যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জাহানারার: তদন্ত কমিটিতে আরো ২ জন
Published: 12th, November 2025 GMT
জাহানারা আলমসহ একাধিক নারী ক্রিকেটার গণমাধ্যমে যৌন হয়রানি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। শুরুটা করেছিলেন জাহানারা আলম।
এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় নারী দলের পেসার জাহানারা আলম বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
আরো পড়ুন:
বেরোবিতে যৌন হয়রানিকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি
ইবিতে ছাত্রীর পোশাক নিয়ে শিক্ষকের কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
পিরিয়ডের কথা জানতে চেয়ে বাজে প্রস্তাব দেওয়া, হ্যান্ডশেকের বদলে জড়িয়ে ধরার অভিযোগও এনেছেন তিনি।
জাহানারা দাবি করেছেন, অসংখ্যবার বিসিবিকে এসব যৌন নির্যাতনের কথা অভিযোগ আকারে জানিয়েছেন তিনি। কোন প্রতিকার পাননি। তার অভিযোগের পর রুমানা আহমেদ, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ও কোচ রেশমা আক্তার আদুরি নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতা গণমাধ্যমে জানান।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিবি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। সেই তালিকায় মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) আরো দুইজনকে যুক্ত করেছে বিসিবি।
তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশের আইন কমিশনের বর্তমান সদস্য অধ্যাপক ড.
এর আগে, বিসিবির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে ছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক তারিক উল হাকিম, বিসিবির একমাত্র নারী পরিচালক রুবাবা দৌলা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা। ব্যারিস্টার সারওয়াত বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস ফেডারেশনের সভানেত্রীও। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিচারক তারিক উল হাকিমকে।
বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে ১৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন জাহানারা। নারী ক্রিকেটারদের প্রথম সারির সেনানিদের একজন তিনি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে আছেন। সেখানে ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি লেভেল-২ কোচিং কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
মঞ্জুকে ২০২০ সালের অক্টোবরে নারী ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক করা হয়। পরে টিম ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এছাড়া, বাংলা টাইগার্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ছিলেন তিনি। এখন চায়নাতে অবস্থান করছেন। সেখানে চায়না জাতীয় নারী দলের কোচের ভূমিকায় কাজ করছেন।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পর তোপের মুখে পড়েছেন মঞ্জু। নীরবতা ভেঙে তিনি জানিয়েছেন, বিসিবির তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে সেখানেও নিজের কথা বলতে চান জাতীয় দলের সাবেক এই পেসার।
এদিকে, তদন্ত সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিসিবির প্রভাবশালী পরিচালক থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তারা দায়িত্বে থাকলে তদন্তে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাবের শঙ্কা থাকে। তদন্ত চলাকালে অভিযুক্তদের তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
ঢাকা/ইয়াসিন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ মামলায় সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত
হত্যাসহ পৃথক পাঁচ মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক পাঁচটি আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও মারাত্মক জখম করার অভিযোগসহ পৃথক পাঁচ মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৯ নভেম্বর জামিন পান কারাগারে থাকা সেলিনা হায়াৎ আইভী। পাঁচ মামলার মধ্যে হত্যার অভিযোগে তিনটি ও মারাত্মক জখমের অভিযোগ করা দুটি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে তিন মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে ১০ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আবেদন করে, যা সেদিন চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত নট টুডে (অর্থাৎ ১০ নভেম্বর নয়) রাখেন। অপর দুই মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আবেদন করে। আইভীর জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক পাঁচটি আবেদন আজ চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। আইভির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ও আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান।
পরে আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনগুলো আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে (কোর্ট নং-২) শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
চলতি বছরের ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের নিজ বাসা থেকে আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি হত্যা, দুটি হত্যাচেষ্টা মামলাসহ পৃথক পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন আইভী। পরে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের টানা তিনটি নির্বাচনে জয়ী হন তিনি।