অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের
Published: 12th, November 2025 GMT
কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল (ইংরেজি মাধ্যম) আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমে অনলাইনে ক্লাস নেবে বলে জানালেও পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার কথা জানায়।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বৃহস্পতিবারের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জনমনে সৃষ্ট আতঙ্কের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। অবশ্য সবাই লিখিত নোটিশে বলেছে, ‘অনিবার্য কারণে’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, ১২ ও ১৩ নভেম্বর অনলাইনে ক্লাস হবে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি প্রথম অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা বললেও পরে তা প্রত্যাহার করে।
শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি মঙ্গলবার এক জরুরি নোটিশে বলেছে, পরীক্ষাসহ ১২ ও ১৩ নভেম্বরের সব ক্লাস ও পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামীকাল সন্ধ্যায় পরবর্তী দিনের (১৪ নভেম্বর) ক্লাস ও পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল সার্ভিস ও সব রুটের বাস সার্ভিস বন্ধ থাকবে। তবে ১২ ও ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দপ্তর সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
মোহাম্মদপুরের সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আগামীকাল অনলাইনে ক্লাস নেবে। অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সময়সূচিও ঘোষণা করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। নিউ ইস্কাটনের এজি চার্চ স্কুল নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল সানিডেইল আজ ও আগামীকাল অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আগ ম ক ল
এছাড়াও পড়ুন:
৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ
রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে এক কলেজছাত্রকে অপহণের পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ছাত্রের নাম সুদীপ্ত রায়। সে ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গতকাল তুরাগের দিয়াবাড়িতে নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, গত ৭ নভেম্বর ভাটারার শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে অবস্থিত কলেজ হোস্টেল থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। ওইদিন রাতেই সুদীপ্তের পরিবারকে ফোন দিকে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিন ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায়।
পরবর্তীতে এ ঘটনায় ময়মনসিংহ থেকে অভিযুক্ত যোবায়ের ও আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের একজন সুদীপ্তের এলাকার আরেকজনের বাড়ি নেত্রকোনায়। একটি আইফোন ছিনিয়ে নিতে সুদীপ্তকে অপহরণ করে তারা। আইফোন না দেওয়ায় ঘটনার দিন রাতেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনই পরিকল্পনা করে সুদীপ্তকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, সুদীপ্তের বাড়ি দিনাজপুরে। গ্রেপ্তার দুজনই ভাটারা এলাকায় থাকতো এবং সুদীপ্তের পূব পরিচিত ছিল।
নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায় অভিযোগ করেন, ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জগন্নাথপুর শাখায় একাদশ শ্রেণিতে পড়তো সুদীপ্ত। শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে কলেজের হোস্টেলে থাকতো। ৭ নভেম্বর বিকাল ৫টার দিকে মাকে ফোন করে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হেস্টেল থেকে বের হয় সুদীপ্ত। রাত ১০টার দিকে সুদীপ্ত তার মাকে ফোনে জানায়, সে মিরপুরে আছে এবং রাতেই হোস্টেলে ফিরবে। রাতে অজ্ঞাতনামা একজন সুদীপ্তের ফোন থেকে তার মাকে ফোন দেয়। অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায়, সুদীপ্ত তাদের জিম্মায় রয়েছে এবং ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই টাকা ৮ নভেম্বর বিকেল ২টার মধ্যে তাদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিতে হবে। টাকা নিয়ে না আসলে সুদীপ্ততে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে পুলিশসহ অন্যান্য যে কাউকে জানানো যাবে না বলেও হুমকি দেয়। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুদীপ্তকে মেরে ফেলবে বলে ফোনটি কেটে দেয়। এরপর থেকে সুদীপ্তের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ৮ নভেম্বর সকালে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে ফোন দেয় এবং সুদীপ্তের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সুদীপ্তকে আমি পুরো ঘটনা ও মুক্তিপণের কথা জানাই। কিন্তু আমার ছেলে এসব অস্বীকার করে এবং বলে, সে হোস্টেলে যাচ্ছে। এরপর থেকে সেই নম্বরটিও বন্ধ পাই। বেলা আড়াইটার দিকে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং টাকা রেডি রাখার কথা জানিয়ে আবার ১ ঘণ্টা পর ফোন দিবে বলে। এরপর সেটিও বন্ধ পাই।
নিহতের ভগ্নিপতি অনিল সেন বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ও যোবায়ের সুদীপ্তকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ির একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতেই তার মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার পর আইফোনটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। না দেওয়ায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে টয়লেটের মধ্যে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে তারা আইফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদেরকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।
বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এইচ এম শফিকুর রহমান বলেন, “সুদীপ্তকে অপহরণের পর মিরপুরের শাহ আলী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই দিয়াবাড়িতে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখানেই সুদীপ্ততে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।”
ঢাকা/এমআর/এসবি