নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর শহরে সাবেকুন্নাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে বাইরে থেকে বখাটেদের ছোড়া ঢিলে এক ছাত্রী আহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের ওপর হামলা করে কয়েকজন বখাটে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভা কার্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয় ও থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে কয়েকজন কিশোর বখাটে ওই বিদ্যালয়ের বাইরে দক্ষিণ দিকে অবস্থান নিয়ে বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ছাত্রীদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। এ ঘটনায় দোতলার একটি শ্রেণিকক্ষের জানালার কাচ ভেঙে এক ছাত্রী আহত হয়। পরে শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে এসে প্রতিবাদ করেন। এ সময় বখাটেরা তাঁদের ওপরও চড়াও হয়। এ সময় মহসিন আলম নামের এক শিক্ষক আহত হন। পরে তিনি কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নেন।

এ পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানায় জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগে বখাটেরা পালিয়ে যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিকেল পৌনে চারটা ছুটির আগপর্যন্ত বিদ্যালয়ের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও মোতায়েন রাখা হয়।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এক ছাত্রী বলে, ‘এ ঘটনার পর থেকে আমরা নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়ভীতির মধ্যে আছি। আমরা বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান বাঙালি প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘সাত-আটজন বখাটে মিলে এই কাজ করেছে। তাদের মধ্যে দুজনের বয়স ২০ বছরের মতো। অন্যরা ১৮ বছরের নিচে। তাদের উৎপাতে আমরা অতিষ্ঠ। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। বখাটেদের হুমকির কারণে আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয় এলাকায় পুলিশ পাঠানোসহ বখাটেদের ধরতে অভিযানও চালানো হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পর্তুগালের হারে লাল কার্ড দেখে যে শঙ্কায় রোনালদো

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ‘ভালো ছেলে’ হয়ে খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু নিজের সেই প্রতিজ্ঞা রাখতে পারেননি পর্তুগিজ মহাতারকা। ডাবলিনে গতকাল রাতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২–০ গোলে পর্তুগালের হারের ম্যাচে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রোনালদো। দলের হারের পাশাপাশি লাল কার্ডে রোনালদো ও পর্তুগাল বেশ বিপদেই পড়েছে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে কোনো হিসাব ছাড়াই বিশ্বকাপে পৌঁছে যেত পর্তুগাল। কিন্তু আয়ারল্যান্ড ফরোয়ার্ড ট্রয় প্যারটের জোড়া গোলে শেষ পর্যন্ত হারতে হয় পর্তুগালকে। এই হারের পর এখন রোনালদোদের ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে অপেক্ষা করতে হবে গ্রুপপর্বে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। আর্মেনিয়ার বিপক্ষে বাছাইপর্বে শেষ ম্যাচটি জিতলে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হবে পর্তুগালের।

কিন্তু অঘটনের শিকার হয়ে আর্মেনিয়ার কাছে হেরে গেলে বিপদে পড়তে হতে পারে পর্তুগালকে। তবে পর্তুগাল জিতলে তখন ‘এফ’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় স্থানের জন্য লড়বে হাঙ্গেরি ও আয়ারল্যান্ড। ‘এফ’ গ্রুপে ৫ ম্যাচে ৩ জয় ১ হার ও ১ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে পর্তুগাল। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে হাঙ্গেরি এবং ৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আয়ারল্যান্ড। ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে আর্মেনিয়া।

আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ডে ‘ভালো ছেলে’ হয়ে খেলার প্রতিশ্রুতি রোনালদোর১৮ ঘণ্টা আগে

তবে পর্তুগালের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হলেও কিন্তু বিপদ শেষ হবে না। কারণ লাল কার্ড দেখায় ২০২৬ বিশ্বকাপে পর্তুগালের প্রথম দুই ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে রোনালদোকে। কাল রাতে ম্যাচের ৬১ মিনিটে আইরিশ ডিফেন্ডার দারা ও’শেয়ার পিঠে কনুই মেরে বসায় রোনালদোকে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাইয়ের পর সিদ্ধান্ত বদলে যায় এবং রোনালদোকে লাল কার্ড দেখানো হয়। পর্তুগাল তখন ২–০ গোলে পিছিয়ে। ম্যাচের ১৭ ও ৪৫ মিনিটে গোল দুটি করেন ট্রয় প্যারট।

পর্তুগালের জার্সিতে ২২৬ ম্যাচে এটি রোনালদোর প্রথম লাল কার্ড। এর আগে ক্যারিয়ারে যে ১২ বার লাল কার্ড দেখেছেন, প্রতিটিই ছিল ক্লাবের জার্সিতে।

রোনালদো লাল কার্ড দেখার পর থেকেই আলোচনা চলছে তিনি কয় ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কনুই মারা, ঘুষি, লাথি কিংবা এ ধরনের আঘাতকে আক্রমণাত্মক ও সহিংস আচরণ হিসেবে ধরা হয়। এসব ক্ষেত্রে ফিফার শাস্তি পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত—‘প্রতিপক্ষকে আঘাত করলে কমপক্ষে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।’

এমন শাস্তি কার্যকর হলে সেটা শুধু বাছাইপর্বে পর্তুগালের শেষ ম্যাচেই প্রভাব ফেলবে না। কমপক্ষে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেলে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচসহ পর্তুগালের পরবর্তী দুটি ম্যাচেও রোনালদোকে দেখা যাবে না। সেক্ষেত্রে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলে এই টুর্নামেন্টের শুরুতে তাঁকে না পাওয়ার শঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে পর্তুগালের। রোনালদোর শাস্তির মাত্রা কেমন হতে পারে, তা জানতে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ফিফার শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে।

সতীর্থদের সঙ্গে জোড়া গোল করা প্যারটের (বাঁয়ে) উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ