যুবককে দুবাই নিয়ে বিক্রি, বরিশালে ২ জনের যাবজ্জীবন
Published: 12th, November 2025 GMT
ভালো চাকরির কথা বলে বরিশালের এক যুবককে দুবাই নিয়ে মানব পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের দায়ে দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বরিশালের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.
আরো পড়ুন:
প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ায় তোজাম্মেল হত্যা: ৩ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লক্ষ্মীপুরের রায়পুরা উপজেলার উত্তর কেরুয়া এলাকার মোশারেফ হোসেনের ছেলে শাহ ইমরান সাগর (৪৫) ও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার আনসার আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়া (৩৭)।
বেঞ্চ সহকারী তুহিন মোল্লা জানান, ভালো চাকরির কথা বলে বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া নতুন হাট এলাকার বাসিন্দা নবীন ফরাজীকে সাড়ে তিন লাখ টাকার চুক্তিতে ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ দুবাই পাঠান শাহ ইমরান সাগর। দুবাই পৌঁছানোর পর তাকে মানব পাচার চক্রের সদস্যদের কাছে বিক্রি করে দেন বাচ্চু মিয়া। সেখানে চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন তাকে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। পরে নবীনের বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছাড়া পাওয়ার পর দুবাইয়ে থাকা এক প্রবাসীর মাধ্যমে দেশে ফেরেন নবীন। পরে ২০২৩ সালের ৩০ অগাস্ট দুইজনকে আসামি করে বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তিনি। তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. শিহাবউদ্দিন দুই জনের রিুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেছেন।
ঢাকা/পলাশ/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম নব প চ র বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিএনপি ২০২৩ সালের অসহযোগ আন্দোলন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেনি
বিএনপি ২০২৩ সালের অসহযোগ আন্দোলন কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেনি বলে দাবি করেছেন ‘জুলাই ঐক্য’ এর মুখ্য সংগঠক এবং ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, “সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এখন তারা জুলাই সনদের বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। জুলাই সনদ ব্যর্থ করার কোনো ষড়যন্ত্র ছাত্রজনতা মেনে নেবে না।”
আরো পড়ুন:
সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, নৈতিক: প্রধান বিচারপতি
‘জামায়াতের রাজনীতি শুরু হয় জিয়াউর রহমানের নীতির কারণে’
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে গণভোটের মাধ্যমে। এখানে কোনো ধরনের কম্প্রমাইজের সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচনও জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থতা শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। এখনো পর্যন্ত গণহত্যার বিচার হয়নি। আহত-পঙ্গু পরিবারগুলো আজও পথে পথে কান্নাকাটি করছে। আমাদের কথা বলার কথা ছিল দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কার নিয়ে। কিন্তু আমাদের এখনো কথা বলতে হচ্ছে বিচার না হওয়ার বেদনা নিয়ে।”
মুসাদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, “অভ্যুত্থানের দেড় বছর পরও যে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পরিবর্তনের আশা করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। দায়িত্ব পাওয়ার পরই প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল- পুলিশ লীগ, র্যাব লীগ এবং সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচারের মাধ্যমে দায় নির্ধারণ করা। কিন্তু একজনেরও বিচার হয়নি। বরং অনেককে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দায়িত্ব পাওয়া অনেকেই এখন আর বিপ্লবের ভাষায় কথা বলেন না, বরং সুশীল আচরণের আড়ালে ফ্যাসিবাদী লীগের সুবিধাভোগী শ্রেণিকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিচ্ছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, যারা সংস্কারের কথা বলেছিলেন, তাদের মাঝেও শুধু ‘নজরুল ইসলাম থেকে আসিফ নজরুল’–এ রূপান্তর ঘটেছে, সংস্কার নয়।”
“নিষিদ্ধ ঘোষিত খুনি লীগ এবং জঙ্গি লীগ আবারো দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। তারা বিদেশে বসে ভিডিও বার্তা দিচ্ছে, দেশে নাশকতা ও ককটেল হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, আর প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি তাদের ছায়া দিচ্ছেন। যদি বিএনপি বা অন্য কোনো দল এমন কর্মকাণ্ড করত, তবে এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হতো। কিন্তু এদের ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব,” বলেন মুসাদ্দিক।
মুসাদ্দিক সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা সরকারের অভ্যন্তরে বসে নিষিদ্ধ লীগকে পুনর্বাসনে কাজ করছে, তাদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের একটাই ঠিকানা জেল।”
খুনি হাসিনার ফাঁসি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিভাগীয় বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া ১৩ নভেম্বর দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সামনে অবস্থান কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন তিনি।
ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা ঘাঁটি স্থাপনের খবর প্রসঙ্গে মুসাদ্দিক সরকারের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, “পররাষ্ট্র নীতিতে নরম ভাব দেখানোর দিন শেষ। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। বাংলাদেশের সীমান্তে যেকোনো সামরিক প্রস্তুতির জবাবে বাংলাদেশকেও সমানভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।”
মুসাদ্দিক বলেন, “জুলাই সনদই দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভিত্তি। এটি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রজনতা রাজপথে নেমে আসবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী