কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির আগে যখন বাসে আগুন, হাতবোমার বিস্ফোরণ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে শাকিব খানের ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। তাতে এই চিত্রনায়ককে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বন্দনা করতে দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটিতে শাকিব খানকে বলতে শোনা যায়, ‘একজন পথশিশুকেও তিনি যে মমতায় বুকে জড়িয়ে ধরেন, তা শুধু একজন মা-ই পারে তার সন্তানকে জড়িয়ে ধরতে। এভাবেই তিনি বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে পরম মমতায় আগলে রেখেছেন। আর তাই তো বাংলাদেশের সমস্ত সাধারণ মানুষ ও পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন “মাদার অব হিউম্যানিটি”। আর সবাই বুকে হাত রেখে অন্তর থেকে বলুন আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আর সবাই মমতাময়ী শেখ হাসিনার পক্ষে।’

লিংক: এখানে, এখানে, এখানে

একটি আইডিতে আপলোড করা ভিডিওটির শুরুতে ইংরেজিতে 13 (১৩) লেখা দেখা যায়। এর ক্যাপশনে লেখা, ‘ঢাকা লক, ইউনুস ডাউন’। আরেকটি আইডি থেকে তোলা একই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়—‘শেখ হাসিনা আসবে বাংলাদেশ হাসবে’।
লিংক: এখানে

ভিডিওটি যাচাইয়ের জন্য ডাউনলোড করে ইনভিডে নিয়ে কি-ফ্রেমে ভাগ করে গুগল লেন্সে সার্চ করলে ২৭ সেকেন্ডের বদলে ২৫ সেকেন্ডের একই ভিডিও পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা পোস্ট করা হয়েছিল গত মাসের ২৫ অক্টোবরে।

ভিডিও খণ্ডিত অংশ ধরে নিয়ে কিছু কি–ওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করে পাওয়া যায়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন শাকিব খান। তখন নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন তিনি।

সে সময় জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে খবরটি এসেছিল।

লিংক: এখানে, এখানে, এখানে

প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, শাকিব খান তার ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর ওই ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন। প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে ভিডিওর লিংক দেওয়া রয়েছে, তবে এখন ভিডিও লিংকটি আনঅ্যাভেইলেবল দেখাচ্ছে।

শাকিব খানের সেই ভিডিও ছিল ১ মিনিটের। কিন্তু এখন শাকিব খানের ফেসবুক পেজে সেই ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বরে আপলোড করা ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আছে এখন। ওই ভিডিওতে শাকিব খান বলছেন—‘সবাই বুকে হাত রেখে অন্তর থেকে বলুন, আমরা বাংলাদেশের পক্ষে.

.’। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা—‘সবাই বুকে হাত রেখে অন্তর থেকে বলুন, আমরা বাংলাদেশের পক্ষে... “বিজয়ের শুভেচ্ছা”।

লিংক: এখানে

এখন যে ২৭ সেকেন্ডের ভিডিও ছড়াচ্ছে, তার শেষের অংশের সঙ্গে মিল রয়েছে শাকিব খানের আপলোড করা ৯ সেকেন্ডের ভিডিওর।

তবে ‘নৌকায় ভোট চাইলেন শাকিব খান’ এই শিরোনামে ইউটিউবে আপলোড করা একাধিক চ্যানেলে ১ মিনিটের ভিডিওটি পাওয়া যাচ্ছে।

লিংক:এখানে, এখানে, এখানে

নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভিডিওর শেষে শাকিব খান বলেছিলন, ‘আর সবাই বুকে হাত রেখে অন্তর থেকে বলুন, আমরা বাংলাদেশের পক্ষে।’

ওই ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে ‘আর সবাই মমতাময়ী শেখ হাসিনার পক্ষে’ কথাটি বলতে শোনা যায়নি শাকিব খানকে। তবে এখন যে ভিডিওটি ছড়াচ্ছে, সেখানে কথাটি রয়েছে।

ভালোভাবে যাচাই করলে ধরা পড়ে, এখনকার ভিডিওতে বাক্যটির ‘আর সবাই’, ‘মমতাময়ী’, ‘শেখ হাসিনার’ ও ‘পক্ষে’ বলা শব্দগুলো আগের ভিডিওতে বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চারণ করা থেকে থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে। শব্দ উচ্চারণের সময় শাকিব খানের অভিব্যক্তি আগের ভিডিওতে স্বাভাবিক হলেও এখনকার ভিডিওতে কিছুটা অস্বাভাবিক, কথা বলার সময় কিছু অসামঞ্জস্যও ধরা পড়ে।

নতুন ভিডিওতে ‘CapCut’ লোগো দেখা যায়। CapCut হলো একটি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ, যা মূলত ছোট ভিডিও তৈরি ও সম্পাদনার কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
সুতরাং ১৩ নভেম্বর ধরে এখন শাকিব খানের যে ভিডিও প্রচার হচ্ছে, তা তার ২০১৮ সালের ভিডিওর সম্পাদিত একটি রূপ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০১৮ স ল র সব ই ব ক আর সব ই ভ ড ওর

এছাড়াও পড়ুন:

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর: রানে মুশফিক, উইকেটে সাকিব ও আরও যাঁরা সেরা

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তি হলো আজ। ২০২০ সালের এই দিনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। ২৫ বছরের পথযাত্রায় টেস্টে বাংলাদেশের পথচলা কেমন ছিল। আর সেই পথচলায় পরিসংখ্যানের আলোয় সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেনই বা কারা। গ্রাফিকস: মো. আসাদ আলীএকনজরে টেস্টে বাংলাদেশ

১৫৪ টেস্টে বাংলাদেশের জয় ২৩টি। এই ২৩ জয়ের তিনটি বাংলাদেশ পেয়েছে ইনিংস ব্যবধানে। সবচেয়ে বড় জয়টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

টেস্টে বাংলাদেশের ১১২ হারের ৪৭টিই ইনিংস ব্যবধানে। সবচেয়ে বড় জয়ের মতো সবচেয়ে বড় হারটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশে কেউ চাইলেও বিরাট কোহলি হতে পারবে না ৫ ঘণ্টা আগে

টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই ৪০০ করেছিল বাংলাদেশ। তবে ৫০০–র দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১২ সাল পর্যন্ত। মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ৫০০ করে বাংলাদেশ। চার মাস পরেই ২০১৩ সালের মার্চে ৬০০–র দেখাও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করে ৬৩৮ রান। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিসং সেটিই। এরপর আরও ১০ বার ৫০০ ছুঁলেও আর ৬০০ ছোঁয়া হয়নি।

১০০ রানের নিচে অলআউট হতে কেমন লাগে সেই অভিজ্ঞতা প্রথম টেস্টেই হয়েছিল বাংলাদেশের। অভিষেকের প্রথম ইনিংসে ৪০০ করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ৯১ রানে। এরপর আরও ১২ বার টেস্টে ১০০ রানে নিচে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এর একটিই ৫০ রানের কমে, ২০১৮ সালে অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩।

আরও পড়ুনবাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট খেলা সেই ১১ জন এখন কে কোথায়১০ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৯৮টি টেস্ট খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। সবকিছু ঠিক থাকলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেই ১০০ টেস্টের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন সাবেক অধিনায়ক।

সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার মতো টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টসও করেছেন মুশফিকুর রহিম। ৩৪ টেস্টে অধিনায়কত্ব করা মুশফিকের নেতৃত্বেই সবচেয়ে বেশি টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ—৭টি।

আরও পড়ুন‘আমি দলেই ঢুকতে পারি কি না, এমন একটা অনিশ্চয়তা ছিল’ ৮ ঘণ্টা আগে

সবচেয়ে বেশি খেলার মুশফিকুর রহিমই টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন। একমাত্র তাঁরই ৬ হাজার রান আছে। ৩৮.১২ গড়ে ৬৩২৮ রান করা মুশফিকের সেঞ্চুরি ১২টি, এর তিনটি আবার ডাবল সেঞ্চুরি।

সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডের মতো ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসও মুশফিকুর রহিমের। ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দেওয়া মুশফিক ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন রেকর্ড ২১৯ রানের ইনিংস।

টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটিতেও আছেন মুশফিকুর রহিম। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৩৫৯ রান যোগ করেন মুশফিক।

টেস্টে বোলিংয়ে বাংলাদেশের এক নম্বর সাকিব আল হাসান। ৭১ টেস্টে ২৪৬ উইকেট তাঁর। আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল আর ১০ উইকেট পেলেই ছাড়িয়ে যাবেন সাকিবকে। এ দুজনের বাইরে ২০০ উইকেট আছে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের।

টেস্টে ইনিংস–সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটা ২০১৪ সাল থেকেই তাইজুল ইসলামের। মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৯ রানে ৮ উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানের রেকর্ড ভেঙেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

টেস্টে এক ম্যাচে বাংলাদেশের কোনো বোলার সর্বোচ্চ ১২ উইকেট পেয়েছেন তিনবার, দুবারই মেহেদী হাসান মিরাজ। সেরা ১১৭ রানে ১২ উইকেট, ২০১৮ সালে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টেস্টে আটবার বাংলাদেশের বোলাররা ম্যাচে ১০ বা এর বেশি উইকেট পেয়েছেন।

আরও পড়ুনটানা আট বলে ছক্কা মারলেন আকাশ কুমার, গড়লেন দ্রুততম ফিফটির বিশ্বরেকর্ড০৯ নভেম্বর ২০২৫

সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড জমেছে বেশ। ৪২ ক্যাচ নিয়ে সবার ওপরে মুমিনুল হক, ৪১ ক্যাচ নিয়েই এরপরই আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

উইকেটকিপার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল লিটন দাসের—১১৪টি। ৯৯টি ক্যাচ নেওয়ার লিটন স্টাম্পিং করেছেন ১৫টি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাঁজা সেবনের অভিযোগে রাবির ৬ শিক্ষার্থী আটক
  • টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর: রানে মুশফিক, উইকেটে সাকিব ও আরও যাঁরা সেরা
  • ৭ বছর পর হিলি দিয়ে ভারত থেকে এসেছে ২৫ টন আপেল