অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার নতুন জাতীয় পে-স্কেলের একটি কাঠামো (ফ্রেমওয়ার্ক) চূড়ান্ত করে রেখে যাবে, যা পরবর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কানাডীয় পার্লামেন্টারি দলের সাক্ষাৎ

নির্বাচন পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের কাজ অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এটি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সিভিল, সামরিক ও বিশেষায়িত তিনটি কমিশনের রিপোর্ট একসঙ্গে পর্যালোচনা করে সামঞ্জস্য আনা প্রয়োজন। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। সচিব কমিটি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সংস্থা বিষয়টি পরীক্ষা করবে। তাই, বর্তমান সরকারের মেয়াদের মধ্যে সব শেষ করা কিছুটা অনিশ্চিত।

তিনি আরো বলেন, আমরা চেষ্টা করছি অন্তত একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো বা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যেতে। পরবর্তী সরকার সেটি ভিত্তি হিসেবে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অর্থের সংস্থান।

সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে বিলম্ব নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আট বছর ধরে কোনো পরিবর্তন হয়নি, আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়েছি। তাই অসন্তোষের কারণ নেই, বরং ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ভবিষ্যৎ সরকার সহজেই এটি বাস্তবায়ন করতে পারে।

তিনি বলেন, তিনটি পৃথক রিপোর্টকে রিকনসাইল করতে সময় লাগবে। তাছাড়া, বাজেটের ভারসাম্য বজায় রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ। পে-স্কেলের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতেও যথাযথ বরাদ্দ রাখতে হবে।

জাতিসংঘের তিনটি সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশের খাদ্য সংকট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড.

সালেহউদ্দিন বলেন, ওই প্রতিবেদনগুলো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তৈরি, তবে বাংলাদেশে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি নেই। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি।

তিনি আশা ব্যক্ত করেন, নতুন পে-স্কেলের কাঠামো তৈরি হলে আগামী সরকার সেটিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ

রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে এক কলেজছাত্রকে অপহণের পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ছাত্রের নাম সুদীপ্ত রায়। সে ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। 

গতকাল তুরাগের দিয়াবাড়িতে নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, গত ৭ নভেম্বর ভাটারার শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে অবস্থিত কলেজ হোস্টেল থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। ওইদিন রাতেই সুদীপ্তের পরিবারকে ফোন দিকে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিন ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায়।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় ময়মনসিংহ থেকে অভিযুক্ত যোবায়ের ও আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের একজন সুদীপ্তের এলাকার আরেকজনের বাড়ি নেত্রকোনায়। একটি আইফোন ছিনিয়ে নিতে সুদীপ্তকে অপহরণ করে তারা। আইফোন না দেওয়ায় ঘটনার দিন রাতেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনই পরিকল্পনা করে সুদীপ্তকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।

জানা গেছে, সুদীপ্তের বাড়ি দিনাজপুরে। গ্রেপ্তার দুজনই ভাটারা এলাকায় থাকতো এবং সুদীপ্তের পূব পরিচিত ছিল।

নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায় অভিযোগ করেন, ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জগন্নাথপুর শাখায় একাদশ শ্রেণিতে পড়তো সুদীপ্ত। শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে কলেজের হোস্টেলে থাকতো। ৭ নভেম্বর বিকাল ৫টার দিকে মাকে ফোন করে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হেস্টেল থেকে বের হয় সুদীপ্ত। রাত ১০টার দিকে সুদীপ্ত তার মাকে ফোনে জানায়, সে মিরপুরে আছে এবং রাতেই হোস্টেলে ফিরবে। রাতে অজ্ঞাতনামা একজন সুদীপ্তের ফোন থেকে তার মাকে ফোন দেয়। অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায়, সুদীপ্ত তাদের জিম্মায় রয়েছে এবং ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই টাকা ৮ নভেম্বর বিকেল ২টার মধ্যে তাদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিতে হবে। টাকা নিয়ে না আসলে সুদীপ্ততে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে পুলিশসহ অন্যান্য যে কাউকে জানানো যাবে না বলেও হুমকি দেয়। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুদীপ্তকে মেরে ফেলবে বলে ফোনটি কেটে দেয়। এরপর থেকে সুদীপ্তের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ৮ নভেম্বর সকালে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে ফোন দেয় এবং সুদীপ্তের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সুদীপ্তকে আমি পুরো ঘটনা ও মুক্তিপণের কথা জানাই। কিন্তু আমার ছেলে এসব অস্বীকার করে এবং বলে, সে হোস্টেলে যাচ্ছে। এরপর থেকে সেই নম্বরটিও বন্ধ পাই। বেলা আড়াইটার দিকে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং টাকা রেডি রাখার কথা জানিয়ে আবার ১ ঘণ্টা পর ফোন দিবে বলে। এরপর সেটিও বন্ধ পাই।

নিহতের ভগ্নিপতি অনিল সেন বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ও যোবায়ের সুদীপ্তকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ির একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতেই তার মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার পর আইফোনটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। না দেওয়ায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে টয়লেটের মধ্যে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে তারা আইফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদেরকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।

বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এইচ এম শফিকুর রহমান বলেন, “সুদীপ্তকে অপহরণের পর মিরপুরের শাহ আলী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই দিয়াবাড়িতে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখানেই সুদীপ্ততে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।”

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫জি থেকে ৬জি, ইন্টারনেটের পরবর্তী ধাপ
  • অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের
  • ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ
  • দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার
  • চ্যাটজিপিটির নতুন সংস্করণ চালু করবে ওপেনএআই
  • স্থলমাইনে সেনা আহত, কম্বোডিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা থাইল্যান্ডের
  • তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে