো অনুষ্ঠানে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মাইলস্টোন স্কুলের বিমান দুর্ঘটনায় আহত ৫৭ জন এই ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২০ জন। একজনকে ট্রমা ম্যানেজমেন্টের জন্য মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজন এখনো চিকিৎসাধীন, তবে তাঁরা আশঙ্কামুক্ত।’

নাসির উদ্দিন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তাঁরা দগ্ধ প্রত্যেক রোগীকে আন্তরিক সেবা দিয়েছেন, কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা বাড়ি ফিরেছেন, তাঁদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ও ফলোআপ চিকিৎসা দিচ্ছে বলেও জানান নাসির উদ্দিন। এ সময় তিনি সিঙ্গাপুর, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্যসহ যেসব বিদেশি চিকিৎসক আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।

আরও পড়ুন৩৬ বার অস্ত্রোপচার, ৮ বার স্কিন গ্রাফটিংয়ের ধকল সয়ে ৯৭ দিন পর বাড়ি ফিরল নাভিদ২৭ অক্টোবর ২০২৫

সায়রা ও সায়মার বাবা ইয়াসিন মজুমদার ও মা আকলিমা আক্তার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পীদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছে: শাকিল খান

নব্বই দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিল খান। ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ দিয়ে জনপ্রিয়তার ছোঁয়া পান। টানা এক দশকেরও বেশি সময় দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলেন। তবে এখন সিনেমা জগতের বাইরে রয়েছেন। অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছেন রুপালি দুনিয়াকে। 

সিনেমা ছাড়ার কারণ জানাতে গিয়ে শাকিল খান খোলামেলা স্বীকার করলেন, তার প্রধান উদ্বেগ ছিল চলচ্চিত্রে ক্রমে বাড়তে থাকা অশ্লীলতার প্রভাব। এ নায়ক বলেন, “আমি তখন লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতাম, সিনেমাও ভালো ব্যবসা করছিল। কিন্তু আশপাশে অশ্লীলতার ছায়া দেখতে পেলাম; নিজেকে ওই স্পর্শে যেতে দিতে পারিনি। মানুষের সামনে আমার কী উত্তর থাকবে? সন্তানদের কী বলব? এ কারণে ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে চলচ্চিত্র ছেড়ে দিয়েছি।” 

আরো পড়ুন:

দুজন মিলেই বিয়ের কথা গোপন রেখেছিলাম: অপু বিশ্বাস

এবার ঢাকায় ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড’

চলচ্চিত্রের বর্তমান কাঠামো, বিশেষ করে শিল্পী সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন শাকিল খান। তার ভাষায়, “শিল্পী সমিতির নির্বাচন একটা ফালতু জিনিসে পরিণত হয়েছে। এটা এখন শিল্পীদের হাসির পাত্র। সমিতি আজ অর্থহীন রাজনৈতিক বর্জে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রকৃত শিল্পীদের উপেক্ষা করা হয়।” 

বর্তমানে চলচ্চিত্রে ‘সুপারস্টার’ তকমা দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাকিল খান। তিনি বলেন, “কারা আসলে সুপারস্টার? এখন তো যে কেউ নিজের নামের সঙ্গে তকমা লাগিয়ে নিচ্ছেন। আমার এক ঈদে ১৬টা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল, তবু নিজেকে কখনো সুপারস্টার বলিনি। পুরোনো প্রজন্ম—শাবানা, রাজ্জাকরা এসব নিয়ে ভাবতেনই না।” 

চিত্রনায়ক শাকিব খানকে নিয়েও কথা বলেন শাকিল খান। তিনি বলেন, “শাকিব এখন জনপ্রিয়, কদর আছে— তাই নিচ্ছে। তবে কোটি টাকার ওপরে নেয়, এটা ঠিক নয়। আমার জানা মতে, অর্ধকোটি থেকেও কম পায়। আসল বিষয় পারিশ্রমিক নয়, চলচ্চিত্র বাঁচাতে সমষ্টিগত উদ্যোগ দরকার। এক শাকিবকে কেন্দ্র করে সিনেমা টিকবে না; আরো নতুন অভিনেতা তৈরি করতে হবে।” 

কন্যা সামিকা, ছেলে সাদমান ও স্ত্রীকে নিয়েই শাকিল খানের সংসার। এখন পরিবার ও ব্যবসায় পুরোপুরি মন দিয়েছেন প্রাক্তন এই নায়ক। জানালেন, তার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ