জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রাইভেট কার চালিয়ে একটি রিকশা চাপা দেওয়ার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় ওই গাড়িচালক ও তার দুই সঙ্গীকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আটকদের সবাই বহিরাগত এবং কারের চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

অনার্সের ফল প্রকাশের আগেই বিসিএস ক্যাডার হলেন ঢাবির খাদিজা

জবিতে সংঘর্ষ: ৪ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টার পরে ক্যাম্পাসের চৌরঙ্গী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত দুই শিক্ষার্থী হলেন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের চন্দ্রা এবং একই বিভাগের ৪৪তম আবর্তনের হৃদয় দেবনাথ। এছাড়া রিকশার একটি চাকা ভেঙে যায় এবং রিকশা চালকও আহত হন।

আহতদের সবাইকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশায় থাকা ওই দুই শিক্ষার্থী চৌরঙ্গী দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন প্রাইভেট কারটি মোড় নেওয়ার সময় রিকশায় ধাক্কা দিলে উল্টে সবাই পড়ে যান।

আটক প্রাইভেট কার চালক আতিকুর রহমান দাবি বলেন, “আমরা ভুল করেছি। আমরা এর ক্ষতিপূরণ দিয়ে চলে যেতে চাই।”

আতিকুর নিজেকে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন এবং তাদের বাসা সাভার ডিওএইচএস বলে জানান। তার সঙ্গে থাকা দুইজন হলেন ফয়সাল আহমেদ ও সাইফুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য তুষার আহমেদ বলেন, “গাড়িটি গেটের কাছে আসলে দূর থেকে লাইট জ্বলানোর কারণে গাড়ির সামনে লাগানো স্টিকারটি ক্যাম্পাসের বলে মনে হয়েছিল। তাই জিজ্ঞাসা না করেই গেট খুলে দিয়েছিলাম।”

দায়িত্বে থাকা অপর আনসার সদস্য এরশাদ আলম জানান, তিনি ওই সময় গেটে পৌঁছাতে পারেননি। তার ডিউটি রাত ১০টা থেকে শুরু হওয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মাদান শাহা বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারের কাছ থেকে একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনজনকে আমাদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। তারা মদ্যপ অবস্থায় ক্যাম্পাসে গাড়ি চালিয়েছেন এবং একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়েছেন। ডোপ টেস্টের পর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জিডি অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

এ কে এম রাশিদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, “ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের আটক করে খবর দিলে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে তৎক্ষণিক উপস্থিত হয়। ঘটনায় জড়িত তিনজনই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং রিকশা চাপা দেওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশে হস্তান্তর করছি। গাড়িটি আমাদের জিম্মায় রাখা হয়েছে এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত গাড়িটি ছাড়ব না। পাশাপাশি প্রান্তিক গেটের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে বরখাস্ত করা হবে। প্রাথমিকভাবে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত আটক

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে এনসিপির মনোনয়ন নিলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী কাজী মুমিনুল হাসান।

তিনি দলটির নাসিরনগর উপজেলার যুগ্ম-সমন্বয়কারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল সেলের সদস্য।

আরো পড়ুন:

জুবায়েদ হত্যা: জবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই বিএনসিসির কার্যক্রম, আদায় হচ্ছে ফি

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী এবং সেক্রেটারি ডা. তাসনিম জারার কাছ থেকে মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেন তিনি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মুমিনুল হাসান বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলে এনসিপির আত্মপ্রকাশ ঘঠেছে। তার উদ্দেশ্য ছিল ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হলেও ২৪ এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা। ব্যর্থতা সফলতা যাই হোক না কেন, শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত এ সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”

তিনি বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে আমরা কোনো যথাযোগ্য নেতাকে নির্বাচিত করতে পারিনি। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আসন থেকে আজ পর্যন্ত স্বনামধন্য মন্ত্রী-এমপি এলেও নাসিরনগরবাসীর কাঙ্ক্ষিত জীবন মানের উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষার মান এখনো তলানিতে। এই আসনটি চির অবহেলিত এবং বড় ধরনের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এমনকি, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থিত হলেও নাসিরনগরবাসী এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সুযোগ পেলে এর সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করবো ইনশাআল্লাহ।”

কাজি মুমিনুল হাসানের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর গ্রামে। তিনি ২০১৯ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে ঢাকা জজ কোর্টে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন।

বর্তমানে তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘মাওলানা আবু আহমদ কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর অধীনে সমাজসেবামূলক কাজে নিয়োজিত আছেন। ওই ট্রাস্টের অধীনে মসজিদের জন্য শতাধিক অযুখানা ও মসজিদ নির্মাণসহ পারিবারিক টিউবওয়েল স্থাপন করেছেন। শীতকালীন বস্ত্র বিতরণ ও কুরবানী ঈদে শতাধিক পশু কুরবানি ও বিতরণের পাশাপাশি অঞ্চলের বিশাল একটা জনগোষ্ঠী হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্বেও তারা সেই ট্রাস্ট থেকে বিভিন্ন  সহযোগিতা পাচ্ছেন।

তার বাবা মাওলানা আবু আহমদ একজন সরকারি নিকাহ রেজিস্ট্রার ও সাবেক দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট এবং মা গৃহীনী। ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।

ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে এনসিপির মনোনয়ন নিলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী
  • ডাকসু-জাকসুর ভিপি-জিএস-এজিএসরা পূর্বে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন: নাছির
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ