মুম্বাইয়ের জুহুর রাস্তায় বুধবার সকালে দেখা গেল এক অবাক করা দৃশ্য। চালকের আসনে বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন, গন্তব্য তাঁর পুরোনো বন্ধু ধর্মেন্দ্রর বাংলো। দিন কয়েক হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন বলিউডের ‘হি-ম্যান’। আর সেই খবর পেয়েই ‘শোলে’র ‘জয়’ ছুটে গেলেন তাঁর ‘বীরু’কে দেখতে।
দিন কয়েক ধরে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়ে তাঁর মৃত্যুর গুজব। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম খবরটি প্রকাশও করে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তাও দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং, চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার, অভিনেতা কে কে মেনন ও চিরঞ্জীবীসহ অনেকে।
কিন্তু গুজবের অবসান ঘটান ধর্মেন্দ্রর মেয়ে এষা দেওল। এক্স হ্যান্ডলে তিনি জানান, বাবা একদম ভালো আছেন এবং শারীরিকভাবে স্থিতিশীল। এরপর বুধবার সকালেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান ধর্মেন্দ্র। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ের জুহুর বাংলোয়, যেখানে বাড়িতেই চলছে তাঁর পরবর্তী চিকিৎসা ও বিশ্রাম।

পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ধর্মেন্দ্রজি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন এবং এখন বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা ও বিশ্রাম চলবে। আমরা বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, এ সময়ে মিডিয়া ও জনসাধারণ যেন কোনো রকম অনুমান বা গুজব না ছড়ান এবং তাঁর ও পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষা করেন।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ধর্মেন্দ্রজির প্রতি আপনাদের ভালোবাসা, প্রার্থনা ও শুভকামনার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। তাঁর দ্রুত আরোগ্য, ভালো স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের জন্য আপনারা যেভাবে পাশে থেকেছেন, তা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।’

জয়-বীরুর বন্ধুত্ব
হাসপাতাল থেকে ফেরার পর থেকেই জুহুর ওই বাংলোর সামনে উপচে পড়ছে ভক্ত ও সাংবাদিকদের ভিড়। এমন সময়েই আবির্ভাব ঘটে আরেক কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চনের। নিজেই তাঁর বিএমডব্লিউ গাড়ি চালিয়ে পৌঁছালেন বন্ধুর বাড়িতে। মুখে মাস্ক, চোখে সানগ্লাস, কিন্তু চোখেমুখে স্পষ্ট আবেগ। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই মুহূর্ত—যেন ৫০ বছর আগের ‘শোলে’র দৃশ্য ফিরল মুম্বাইয়ের রাস্তায়।
চলতি বছরই ‘শোলে’র ৫০তম বর্ষপূর্তি। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটিতে জয় ও বীরুর বন্ধুত্ব আজও অমর। সময় পেরিয়েছে, কিন্তু তাঁদের অফস্ক্রিন বন্ধুত্বেও এসেছে একই উষ্ণতা। ধর্মেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই অমিতাভ তাঁর খোঁজ নিচ্ছিলেন। তবে শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে দেখা করতে পারেননি। তাই বন্ধু বাসায় ফিরতেই ছুটলেন নিজে গাড়ি চালিয়ে।

‘ধর্মেন্দ্র আমার খুব ভালো বন্ধু’

এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে অমিতাভ বলেছিলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধুত্ব উপভোগ না করলে একসঙ্গে কাজ করতে পারতাম না। আর ধর্মেন্দ্র আমার খুব ভালো বন্ধু। প্রায়ই তাঁর কাছে পরামর্শ নিতে যাই আমি। কারণ, ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা সামলানো কঠিন হয়। তখন ধর্মেন্দ্রকে জিজ্ঞেস করলে তিনি সব সময় ভালো পরামর্শ দেন।’ বয়সে ধর্মেন্দ্র বড়, অভিজ্ঞতাও অনেক বেশি। তাই অমিতাভ তাঁকে সব সময় বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করেন। বন্ধুত্বের এই আন্তরিকতার সাক্ষী থেকেছে বলিউড, সাক্ষী থেকেছে দর্শকও।

নস্টালজিয়ায় ভাসলেন অনুরাগীরা

অমিতাভ যখন ধর্মেন্দ্রর বাড়িতে ঢুকছেন, ঠিক তখনই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভক্তদের চোখে যেন ‘শোলে’র পুনর্জন্ম। কেউ লিখেছেন, ‘৮৩-তে পা রাখলেও বয়সের কাছে হার মানেননি অমিতাভ।’ কেউ লিখেছেন, ‘বন্ধুত্ব মানে জয়-বীরু।’ সেই মুহূর্তে মনে পড়ে যায়, ৫০ বছর আগের সেই বিখ্যাত সংলাপগুলো।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ধ ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

নেপালে আকিজ বোর্ড ও আকিজ ডোরের বিজনেস কনফারেন্সে নতুন পণ্য উন্মোচন

আকিজ বশির গ্রুপের শীর্ষ দুই ব্র্যান্ড আকিজ বোর্ড এবং আকিজ ডোর দেশের বোর্ড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে আন্তর্জাতিক বিজনেস কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। এতে তিনটি পণ্য উন্মোচন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইভলভ বিয়ন্ড বিজনেস কনফারেন্স ২০২৫’। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন আকিজ বশির গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন, হেড অব সেলস মো. নজরুল ইসলাম, হেড অব প্রোডাকশন শেখ জাকারিয়াসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এবারের কনফারেন্সের অন্যতম আকর্ষণ ছিল তিনটি নতুন পণ্য—সিনক্রো, ফাইবারসেম ও আল্টিম্যাটের উন্মোচন। এই তিনটি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে আকিজ বোর্ড আবার তাদের ডিজাইননির্ভর ও প্রযুক্তিনির্ভর সারফেস সলিউশনসে নেতৃত্বের অবস্থান প্রমাণ করেছে।

প্রায় ৩৭০ জন ডিলার, ব্যবসায়িক সহযোগী ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিস্তৃত প্রতিনিধিরা একসঙ্গে এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন; যা পরিণত হয় ঐক্য, প্রেরণা ও আনন্দের এক মহোৎসবে। কৌশলগত আলোচনা, ব্যবসায়িক দিকনির্দেশনা এবং সংস্কৃতি অন্বেষণের মেলবন্ধনে এই আয়োজন শুধু একটি কনফারেন্স নয়, বরং হয়ে ওঠে স্মরণীয় এক অভিজ্ঞতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ