কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশপথ আমিনবাজারে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। 

বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা জেলা পুলিশের এ তল্লাশি কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে।

আরো পড়ুন:

ঢাবির ৫ স্থাপনায় তালা দিল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ

 কোভিড নীতির কঠোর বিধিমালা প্রত্যাহার শুরু চীনের

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে সকাল থেকেই যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি নিতে দেখা যায়। গণপরিবহন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ নানা গাড়িতে থাকা যাত্রীদের ব্যাগপত্র ও মুঠোফোন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যাত্রীদের গন্তব্য ও আগমনের স্থান সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগামী ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে এই চেকপোস্ট বসানো হয়।

মহাসড়কের একপাশে ব্যারিকেড বসিয়ে তল্লাশি চলায় যান চলাচলে কিছুটা ধীরগতি দেখা দেয়। পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে যাত্রীদের মুঠোফোনের গ্যালারি ঘেঁটে অনুসন্ধান করতেও দেখা গেছে।

চেকপোস্টে উপস্থিত সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জুয়েল মিয়া বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠনের লকডাউন কর্মসূচিকে ঘিরে আমিনবাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আমাদের এ তল্লাশী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে আমাদের টহল কার্যক্রমও বাড়ানো হয়েছে এবং এটি আগামীতেও চলমান থাকবে।”

কেউ যেন কোনোভাবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেই লক্ষ্যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল তল্লাশী করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চেকপোস্টে যাত্রীদের মোবাইল তল্লাশির পাশাপাশি গ্যালারি ঘেটে দেখার বিষয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “দেখেন, অনেকেই আত্মগোপনে থাকে। আবার অনেকে নাশকতা সৃষ্টি করতে চায়। সেগুলোকে আমরা মোবাইল, ব্যাগ বা অন্যান্য জায়গাগুলো চেক করে আমরা দেখার চেষ্টা করি নাশকতার কোনো উপকরণ আছে কিনা।”

যাত্রীদের মোবাইল তল্লাশী একজন নাগরিকের প্রাইভেসির লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করে কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আমরা তাদের পারমিশন বা অনাপত্তির বিষয়টি বিবেচনা করেই এটি করা হয়।”

তবে চেকপোস্টে চেকপোস্টে যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের মুঠোফোন তল্লাশীর ক্ষেত্রে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্যদের মুঠোফোন তল্লাশির জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে দেখা যায়নি।

ঢাকা/সাব্বির/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

বঙ্গোপসাগর থেকে দুই ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় দুটি ট্রলারসহ ১৩ জন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দখলদার সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে।

বিকেলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ। তিনি বলেন, দুটি ট্রলারসহ ১৩ জন বাংলাদেশি জেলেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়েছে। ট্রলারসহ জেলে অপহরণের ঘটনায় স্থানীয় জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মাছ ধরার নৌযান রয়েছে ৬০০টির বেশি।

ধরে নিয়ে যাওয়া একটি ট্রলারের মালিক টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা মো. সৈয়দ আলম। তিনি বলেন, বুধবার সকালে টেকনাফের কয়েকটি ট্রলার সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলে। এ সময় দ্রুতগতির স্পিডবোট নিয়ে আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা ওই এলাকা থেকে দুটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় কয়েকটি ট্রলার পালিয়ে সেন্ট মার্টিনে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে ট্রলারসহ অপহৃত জেলেদের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি খালে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। আরাকান আর্মির কারণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে পারছেন না জেলেরা।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ট্রলারসহ কিছু জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বুধবার ১২ নভেম্বর পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ৩৪১ জন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলেসহ ২৭টি নৌযান ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। অবশিষ্ট আরও ২০টি ট্রলারসহ ১৫২ জনকে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ