গত ৪ জুন ঢাকায় ভুটানের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ফুটবল দলের জয় ওই একটাই। দ্বিতীয় জয়টি আসতে পারত গতকাল নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে। হামজা চৌধুরীর জোড়া গোলে নব্বই মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকলেও যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল হজম করে বসে হাভিয়ের কাবরেরার দল। মুঠোয় থাকা জয় হাতছাড়া হয় ২-২ ড্রয়ে।

এর আগে অক্টোবরে হংকংয়ের বিপক্ষে ৩-৩ সমতায় শেষ হতে চলা ম্যাচে যোগ করা সময়ের ১১তম মিনিটে গোল হজম করে ৪-৩-এ হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ গোল হজম করে করে কেন? এটি কি শেষ দিকে মনোযোগ ছুটে যায় বলে ঘটছে, নাকি মানসিক কারণে?

বৃহস্পতিবার রাতে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ দলের শেষ মুহূর্তে গোল হজমের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কোচ কাবরেরাকে। স্প্যানিশ কোচ মানসিক সমস্যার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন, এমনকি এই দিকটি নিয়ে তাঁর দল অনেক অনুশীলন করেছে বলেও জানালেন, ‘আমি বলব না এটা মানসিক সমস্যা। অনুশীলনে এবং ম্যাচে আমরা শত শত বার এই ধরনের আক্রমণ ঠেকানোর অনুশীলন করি। কিন্তু যেকোনো ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। হ্যাঁ, এটা সত্যি যে সাম্প্রতিক সময়ে এটা বারবার ঘটছে, কিন্তু আমি মনে করি না এটা মানসিক সমস্যা।’

ডাগআউটে হাভিয়ের কাবরেরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক বর র

এছাড়াও পড়ুন:

এক দিনে দুই দলের হয়ে দুই দেশে দুই ম্যাচ, গল্প নয় সত্যি

সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে এক দিনে দুই দলের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলা, সেটিও ভিন্ন দুই দেশে!

আজগুবি মনে হলেও সত্যি। ১৯৮৪ সালে ডেনমার্কের মিডফিল্ডার সোরেন লারবি অবিশ্বাস্য সেই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন।

১৯৮৪ সালের ১৩ নভেম্বর বিকেলে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ডেনমার্কের হয়ে খেলেন লারবি। সেদিনই রাতে তাঁর ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের জার্মান কাপের শেষ ষোলোর ম্যাচটি ছিল বোখুমে।

১৯৮৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে আইরিশদের বিপক্ষে ড্র করলেই চলত ডেনমার্কের।

তাই বায়ার্নের তখনকার জেনারেল ম্যানেজার (পরে সভাপতি) উলি হোয়েনেস এক অভিনব প্রস্তাব দেন, ‘তুমি কি পিওনতেককে (ডেনমার্ক কোচ) বলতে পারবে, “আমি ৪৫ মিনিট বা এর চেয়ে কম খেলব।” তারপর আমি তোমাকে প্রাইভেট জেটে নিয়ে যাব, রাতে বায়ার্নের হয়ে খেলবে।’

ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকা লারবি রাজি হয়ে যান হোয়েনেসের কথায়। জাতীয় দলের কোচ পিওনতেক অবশ্য প্রথমার্ধ শেষেই ছাড়তে পারেননি লারবিকে। ম্যাচের স্কোর যে তখন ১-১, এমন সময় কে ঝুঁকি নেয়।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার আগে লারবিরা যখন ড্রেসিংরুম থেকে ফিরছিলেন, তখন মাঠের পাশে দাঁড়ানো হোয়েনেস লারবিকে বলেন, ‘কী হচ্ছে? প্লেন তো অপেক্ষা করছে!’

আরও পড়ুন৩৫-০ গোলে জিতে বিশ্ব রেকর্ড, আধঘণ্টা পরই হাতছাড়া০৭ নভেম্বর ২০২৫

৫৭ মিনিটের মধ্যে মাইকেল লাউড্রপ ও জন সিভেব্যাকের গোলে ডেনমার্ক ৩-১–এ এগিয়ে যায়, এক মিনিট পরই লারবিকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ।

হোয়েনেসের আপত্তি গায়ে না মেখে লারবি গোসল করে নেন, তারপর পুলিশি পাহারায় বিমানবন্দরে। সময়মতো ডুসেলডর্ফ বিমানবন্দরে পৌঁছালেও বোখুম স্টেডিয়ামের পথে কয়েক কিলোমিটার লম্বা যানজটে পড়ে লারবিদের গাড়ি। লারবি জানালেন, গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করেন তিনি, ‘আমি গাড়ি থেকে নেমে চার কিলোমিটার দৌড়ে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলাম। ভালোই ওয়ার্মআপ হয়ে গিয়েছিল।’

তবে বায়ার্নের শুরুর একাদশে সুযোগ পাননি লারবি। বায়ার্ন কোচ উডো লাটেক লারবি মাঠে পৌঁছানোর আগেই প্রথম একাদশ ঠিক করে ফেলেছিলেন। লারবি দ্বিতীয়ার্ধে নামেন, ম্যাচ যায় অতিরিক্ত সময়ে, শেষ পর্যন্ত ২-২।

রিপ্লে ম্যাচে গোল করেন লারবি, বায়ার্ন জেতে ২-০ ব্যবধানে এবং পরে ফাইনালে স্টুটগার্টকে হারিয়ে কাপও জিতে নেয়।

দুই বছর পর একই কীর্তি করেন মার্ক হিউজ—ওয়েলসের হয়ে খেলেন চেকোস্লোভাকিয়ায়, আর সেদিনই বায়ার্নের হয়ে কাপ ম্যাচে নামেন। হিউজকেও রাজি করিয়েছিলেন হোয়েনেস।

আরও পড়ুনএনএফএলের দলের নাম কীভাবে বেঙ্গলস হলো৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ