বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পগুলো ২০০ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি
Published: 12th, November 2025 GMT
বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বাস করে। এটি সম্ভাব্যভাবে ২০০ কোটিও বেশি মানুষের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৮ হাজার ৩০০ টিরও বেশি তেল, গ্যাস এবং কয়লা প্রকল্প এলাকা বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টি দেশে রয়েছে। এগুলো পৃথিবীর পৃষ্ঠের একটি বিশাল এলাকা দখল করে আছে।
খনন কূপ, প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র, পাইপলাইন এবং অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি সুবিধার সান্নিধ্য ক্যান্সার, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, অকাল জন্ম এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। একইসঙ্গে পানি সরবরাহ এবং বায়ুর মানের জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করে ও জমির অবনতি ঘটায়।
বিশ্বের প্রায় ৫০ কোটি মানুষ, যার মধ্যে ১২ কোটি ৪০ লাখ শিশু রয়েছে, এখন জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পগুলোর এক ১ কিলোমিটারের মধ্যে বাস করে। অন্যদিকে আরো তিন হাজার ৫০০ বা তারও বেশি নতুন প্রকল্প প্রস্তাবিত বা উন্নয়নাধীন রয়েছে। এর ফলে এক কোটি ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষকে ধোঁয়া, অগ্নিশিখা এবং দূষণের মধ্যে থাকতে বাধ্য হবে।
বেশিরভাগ সক্রিয় প্রকল্প দূষণের হটস্পট তৈরি করেছে, যা কাছাকাছি সম্প্রদায় এবং গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রকে তথাকথিত বলিদান অঞ্চলে পরিণত করেছে। অত্যন্ত দূষিত এলাকাগুলোতে নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলো দূষণ ও বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার অসামঞ্জস্যপূর্ণ বোঝা বহন করছে।
প্রতিবেদনে উত্তোলন, প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিবহন থেকে বিধ্বংসী স্বাস্থ্যগত ক্ষতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেখানো হয়েছে যে কীভাবে লিকেজ, অগ্নিকাণ্ড এবং নির্মাণ অপূরণীয় প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করে এবং মানবাধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে - বিশেষ করে তেল, গ্যাস এবং কয়লা অবকাঠামোর কাছাকাছি বসবাসকারীদের।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, “জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প এবং এর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকরা কয়েক দশক ধরে যুক্তি দিয়ে আসছে যে মানব উন্নয়নের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি প্রয়োজন। কিন্তু আমরা জানি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আড়ালে, তারা লাল রেখা ছাড়াই লোভ ও মুনাফা পরিবেশন করেছে, প্রায় সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সাথে অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং বায়ুমণ্ডল, জীবমণ্ডল ও মহাসাগর ধ্বংস করেছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র জন য ব স কর
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত প্রধান উপদেষ্টা
শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদকে প্রমোদতরি হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ নৌকার ডিজাইন পুরো পৃথিবীতে বিখ্যাত। অথচ এগুলো সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না। আমাদের এই ঐতিহ্যকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। প্যাডেল স্টিমারসহ যত পুরোনো নৌযান আছে, সব কটিই সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিন বছর পর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা স্টিমারটি চালুর বিষয়টি আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। খবরটি শুনে প্রধান উপদেষ্টা উচ্ছ্বাস প্রকাশের খবরটি জানিয়েছে তাঁর প্রেস উইং।
বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা আশা করছেন, প্যাডেল স্টিমারটি চালু হলে তা দেশ–বিদেশের বহু পর্যটককে আকর্ষণ করবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, বাংলা গানের পরিবেশনাসহ নানা ব্যবস্থা রাখা হবে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এই প্যাডেল স্টিমারগুলোতে ইতিহাস সংরক্ষণ করতে হবে। যারা এতে যাত্রা করবে, তারা যেন ইতিহাসটা জানতে পারে। কত বছর আগের স্টিমার, কী নাম, তখনকার দিনে কত আনা ভাড়া নিত, এর পেছনের গল্পটা কী—সেগুলো যেন সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়।’
এ সময় নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই, নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।’
তিন বছর পর প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ চালুর বিষয়টি আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা