প্রতারিত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ান
Published: 14th, November 2025 GMT
দেশের নাগরিক যখন কোনো সংস্থার কাছে থেকে ঋণ নেন, তখন তাঁর প্রয়োজন হয় জামিনদারের। আর যখন কোনো সংস্থা নাগরিকের কাছ থেকে আমানত নেয়, তখন? জামিনদারের ভূমিকায় তখন অবতীর্ণ হয় রাষ্ট্র। কারণ, সরকারি নিবন্ধন দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র নিশ্চিত করে সেই সংস্থার বৈধতা। জামালপুরে সমবায় সমিতির কাছে নিঃস্ব হওয়া মানুষের দায়িত্ব কি রাষ্ট্র নেবে না?
প্রথম আলোর খবরে এসেছে, জামালপুরের মাদারগঞ্জে ২৩টি সমবায় সমিতি আমানতকারীদের হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। মাদারগঞ্জে হাজারো আমানতকারী নিজের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পেতে টানা তিন দিন উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে রেখেছেন। এই চিত্র শুধু মাদারগঞ্জের নয়, এটি বাংলাদেশের আর্থিক শৃঙ্খলার ভঙ্গুরতার চিত্রও বটে। কয়েক বছর ধরে ২৩টি সমবায় সমিতি উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে, অথচ ২০২২ সাল থেকে সেই টাকার কোনো হদিস নেই।
এ ধরনের প্রতারণা এক দিনে গড়ে ওঠে না। রাষ্ট্রীয় তদারকির ঘাটতি, সমবায় অধিদপ্তরের উদাসীনতা এবং স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা বছরের পর বছর এই দুর্নীতিকে পুষ্ট করেছে। সমবায় আইন অনুযায়ী প্রতিটি সমিতির হিসাব নিরীক্ষা করা, অনুমোদন নবায়ন ও আর্থিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা জেলা সমবায় কর্মকর্তার দায়িত্ব। কিন্তু এখন তাঁরা নির্বিকারভাবে বলছেন, ‘আমাদের কিছুই করার নেই।’ এ বক্তব্য শুধু দায়িত্ব এড়ানোর নয়, এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতার স্বীকারোক্তিও।
রাষ্ট্রের ভূমিকা হওয়ার কথা নাগরিকের সম্পদ ও আস্থার নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু এখানে রাষ্ট্রই পরিণত হয়েছে উদাসীন দর্শকে। যখন হাজারো মানুষ আমানত হারিয়ে পথে নামছেন, তখনো সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি শুধু প্রশাসনিক অদক্ষতা নয়, নৈতিক দেউলিয়াপনার প্রকাশ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো এ ঘটনায় কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সমবায় সংস্থাগুলোর নিবন্ধন বাতিল হয়নি। মামলা করা হয়নি কিংবা আমানতকারীর টাকা উদ্ধার করতে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।
আমরা মনে করি, এ বিষয়ে প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট সমবায় সমিতির আর্থিক নথি জব্দ করে দ্রুত তদন্ত শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট সমবায় কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তৃতীয়ত, সরকারকে আমানতকারীদের অর্থ উদ্ধারের ব্যবস্থা দ্রুত নিতে হবে। কারণ, এ বিপর্যয়ের দায় জনগণের নয়, এটা প্রশাসনের ব্যর্থতার ফল।
সমবায় ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল পারস্পরিক সহযোগিতা। অথচ এখন তা প্রতারণার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যদি সরকার এখনো নড়েচড়ে না বসে, তবে জনগণের আস্থা যেমন ভেঙে যাবে, তেমনি রাষ্ট্রের নৈতিক ভিত্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই আমরা আশা করি, অতিসত্বর জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সরকার মাদারগঞ্জের সমবায় সংকট নিরসন করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম দ রগঞ জ সমব য় স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শীতে চুলের ‘ডিপ কন্ডিশনিং’ করার উপায়
শীতে চুল কোমলতা হারাতে শুরু করে। ডিপ কন্ডিশনিং চুলের স্বাস্থ্য, কোমলতা এবং উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দেয়। এটি মূলত একটি কন্ডিশনার যা সাধারণ কন্ডিশনারগুলোর চেয়ে বেশি ঘন। ডিপ কন্ডিশনিং ধাপে ধাপে করতে হয়।
প্রথম ধাপ
আরো পড়ুন:
দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারে এই পাখি
ইরানি সুফি দার্শনিক শামস তাবরিজির ১০টি উক্তি
প্রথমে একটি উপযুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুল থেকে অতিরিক্ত জল আলতো করে নিংড়ে বা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন, কারণ ভেজা চুলে কন্ডিশনার ভালোভাবে শোষিত হয় না।
দ্বিতীয় ধাপ
আপনার চুলের দৈর্ঘ্য ও ঘনত্বের উপর নির্ভর করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিপ কন্ডিশনার নিন। চুলের ডগা থেকে শুরু করে উপরের দিকে কন্ডিশনার লাগান। চুলের গোড়া বা মাথার ত্বকে কন্ডিশনার লাগানো এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে চুল তৈলাক্ত হতে পারে এবং মাথার ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চুলের প্রতিটা অংশে যেন কন্ডিশনার লাগে, তা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে একটি চওড়া দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে কন্ডিশনারটি সমানভাবে ছড়িয়ে দিন।
তৃতীয় ধাপ
প্যাকেটের নির্দেশাবলী অনুসরণ করে কন্ডিশনারটি চুলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রেখে দিন। সাধারণত এটি ৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। এই সময়ে কন্ডিশনারটি চুলের গভীরে প্রবেশ করে পুষ্টি যোগায়। এই প্রক্রিয়াটিকে আরও কার্যকর করতে আপনি একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখতে পারেন, যা শরীর থেকে উৎপন্ন তাপ ধরে রেখে কন্ডিশনারের শোষণ বাড়ায়।
চতুর্থ ধাপ
নির্দিষ্ট সময় পর ঠান্ডা বা হালকা গরম জল দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। নিশ্চিত হোন যে সব কন্ডিশনার চুল থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে। ঠান্ডা জল চুলের কিউটিকল বন্ধ করতে এবং উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
চুলের ক্ষতির মাত্রার উপর নির্ভর করে, সাধারণত সপ্তাহে একবার বা দুই সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ডিপ কন্ডিশনিংয়ের আগে হালকা গরম করা নারকেল তেল বা জলপাই তেল ব্যবহার করলে পুষ্টি আরও বাড়ে।আপনার চুল শুষ্ক, তৈলাক্ত, কোঁকড়া বা রঙ করা কিনা তার উপর ভিত্তি করে সঠিক পণ্য বেছে নিন।
নিয়মিত ডিপ কন্ডিশনিং আপনার চুলকে নরম, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে দারুণ কার্যকর হতে পারে।
ঢাকা/লিপি