সালটা ছিল ২০১৯। মো. রফিকুল ইসলাম ও সালমা বেগমের ছেলে ফুজায়েল আহমেদ কেবলই উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন। বাবা রফিকুলের ইচ্ছা, ছেলেকে বিদেশ পাঠাবেন। তা–ও যেনতেন দেশ নয়, অস্ট্রেলিয়ায়! এই ইচ্ছা শুধু ইচ্ছা পর্যন্তই থাকল না, এল অস্ট্রেলিয়া থেকে অফার লেটার। ছেলে ফুজায়েল পড়বেন ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক (বিবিএ) শ্রেণিতে। বাসায় আর্থিক কোনো সংকট ছিল না, সব মা–বাবাই চান ছেলেমেয়ে ভালো কোথাও পড়ুক, সেখানে সামর্থ্য থাকলে তো কোনো কথাই নেই!

কিন্তু ছেলের মাথায় তখন ছিল অন্য চিন্তা। আর দশটা ছেলে যখন ভাবে, আহা বাইরে যদি যাওয়া যেত বাবার টাকায়! সেখানে ফুজায়েল ভাবেন, ‘আমি এত বড় ছেলে, বাবার টাকায় কীভাবে পড়ি?’ তিনি চাচ্ছিলেন নিজের যোগ্যতায় কিছু করতে, নিজেকে তিনি বানাবেন ‘ব্র্যান্ড’। সেই চিন্তা থেকেই আজকে তিনি হয়ে উঠেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিক, যার নাম নেক্সটজেন টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট।

শুরুটা ছিল যেভাবে

শুরুটা ছিল আইইএলটিএসের বই কিনতে নীলক্ষেতে যাওয়া থেকে। পকেট থেকে টাকা বের করার সময় মনে মনে লজ্জা পান এই ভেবে যে বই কিনতে বাবার কাছে টাকা চাইতে হয়। ২০২০ সাল, শুরু হলো দীর্ঘ লকডাউন। ফুজায়েল আহমেদ ঘরে বসেই ভাবতে থাকেন কিছু করা যায় কি না। এক বড় ভাইয়ের থেকে জানতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে। সেই ভাইয়ের পরামর্শে ঝুঁকে পড়েন এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের দিকে।

‘আমি টাকা জমাতে পছন্দ করি, তাই বাসায় না জানিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ৪৫০ ডলার দিয়ে কোর্স করে ফেলি এক আইরিশ প্রশিক্ষকের কাছে,’ বলেন ফুজায়েল। শুরুর দু–তিনটি ক্লাস ছিল তাত্ত্বিক। ভিনদেশি শিক্ষকের ইংরেজি উচ্চারণ বুঝতে পারাটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আস্তে আস্তে তিনি ইচ্ছা হারাতে থাকেন, শব্দচয়ন ভিন্ন হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। ‘আমাকে দ্বারা সম্ভব নয়’—এই চিন্তা মাথায় নিয়ে প্রায় এক মাস বসে থাকেন ফুজায়েল। পরে সেই বড় ভাইয়ের বকা খেয়ে তিনি আবার ক্লাস করতে শুরু করেন। ব্যবহারিক ক্লাসগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে করতে থাকেন।

নিজের প্রতিষ্ঠানে ফুজায়েল.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারে এই পাখি

পাখিদের মধ্যে অন্যতম বুদ্ধিমান পাখি হলো পাতিকাক। এরা শহর ও গ্রাম অঞ্চলে মানুষের কাছাকাছি বসবাস করে। যেকোনো সমস্যার আভাস পেলেই কা কা কা করতে শুরু করে। 

পাতিকাক দেখতে আকারে মাঝারি হয়। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার বা ১৬ ইঞ্চি। এদের মাথার তালু, কপাল, গলা এবং বুকের উপরের অংশ চকচকে কালো রঙের হয়ে থাকে। ঘাড় এবং বুক ও পেটের সামনের দিকটা হালকা ধূসর বা ফ্যাকাসে ধূসর হয়। এদের শরীর, ঠোঁট, চোখ ও পা কালো।

আরো পড়ুন:

শীতকাল এলেই ‘স্নো ফেইরি’ হয়ে যায় বরফের বলের মতো

ময়ূর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন?

পাতিকাকের ঠোঁট দাঁড়কাকের মতো, তবে একটু কম বাঁকা এবং ঠোঁটের গোড়ায় পালক বা গোঁফ দেখা যায়। পাতি কাক হলো সর্বভুক পাখি। এরা মূলত মাটিতে খাবার খোঁজে এবং মানুষের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট বা আবর্জনা খেয়ে জীবনধারণ করে। এছাড়া এরা শিকারী পাখির ফেলে রাখা উচ্ছিষ্ট খায়। অনেক সময় দলবদ্ধভাবে শিকারী পাখিদের কাছ থেকে খাবার ছিনিয়েও নেয়। 

এরা অত্যন্ত চতুর, কৌতূহলী এবং সামাজিক পাখি। বিপদের আশঙ্কা দেখলে দলবদ্ধভাবে কর্কশ ‘কা-কা-কা’ শব্দে সতর্কবার্তা দেয়। মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এদের প্রজনন ঋতু। স্ত্রী কাক সাধারণত আকাশি রঙের ৩-৬টি ডিম দেয় এবং স্ত্রী ও পুরুষ উভয় কাকই ডিমে তা দেয়। কাককে পাখি জগতের অন্যতম বুদ্ধিমান প্রাণী মনে করা হয়। তারা দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং মানুষের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে শেখে। 

কাকের গড় আয়ু সাধারণত পনের থেকে কুড়ি বছর। এদের গলায় স্বরথলি বা ভয়েস বক্স (Voice box) থাকায় এরা গায়ক পাখিও বলা হয়। তবে এই পাখি বিভিন্ন রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ