ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালজুঁড়ি এলাকায় একটি সিএনজিতে (ঢাকা থ ১১-৯৯২১) আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিএনজিটি দাঁড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুই ব্যক্তি সিএনজিতে আগুন লাগিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের শেষ মাথায় জালকুড়ি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিসের সামনে একটি সিএনজিতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছি। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, তিনি নিজেও বর্তমানে টহলে আছেন। নাশকতার আশঙ্কায় যেই স্থানগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে, সেই সব জায়গায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স এনজ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাজিশিয়ান হুমায়ূন আহমেদ

নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বহুমাত্রিক শিল্পস্রষ্টা। গল্প বলার ভাষা আর ভঙ্গিকে আরও সহজ, আরও জীবন্ত করেছেন তিনি। তাঁর লেখায় সাধারণ মানুষের হাসি-কান্না, স্বপ্ন-বাস্তবতা আর জীবনের টানাপোড়েন এমনভাবে ফুটে উঠেছে যে পাঠক মনে করে—এই গল্পগুলো যেন তাদেরই জীবন থেকে উঠে এসেছে।

হিমু, মিসির আলি, রূপা কিংবা শুভ্র—চরিত্রগুলো এখন কেবল সাহিত্যের পাতায় নয়, আমাদের জীবনেরও অংশ। হুমায়ূন আহমেদের লেখায় একদিকে যেমন আছে হাস্যরস ও প্রাণ, অন্যদিকে জীবনের নিঃসঙ্গতা, ভালোবাসা আর মায়া। তিনি দেখিয়েছেন—সহজভাবে লিখেও কীভাবে গভীরতাকে স্পর্শ করা যায়।

এ তো কেবল জাদুকরের পক্ষেই সম্ভব। মানুষকে এভাবে মোহাবিষ্ট করা। তাঁর হাতে ছিল জাদুর কলম!

শুধু গল্প-উপন্যাসে নয়; নাটক, চলচ্চিত্র কিংবা গান—সব ক্ষেত্রেই তাঁর সৃষ্টিতে ফুটে উঠেছে মানুষের জীবন, সম্পর্ক আর সৌন্দর্য।

তিনি ছিলেন এমন এক লেখক, যিনি নিঃশব্দে জায়গা করে নিয়েছিলেন পাঠকের হৃদয়ে। সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তাঁর গল্পগুলো এখনো আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে—যেন প্রতিদিনের কথোপকথনে, ভেতরের নিঃসঙ্গতায়, বা হঠাৎ কোনো ম্লান সন্ধ্যায় তাঁর শব্দগুলো ফিরে আসে। তাঁর লেখার সহজতা, মায়া আর মানবিক উষ্ণতা আজও আমাদের ছুঁয়ে যায় নিঃশব্দে। হুমায়ূন আহমেদ নিছক একজন লেখক নন—তিনি আমাদের অনুভবের অন্তহীন অনুরণন, যা শুধু হ্যামিলিনের সেই জাদুকর-বংশীবাদকের পক্ষেই সম্ভব।

জাদুকর ছিলেন তিনি নিঃসন্দেহে। সে কি কেবলই কথার জাদুকর? শব্দের জাদুকর? নাকি জাদুকর বলতে সাধারণভাবে আমরা যা বুঝি, সেটাও?

হ্যাঁ, ম্যাজিশিয়ান ছিলেন তিনি।

তাঁর চরিত্রগুলো এখন কেবল সাহিত্যের পাতায় নয়, আমাদের জীবনেরও অংশ। হুমায়ূন আহমেদের লেখায় একদিকে যেমন আছে হাস্যরস ও প্রাণ, অন্যদিকে জীবনের নিঃসঙ্গতা, ভালোবাসা আর মায়া। তিনি দেখিয়েছেন—সহজভাবে লিখেও কীভাবে গভীরতাকে স্পর্শ করা যায়।

শৈশব-কৈশোর থেকেই ম্যাজিকের প্রতি ছিল হুমায়ূন আহমেদের দুর্বলতা। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় থেকেই তিনি জাদুর চর্চা শুরু করেন। প্রায়ই আত্মীয়স্বজন-বন্ধুদের জাদু দেখিয়ে মুগ্ধ করতেন। পরবর্তীকালে, ১৯৬৮ সালে, তিনি তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম জাদু দেখান—অর্থাৎ লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশের আগেই তাঁর পরিচিতি তৈরি হয় ‘ম্যাজিশিয়ান হুমায়ূন’ হিসেবে।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচকে ভীষণ ভালোবাসতেন হুমায়ূন আহমেদ। একই রকম জুয়েল আইচও ভালোবাসেন তাঁকে। জাদুবিদ্যায় তাঁর হাত পাকানোর পেছনে জুয়েল আইচের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বিশ্বের বৃহত্তম জাদুশিল্পী সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্রাদারহুড অব ম্যাজিশিয়ানস’ (আইবিএম)-এর সম্মানিত সদস্য, আর এই সদস্যপদ প্রাপ্তিতে জুয়েল আইচ তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন।

জুয়েল আইচ প্রায়ই বলতেন, ক্লোজআপ ম্যাজিকের ক্ষেত্রে হুমায়ূন ভাই অসাধারণ পারদর্শী—বিশেষ করে ‘পামিং’য়ে তাঁর দক্ষতা অবিশ্বাস্য।

চীন–আগত জাদুশিল্পীর ছদ্মবেশে হুমায়ূন আহমেদ, ২০০৭

সম্পর্কিত নিবন্ধ